পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের নিরাপত্তায় চার দাবি
পার্বত্য চট্রগ্রামে বাঙালি হত্যা, মসজিদে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদ ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। শুক্রবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামে একটি প্লাটফর্মের ব্যানারে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বাঙালিদের নিরাপত্তার দাবিতে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজ তৌকি। তিনি বলেন, ‘গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার পানখাইয়াপাড়ায় চুরির অভিযোগ এনে মো. মামুন নামে স্থানীয় এক বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে চার-পাঁচজন উপজাতীয় নারী-পুরুষ চেপে ধরে মামুনকে হত্যা করছে। কিন্তু পুলিশ এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ জানায় দীঘিনালা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। দীঘিনালা সরকারি কলেজ গেইট থেকে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল বের হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে লারমা স্কয়ারে পৌঁছার পর পাহাড়ের আঞ্চলিক উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
‘এর কিছুক্ষণ পর পার্শ্ববর্তী বাঘাইছড়ি, লংগদু ও সাজেক এলাকা থেকে চাঁদের গাড়িযোগে বহিরাগত শতশত উপজাতি যুবক এসে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মালিকানাধীন দোকানপাটসহ বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়’, অভিযোগ করেন মিনহাজ।
বাঙালি ছাত্র ও বাজারের ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে অভিযোগ করে মিনহাজ বলেন, ‘উপজাতি সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে কয়েকটি গুলি ছোঁড়া হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়। যাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে চাইলে বাধা দেয় উপজাতীয় যুবকরা। ফলে মুহূর্তেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় লারমা স্কয়ার ও আশেপাশের পাহাড়ি-বাঙ্গালিদের অন্তত ৭০টি দোকান।’
মানববন্ধন থেকে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো—
১। পাবর্ত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে; ২। পার্বত্য চট্টগ্রামে সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে; ৩। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে সেনাবাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা জায়গাগুলোতে সেনা ক্যাম্প বাড়াতে হবে; ৪। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির অসংবিধানিক ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/এসকে/কেএম)