সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরার একান্ত সচিব মো. কবির হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অর্থমন্ত্রণালয়ে!
ছাত্রজনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করতে সরানো হয়েছে বিগত সরকারের অনেক কর্মকর্তাকে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে বহাল আছেন সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক এর একান্ত সচিব মো. কবির হোসেন। এ নিয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলের অলিখিত নিয়ম ছিলো কোনো মন্ত্রী বা সচিবের একান্ত সচিব হতে হলে আওয়ামী লীগ বলয়ের হতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিশেষ গোয়েন্দা শাখার ছাড়পত্র ব্যতীত কেউ একান্ত সচিব হতে পারতেন না। এমন বাস্তবতা বিবেচনায় ইসমাত আরার একান্ত সচিব কবির হোসেন এমন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কেন- সে প্রশ্ন সবার।
কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগও আছে বিস্তর। এই কর্মকর্তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার দূধসাগর গ্রমের বাটই পাড়ায়। তিনি তার গ্রামে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যেম বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ।
কবির হোসেনের পূর্ববর্তী কর্মস্থল মনিরামপুর উপজেলার একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ মন্ত্রী স্বপন বাবুর ডানহাত হিসেবে কাজ করেছেন কবির হোসেন। যশোরের দুঃখ ভৈরব নদী খননের দুর্নীতিতে তিনি প্রত্যক্ষ মদদ দিয়েছেন। তার বদলির পর যশোর জেলার ইটভাটার মালিকরা মিষ্টি বিতরণ করেন।
শুধু তাই নয়, কবির হোসেনের বিরুদ্ধে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকার সময় সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর মদদে ‘খ’ তফশিলের জমি নামজারি করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে।
২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি যশোরের কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে যোগদান করেন কবির হোসেন। পরে তিনি সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদ্দোন্নতি লাভ করেন।
তার নিজ গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, তিনি অত্যন্ত অহংকারী প্রকৃতির অফিসার। গ্রামের বয়স্ক মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার করেন না। তার পিতা মো. দেলোয়ার হোসেন ভাটাই বাজার দুধ সাগর ইউনিয়নের সক্রিয় আওয়ামী লীগ কর্মী। তিনি শৈলকূপাতে বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
ভুক্তভোগী ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন, আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ব্যক্তিগত জমিতে ঘর নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কবির হোসেন। এমনকি নদীর বালি উত্তোলন করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য মাটি ভরাট করে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এই কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অনিয়ম বিষয়ে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর স্মারক লিপি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কবির হোসেনেরে বিষয় বলতে গিয়ে রামপাল উপজেলার গৌরম্বা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কাজী ফরহাদ বলেন, শুধু অর্থে জন্য তিনি যে পরিমাণ বেড়িবাঁধ কেটে দিয়ে চিংড়িঘের নষ্ট করেছেন তার বিচার আল্লাহর কাছে দিয়েছি। তিনি একজন বালুখেকো।
এ বিষয় জনপ্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করা শর্তে বলেন, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরার একান্ত সচিব মঞ্জুরুল হাফিজকে ওসডি করা হলেও তার বিষয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
এসব বিষয়ে কথা বলতে কবির হোসেনের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও সেটি ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/ইএস)