ভুক্তভোগীকে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে জনপ্রিয়তা আদৌ সমীচীন কি?
অনেক লোকের পছন্দ, প্রশংসিত বা সমর্থিত হওয়ার অবস্থাকে জনপ্রিয়তা বলা হয়। যে যেমন সে তেমন লোককেই পছন্দ করেন। জনপ্রিয়তার মানদণ্ড নিরূপণ করতে আমেরিকানরা গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নিয়ে আসছিলেন। গণতন্ত্রের জনক আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। আমেরিকানরা তাদের নিজের দেশের প্রকৃত গণতন্ত্র কায়েম করতে ইচ্ছুক না হলেও সারাদিন গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে চিৎকার করে অন্যান্য দেশকে গণতন্ত্রের সবক দিয়ে থাকেন। আমেরিকা গণতন্ত্র আবিষ্কার করলেও বিশ্ব র্যাংকিংয়ে তাদের গণতন্ত্র অনেক পিছনে। তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হলো জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা ও জনগণের জন্য।
জনসাধারণের নিকট প্রিয় মানুষকে বলা হয় জনপ্রিয়। সোজাসাপটা কথায় এটাই জনপ্রিয়তার সংজ্ঞা। জনপ্রিয়তা গুণবাচক শব্দ। এটা ঘোড়দৌড়ের মতো। কে কার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হতে পারে। এ প্রতিযোগিতা চলে অনেক মানুষের মধ্যে। তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে আজকাল জনপ্রিয়তা একটি মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা নেই কয়া নেই, হুটহাট করে মানুষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জনপ্রিয়তা শব্দটি বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। এখন জনপ্রিয়তার সংজ্ঞা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। কিছু মানুষ আছে জনপ্রিয়তার পিছনে ছোটে না, বরং জনপ্রিয়তা তাদের পিছনে ছোটে। আবার কিছু মানুষ আছে যে-কোনো মূল্যে জনপ্রিয়তা ছুঁতে হবে। দিন-রাত জনপ্রিয়তার পিছনে ছোটে। প্রথম শ্রেণির মানুষ কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হয়। অর্থাৎ কাজের পিছনে ছোটে। দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ কাজের চেয়ে আত্মপ্রচারে বেশি মগ্ন থাকে। অনেকটা খালি কলস বাজে বেশির মতো।
বাংলা সিনেমার ইন্ডাস্ট্রিতে এ প্রবাদটির উদাহরণ বেশি দেখা যায়। এখানে কাজের চেয়ে খবর প্রকাশের বেশি ব্যস্ততা দেখা যায়। চলচ্চিত্র তৈরি হওয়া দরকার নেই, বরং কেউ কোনো চলচ্চিত্রের চুক্তিবদ্ধের খবর পেলেই তার জনপ্রিয়তার জোয়ার বয়ে যায় বিনোদন পাতায়। এক্ষেত্রে তারা বিনোদন সাংবাদিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে থাকেন। তাদের আবদার ও সাংবাদিকরা প্রায়ই রাখেন। যাদের হাতে বিনোদন ছবির কোনো খবর থাকে না, তারা বেছে নেন সামাজিক মাধ্যমকে। তখন তারা নিজের আত্মপ্রচার আপলোড দেন। বিশেষভাবে নায়িকারা সুড়সুড়ি মার্কা ছবি আপলোড দেন। কারণ আলোচনায় থাকা মানে নিজের কারতি দেখানো। কারণ যেদিন আলোচনায় থাকবেন না ওই দিনই হারিয়ে যাওয়ার ভয়। আলোচনার টেবিলে থাকাদের মাঝে এটাকেই জনপ্রিয়তা বলে। কিন্তু তারা উপলব্ধি করে না জনপ্রিয়তা মানে সর্বজনীন নয়। ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে জনপ্রিয়তায় থাকার চেষ্টা মানেই নিজেকে ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে রাখা। এভাবে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে খেতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। পরে শত চেষ্টা করেও নিজেকে ফিরে পান না।
আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছেন যাদের খাজনা থেকে বাজনা বেশি। যতটুকু না করে থাকেন তার থেকে বেশি বলে বেড়ান। এসব ব্যক্তির নামের পূর্বে জনপ্রিয় শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়। তাদের কার্যক্রম চলুক বা না চলুক। অনেকে আবার ব্যক্তিগত জীবনের খোলামেলা ছবি প্রকাশ করেও জনপ্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন। তারা গরুর লেজ ধরে, ঘোড়ার পা ধরে, ডিম ধরে, অর্ধনগ্ন ছবি দিয়ে জনপ্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে ধূমপান, মাদকাসক্ত হওয়ার অর্ধনগ্ন ছবি দিয়ে জনপ্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন। তেমনি গণমাধ্যমগুলোর ধন্যতাও ফুটে উঠছে। এ ধন্যতা দিনের পর দিন গভীর হচ্ছে।
একজন জনপ্রিয় লেখক বলে গেছেন ক্ষুধা ও সৌন্দর্য বোধের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যেসব দেশে অধিকাংশ মানুষ ক্ষুধার্ত, ওই সব দেশে মাংসল হওয়া সৌন্দর্যের লক্ষণ। যেসব দেশে প্রচুর খাদ্য আছে, ওই সব দেশে মেদহীন হওয়া রূপসীর লক্ষণ। এ জন্য হিন্দি ও বাংলা ছবির নায়িকাদের শরীরে প্রচুর মেদ জমে থাকে। ক্ষুধার্ত লোকেরা ছবি দেখে না। মাংস ও ছবি দেখে ক্ষুধা নিবারণ করে। খবরে থাকতে ব্যস্ত লোকজন ওই সব ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধা নিবারণ করেন এসব রগরগে ছবি দিয়ে। তবে ছেলেরা এক ধাপ নিচে রয়েছেন। তারা তাদের হানিমুনের ছবিসহ প্রদর্শন করে নিজেদের আলোচনায় রাখতে চান।
কিছু ব্যক্তি রয়েছেন নীরবে কাজ করে যান। খবর হোক বা না হোক তাদের কিছু যায় আসে না। তারা মনে করেন নিজের কাজটা ঠিকমতো করলে এমনিতেই খবর তাদের খুঁজে বেড়াবে।
জনপ্রিয়তা নিয়ে আলোচনা করলে একটা বিষয় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। জনপ্রিয়তা মাপার মাপকাঠি কি? ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক মাধ্যমকে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি নির্ণয়ে বর্তমানে ব্যবহার করা হয়। অতীতে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি যাহাই ছিল না কেন, বর্তমানের লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার দিয়ে মাপা হয়। তাই এ দিকটায় অনেকেই মনোযোগী হয়। তাদের যত কাজই থাকুক না কেন, কিছুক্ষণ পরপর কতজন লাইক দিল ওটা দেখতে ভোলেন না।
বর্তমান পৃথিবীতে জনপ্রিয়তা নিরূপণ করার অন্যতম মাধ্যম হলো গণতান্ত্রিক ভোটাভুটি অর্থাৎ ম্যানেজ করার প্রতিযোগিতা। ছলে বলে কৌশলে মাথা কিনতে হবে। কথায় আছে যে যেমন সে তেমন লোককেই পছন্দ করে। কেউবা আবার টাকা চাই, যে বেশি টাকা দিবে তাকেই দিব ভোট। কেউবা আবার আমি যে বংশীয় লোক ওই বংশীয় লোককেই দিব ভোট। কেউবা আবার উচ্চ বংশীয় না হলে দিব না ভোট। কেউবা আবার একই পেশা না হলে দিব না ভোট। অনেকে আবার আমি যে ধর্মের লোকে ওই ধর্মের না হলে দিব না ভোট। কেউবা আবার একথা বলতেও কার্পণ্য করেন না যে, আমি মূর্খ তাই শিক্ষিত হলে দিব না ভোট। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চোর-ডাকাত, আলেম-জাহেল, শিক্ষিত-অশিক্ষিত অর্থাৎ ভালো-মন্দ সবার ভোটের মূল্যই সমান। এখন অর্থের বিনিময়ে কেনা যাচ্ছে এ গণতান্ত্রিক ভোটের সঙ্গে যারা জড়িত পক্ষকে। জনপ্রিয়তা বাছাই এখন আর স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে না, জনপ্রিয়তা এভাবে তালুবন্দি হয়ে যাওয়ায় এ শব্দটির সংজ্ঞা নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে।
আমি চিন্তাভাবনা করে সামাজিক মাধ্যমে সরব নই। অনেকে হয়তো বলবেন এই জামানায় এটা কিভাবে সম্ভব? কেউবা হয়তো আমাকে আবুল, কুদ্দুস ও মফিজ উপাধি দিবে। আমি সেই মফিজ হতেই রাজি। কিন্তু এই সস্তা জনপ্রিয়তার মেশিনের উপকরণ হতে চাই না।
তাপসী তাবাচ্ছুম ঊমি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার হিসেবে স্থানীয় সরকার, রাজস্ব এবং জুডিশিয়াল মুন্সিখানা (জেএম) শাখায় অত্যন্ত সৎ, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। গত এক সপ্তাহ পূর্বে এক সামাজিক মাধ্যমের পোকাকে (বিশেষজ্ঞ) তাপসী তাবাচ্ছুম ঊর্র্মির বিষয়াদি নিয়ে কি ধরনের প্রচার-প্রচারণা হচ্ছে ওটা দেখার জন্য বলি। তিনি আমাকে বিস্তারিত বলেন। যা শুনে আমি রীতিমতো আঁতকে উঠি। শুনেছি তার নাম ও ছবি সম্বলিত অসংখ্য ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই একাউন্টগুলোর মূল কাজ নাকি বাংলাদেশ সরকার এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানবিরোধী বিভিন্ন কনটেন্ট, কমেন্ট, শেয়ার, লাইক ও বিভিন্ন বিষয়কে ভাইরাল করার চেষ্টা করা। অনেকে নাকি আবার তার নাম ও ছবি দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খুলে নিজ নামে ব্যবহার করছেন। কেউবা আবার নিজ নামের পুরোনো আইডি হতে নাম ও ছবি সরিয়ে ঊর্র্মির নাম ও ছবি বসিয়ে বিভিন্ন নোংরা, কুরুচিপূর্ণ সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা করছেন। আবার কতক বিরোধী দলীয় ব্যক্তি পলাতক থেকে ঊর্র্মির নাম ও ছবি ব্যবহার করে অন্যদেরও অনুরোধ করেছেন ঊর্মির নামের ফেসবুক একাউন্ট থেকে সরকারবিরোধী প্রপাগাণ্ডা করতে। কেউবা আবার বিদেশে বসে তার ছবি ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি করে তাকে বিতর্কিত করার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরেই কিছু ব্যক্তি বিদেশে পলাতক থেকে সামাজিক মাধ্যমে দেশবিরোধী বিভিন্ন গুজবের কারখানা তৈরি করেছেন। এসব কারখানা হতে প্রতিদিন মিথ্যা, বানোয়াট ও আজগুবি তত্ত্ব দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। এরা টার্গেট করে দেশের ক্লিন ইমেজসম্পন্ন ব্যক্তিদের চরিত্র হনন করছেন। কেউবা আবার ভিউ ব্যবসা বাড়াতে এসব করে বেড়াচ্ছেন। ভিউ ব্যবসায়ীর বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হলো।
ঊর্র্মির নামের ভুয়া একাউন্ট হতে এসব প্রচার-প্রচারণা ও প্রপাগাণ্ডায় তার কোনো ধরনের ইমেজ বাড়ছে না, বরং যত দিন যাচ্ছে ঊর্র্মি সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। আমাকে এক ভদ্রলোক ইউটিউবের একটা কনটেন্ট দেখালেন। ওই কনটেন্টে আমি দেখলাম এক পলাতক আইনজীবী ঊর্র্মির সঙ্গে কথা বলে ইউটিউবে কথা বলার রেকর্ড পোস্ট করেছেন। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি তিনি অনুমতি না নিয়ে পাবলিস্ট করেছেন, যা গর্হিত কাজ। কারো অনুমতি না নিয়ে কল রেকর্ড ফাঁস করা অনেক বড় অপরাধ। অন্যদিকে ঊর্র্মির মা-কে সাংবাদিক কল করে জবরদস্তিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য নিতে চাচ্ছেন, আবার বিকৃত করে ওই তথ্য পাবলিস্ট করেছেন। একজন সহজ সরল মা-কে কল করে অনেক তথ্যই নেওয়া যায়, তাই বলে ভিউ বাণিজ্য করতে ওই তথ্য পাবলিস্ট করতে হবে কেন? এ সময় আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে একজন পলাতক সে হয় দুর্নীতিগ্রস্ত বা যে কোনো ধরনের অপরাধী মন, সে নিজেকেই রক্ষা করতে পারছে না, তাই তো সে পলাতক, সে স্বাভাবিকভাবেই তার নিজের দল ভারী করতে অর্থাৎ অন্যদেরকেও পলাতক বানাতে সচেষ্ট রয়েছে। আমি পূর্ববর্তী সরকার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভুল আমার লেখনীর মাধ্যমে জাতিকে জানিয়ে যাচ্ছি। সর্বশেষ ঊর্মির বিষয়ে আমি প্রবন্ধ লিখি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন উপ-কমিশনার আমাকে প্রশ্ন করেন আপনি এ বিষয়ে লিখছেন কেন? আমিও উত্তর দিলাম ভালোবেসে লিখি। তিনি হেসে বললেন তাহলে আর প্রশ্ন নাই।
কিছু ভুঁইফোঁড় গণমাধ্যম ঊর্মি গা-ঢাকা দিয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করে। তাদের প্রতি আমার কথা হলো আপনাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গা-ঢাকা দেবে না তো কি করবে? দেশে আর সংবাদ পাইলেন না, মূল বিষয় বাদ দিয়ে তাদের হাঁড়ির খবর নিতে যান কেন? আপনারা কেউ তিল বললে তাকে তাল বানিয়ে দেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করে কাটা গায়ে নুন ছিটানোর তো দরকার নাই।
অনেক সরকারি কর্মচারীর চাকরিবিধি তোয়াক্কা না করে সস্তা জনপ্রিয়তার পিছনে ছুটছে। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে কিছু ভিউ ও দেশব্যাপী প্রচারণা পাওয়া মানে জনপ্রিয়তা নয়। অপরাধের মাধ্যমে পরিচিত পাওয়াকে জনপ্রিয়তা বলে না। যেমন সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ইতিমধ্যে ৩ জন সাময়িক বরখাস্ত এবং একজন বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয়েছে। এ ঘটনায় এরা দেশব্যাপী পরিচিত পেলেও অন্দর মহলে এদের দৃশ্যমান পক্ষের সমর্থকরাও সমালোচনা করেন, এদের উচিত ছিল আগে সরকারি চাকরি ছেড়ে পরে এসব কথাবার্তা বলা। যেমন আমি নিজে যদি সরকারি চাকরিজীবী হতাম আজকের এই কলাম হয়তো আচরণবিধির কারণে লিখতে পারতাম না। আমার জীবনে একবার সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষামূলকভাবে আবেদন করেছি। আমি কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে এসে যোগদানপত্র ছিঁড়ে ফেললাম। অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন কেন এমন করলাম? আমিও উত্তর দিলাম এখানে যে আচরণবিধি বা শর্ত দেওয়া আছে তাতে আমার চাকরি দিনে চারবার যাবে। আমি মনে করি বিধিবিধান মেনে চলার মধ্যে সম্মান নিহিত। কেউবা ইউটিউবে ভিউ বাড়াতে বললেন ঊর্র্মি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন। বিষয়টি আসলে এমন নয়? তিনি দীর্ঘদিন থেকে ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয়ে সরব থাকেন, এরই ধারাবাহিকতায় ফেসবুকে কিছু শব্দ পোস্ট করেন। ঊর্মিদের চেয়েও অনেক স্পর্শকাতর বিষয়ে সরকারি কর্মচারীরা কথা বলেন, এমনকি গণমাধ্যমেও বলতে শুনি, যা সুস্পষ্ট চাকরিবিধি লঙ্ঘন, তবে চাকরি যাওয়া তো দূরের কথা তারা উল্টো সরকারের বাহবা কুড়াচ্ছেন, কারণ কথাগুলো সরকারি দলের পক্ষে ছিল। আমি এমন সরকারি কর্মচারী দেখেছি যে সরকারি দলের মিছিলে দেশীয় অস্ত্রসহ ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, তার দ্রুত প্রমোশনও হয়েছিল।
এমতাবস্থায়, ঊর্মিকে আহ্বান করব তার ছবি ও নাম দিয়ে তৈরি করা ভুয়া একাউন্টগুলোর বিষয়ে সুস্পষ্ট বার্তা প্রদান করা, নচেৎ সরকার এসব প্রপাগাণ্ডার বিষয়ে ভুল বুঝতে পারেন। অন্যদিকে সরকারকে আহ্বান করব ঊর্মির মতো নবীন, কোমলমতি, শিশুতুল্য সরকারি কর্মকর্তার নামে এসব ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট হতে কনটেন্ট তৈরি করে এবং সরকারবিরোধী শেয়ার, লাইক ও কমেন্ট করার জন্য ঊর্মিকে দোষারোপ করা যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না।
অবশেষে সবার প্রতি আহ্বান সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা হতে আমাদের সকলকে এ হাস্যকর কর্মকাণ্ড হতে নিভৃত থাকার এখনই সময়। নয়তো তরুণরা বিষয়টি বুঝতে পারা মাত্রই ভুয়া ধ্বনি ললাটে জুটবেই।
লেখক: সভাপতি, আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী সংগঠন ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল এন্টি অ্যালকোহল
মন্তব্য করুন