প্রেমিকার খরচ চালাতে তরুণীদের ফেসবুক হ্যাক করে টাকা নিতেন অনিক!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৫৭| আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:০৩
অ- অ+

নাটোরের বড়াইগ্রামে বেড়ে ওঠা মেধাবী শিক্ষার্থী ফজলে হাসান অনিক এসএসসি ও এইচএসসিতে পেয়েছিলেন জিপিএ ফাইভ। ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয় নিয়ে ভর্তি হন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

পরে আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর প্রেমে পড়ে প্রেমিকার খরচ চালাতে বেছে নেন হ্যাকিং। এই অপকর্মের মাধ্যমে গত দুই বছর ধরে ফেসবুক-মেসেঞ্জারে ফিশিং লিংক পাঠিয়ে অর্ধশতাধিক ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

অনিকের ফাঁদে পড়া ভুক্তভোগী নারীর করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার উত্তরা থেকে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) ডিআইজি এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘এই হ্যাকারের বিরুদ্ধে একজন ভুক্তভোগী সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে অভিযোগ দেয়। একইসঙ্গে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন থেকেও একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার ছায়া তদন্ত করে অপরাধের ধরণ ও হ্যাকারকে শনাক্ত করে।’

হ্যাকিং সম্পর্কে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের আগস্টে মাসে ভুক্তভোগীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একটি লিংক আসে। না বুঝেই ওই লিংকে ক্লিক করে ফেসবুক ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে। ঠিক তখনই ঘটে বিপত্তি, ভিকটিমের ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড চলে যায় হ্যাকারের দখলে। হ্যাকার ভিকটিমের ফেসবুকের ম্যাসেজার থেকে কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে।

পরবর্তীতে হ্যাকার ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও তার আত্মীয় স্বজন ও পরিচিত লোকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কয়েক ধাপে কৌশলে হ্যাকারের পরিচয় গোপন রাখার জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপরেও যখন টাকার দরকার হতো তখনই ভিকটিমকে ব্ল্যাকমেইল করত।

গ্রেপ্তার হ্যাকার গত দুই বছর ধরে অর্ধশতাধিক ভিকটিমের ফেসবুক আইডি হ্যাক করেছে এবং ১৫ জনের অধিক ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথাও জানানো হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘হ্যাকার অনিক ব্ল্যাকমেইলিংয়ের টাকা দিয়ে ঢাকায় নিজের খরচ চালাতো। তারও একটি গার্লফ্রেন্ড আছে। ওই গার্লফ্রেন্ডের সমস্ত খরচ সে এভাবে আইডি হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইলিং করে চালাতো।’

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির সাইবার সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ‘হ্যাকার অনিক এটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। পুলিশ যাতে ধরতে না পারে, এজন্য সে কোনো বিকাশ নগদে টাকা না নিয়ে বিভিন্ন সুপার শপে যেতো। শপে কেনাকাটা করে ভুক্তভোগীদের বলতো বিকাশ বা নগদে বিল দিতে।’

‘আরেকভাবে সে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা নিত। তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট আছে, ওই অ্যাকাউন্টে সে টাকা নিয়ে নিত। যার কারণে তাকে সহজে ট্রেস করা যেত না। আমরা বিভিন্ন টেকনোলজি ব্যবহার করে তাকে ট্রেস করেছি।’

এ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সংবেদনশীল ছবি-ভিডিও না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আন ওয়ান্টেড লিংকে ক্লিক করতে নিষেধ করেন তিনি। (ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/এলএম/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আমাদের মধ্যে মতানৈক্য দেশটাকে খেয়ে ফেলবে: মির্জা আব্বাস 
নৌপথে অসুস্থ শিশুকে দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা কোস্টগার্ডের
পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য স্বামীকে হত্যা: স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করল যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ
প্রাণঘাতী গুলি না ব্যবহারের অনুরোধ সায়ানের, পুলিশের কাউন্সিলিংয়ের পরামর্শ নিপুনের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা