আ.লীগের সাত্তার আর চেয়ারম্যান নজরুল মিলে মণিরামপুরের খাটুরা বাওড় দখলের পাঁয়তারা
যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় খাটুরা বাওড় দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে হরিহরনগর ইউনিয়নে 'সুবিধাবাদী' হিসেবে পরিচিত সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।
বাঁওড়টি দখলে নিতে নজরুলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন কুমার ধর এবং ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার সরদারসহ দলটির স্থানীয় কয়েকজন নেতা।
অভিযোগ রয়েছে, খাটুরা বাওড় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের এই নেতারা অবৈধভাবে দখলে রেখে কোটি কোটি টাকা ভোগ করে আসছে। তারা প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে মাছ চাষ করে কোটি কোটি আয় করলেও সরকারি কোষাগারে কোনো প্রকার খাজনাও দেননি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও এখন এই চক্রটি ফের বাওড়টি নিজেদের করে রাখার চেষ্টা করছে।
অভিযোগ উঠেছে, হরিহরনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল আওয়ামী লীগের রিপন ধর, সাত্তারসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় বাওড়টি ফের অবৈধভাবে দখলে নিতে চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে হরিহরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি মো. রবিউল ইসলাম মৎস্যজীবী সমিতির ডিড অনুযায়ী বিগত আওয়ামী লীগ নেতাদের বকেয়া খাজনা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে পরিশোধ করে মৎস্যজীবী সদস্যদের ৯০ ভাগের সমর্থন নিয়ে বাওড়ে মাছ চাষ করতে উদ্যোগী হয়েছেন।
বাওড়ের ভূমিহীন মৎস্যজীবী সমিতির একাধিক সদস্য জানান, ভূমিহীন না হয়েও ভূমিহীন সেজে বাওড়ের মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতির চেয়ার দখল করে আওয়ামী লীগ নেতা ছাত্তার ও তার সহযোগীরা ১৫ বছর প্রকৃত ভূমিহীন মৎস্যজীবীদের ফাঁকি দিয়ে বাওড় হতে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন।
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদী মো. নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার সরদারসহ অন্যান্য নেতাদের সহযোগিতায় বাওড়টি দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।
অভিযোগ উঠেছে, মূলত আওয়ামী লীগের ছাত্তার সুবিধাবাদী নজরুল চেয়ারম্যানকে সামনে রেখে আগের মতো অবৈধভাবে বাওড়টি নিজ দখলে রাখার চেষ্টা করছেন।
আব্দুস ছাত্তার বাওড়টি দখলে রাখার মরিয়া প্রচেষ্টায় মাদকাসক্ত ও বখাটে ছেলেদের নিয়ে মৎস্যজীবী সমিতির নাম ভাঙিয়ে এবং দলছুট বিএনপি নেতা রেজাউল মেম্বারের সহযোগিতায় বাওড়ের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সামনে একটি মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, আব্দুস সাত্তার গত ১৫ বছর তার নিজ গ্রামের শত শত মানুষকে শুধু আওয়ামী লীগ না করার অপরাধে নাশকতার মামলা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করেছেন। বিএনপি ও জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীকে ১৫ বছর বাড়িতে ঘুমাতে দেননি।
জানা গেছে, সাত্তার ভূমিহীন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি হলেও প্রকৃতপক্ষে ভূমিহীন নন। তার এক ছেলে পুলিশে চাকরি করেন এবং আর এক ছেলে বিদেশে থাকেন। নারীলোভী বলে এলাকায় তার কুখ্যাতি আছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, মৎস্যজীবী সমিতির ডিড অনুযায়ী সরকারি সকল খাজনা পরিশোধ করে সমিতির সদস্যদের নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বাওড়ে মাছ চাষ করতে উদ্যোগী হয়েছি। কিন্তু ছাত্তারসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের সহযোগিতায় কিছু সুবিধাবাদী লোক সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বাওড়টির দখলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
১৫ বছর স্থানীয় মানুষের ওপর জুলুমকারী আওয়ামী লীগ নেতা এবং তাদের পুনর্বাসন ও সহযোগিতাকারীদের বিচারও দাবি করেন বিএনপি নেতা রবিউল।
(ঢাকাটাইমস/১০অক্টোবর/ডিএম)