পাবনায় শিম চাষে লোকসানের আশঙ্কা
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় বৃষ্টির পানিতে কয়েক হেক্টর জমির শিমগাছ তলিয়ে গেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে গাছের গোড়ায় পচন ধরছে এবং শিমের ফুল ঝরে পড়ছে। এ কারণে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসতে পারে। মুলাডুলি ইউনিয়নে ২৫০ হেক্টর জমিতে শিম আবাদে বিপর্যয়ের কারণে কৃষকরা ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রচণ্ড গরম পড়লেও ঈশ্বরদীতে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তবে সেপ্টেম্বরজুড়ে বৃষ্টিপাত ছিল।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সূত্রে জানা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৯২ দশমিক ৫ মিলিমিটার।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকা ও সাত ইউনিয়নে ৯১০ হেক্টর জমিতে শিম আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে মুলাডুলিতেই ২৫০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। এই ইউনিয়নের বাঘহাছলা, শেখপাড়া, গোয়ালবাথান ও মুলাডুলি মধ্যপাড়া এলাকায় শিমের আবাদ বেশি হয়েছে।এসব এলাকার শিম চাষিরা জানান, এ বছর আগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ছিল। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বেশির ভাগ জমিতে লাগানো আগাম শিমের গাছ পানিতে ডুবে যায়। এতে শিমগাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। গাছের গোড়ায় পচন ধরায় শিমের ফুল ঝরে পড়ছে। শিমগাছে কীটনাশক প্রয়োগ করেও পচন ও ফুল ঝরে পড়া ঠেকানো যাচ্ছে না। তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত শিম উৎপন্ন হতো। কিন্তু বৃষ্টিতে শিমগাছ ডুবে যাওয়ায় অর্ধেকেরও কম শিম উৎপাদন হতে পারে। এ বিপর্যয়ে তারা ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
শেখপাড়া গ্রামের শিম চাষি রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে আগাম শিমের আবাদ করেছেন। সব ঠিক ছিল কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে উৎপাদন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তিনি আরও জানান, ৫ বিঘা জমিতে শিম আবাদ করতে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এবার পুরো টাকাই লোকসান হবে।
মুলাডুলির শিম চাষি রাজিব হোসেন বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে শিম চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন পানি কমতে শুরু করলেও পোকার আক্রমণে গাছ মরে যাচ্ছে। শিমের ফুল দেখা গেলেও তা নষ্ট হয়ে গেছে।ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, ‘উপজেলায় মোট ৯১০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে মুলাডুলি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় শিমের আবাদের জমির পরিমাণ ২৫০ হেক্টর। পানি বের হওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর বৃষ্টিতে ওই এলাকার ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে অতিরিক্ত বা ভারী বৃষ্টি হলে এ জলাবদ্ধতা আরও বাড়ে। কৃষকদের যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়, সে জন্য আমরা কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘প্রণোদনা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিম চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
(ঢাকা টাইমস/১৬অক্টোবর/এসএ)