বিশ্ব এইডস দিবস: কেন কীভাবে হয় এই রোগ? জানুন, সচেতন হোন

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৬
অ- অ+

আজ বিশ্ব এইডস দিবস। ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ ডিসেম্বর দিবসটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়। এইডস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার নিশ্চিত হলে, এইচআইভি/এইডস যাবে চলে’। এ উপলক্ষে আজ বাংলাদেশের এইডস–সংক্রান্ত নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (টিবি-এল অ্যান্ড এএসপি) তথ্যমতে, দেশে গত এক বছরে (২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর) ১ হাজার ৪৩৮ জন নতুন করে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে এইডসে মারা গেছেন ১৯৫ জন।

কিন্তু কেন এই এইডস?

এই মরণব্যাধির জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাস। মানুষের রক্ত ও অন্যান্য দেহ রসেই একমাত্র বেঁচে থাকে এই ভাইরাস। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচআইভি ভাইরাস রয়েছে এমন কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কারণে এই রোগ ছড়ায়। এছাড়াও একাধিক কারণ আছে এইচআইভি পজেটিভ হওয়ার।

রোগীর দেহ থেকে অন্যের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস ছড়ায় রক্ত ও বীর্যের মাধ্যমে। বীর্যের মাধ্যমে সংক্রমিত হয় বলেই এই অসুখকে ‘সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

এমনকি সর্দি-কাশিকেও আটকাতে পারে না শরীর। ফলে ‘অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিশিয়েন্সি সিনড্রোম’ বা এইডসের প্রভাবে মৃত্যু অবধারিত হয়ে ওঠে। যদিও এইচআইভিতে আক্রান্তদের বাঁচাতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের চেষ্টার শেষ নেই। চলছে একের পর এক গবেষণা।

এইডস যেভাবে ছড়ায়

১. নারী বা পুরুষ কারও যদি শরীরে এই ভাইরাস থাকে, তাহলে যৌন সম্পর্কের ফলে অন্যজনের শরীরে সহজেই প্রবেশ করবে এই রেট্রোভাইরাস।

২. কনডম ব্যবহার করলে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই- এমন ধারণাও ঠিক নয়। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন মিলনের সময়ে কনডম ছিদ্র হয়ে গেলে আপনি বিপদে পড়তে পারেন।

৩. ইঞ্জেকশন নেওয়ার সময় নতুন সিরিঞ্জ ও সূচ ব্যবহার করা না হলে দ্রুত এই ভাইরাস অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

৪. এইডসে আক্রান্ত প্রসূতির সন্তানের শরীরেও এইডস হতে পারে। বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর দেহে এই ভাইরাস প্রবেশ করে। ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ২ মিনিটে একটি শিশু এইডসে আক্রান্ত হচ্ছে।

৫. আধুনিক কিছু ওষুধে এই রোগে রোগীর জীবন কিছুদিন বাড়ানো গেলেও সে সব চিকিৎসা পদ্ধতি মোটেও মধ্যবিত্তের আয়ত্বে নেই।

৬. এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সুস্থ ব্যক্তির দেহে ভুলবশত ব্যবহার হলে তা থেকে রোগ ছড়ায়।

৭. এইচআইভিতে আক্রান্তদের মাড়ির ক্ষত ও দেহের ক্ষত থেকে নিঃসৃত লালা ও রস থেকে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

এইডস প্রতিরোধে করণীয়

১. আপনি যদি এইচআইভিতে ভোগেন, তাহলে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন। আপনার কারণে যাতে পরিবারের অন্য কেউ মারাত্মক এই রোগে আক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। এর পাশাপাশি নিয়মিত চেকআপ করুন।

২. আপনি যদি এইচআইভির সংস্পর্শে ভুল করেও আসেন, তাহলে পোস্ট-এক্সপোজার প্রফিল্যাক্সিস ব্যবহার করুন।

এক্ষেত্রে প্রথম ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পিইপি গ্রহণ করার মাধ্যমে এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ২৮ দিন ওষুধ খেতে হবে।

৩. প্রতিবার শারীরিক সম্পর্কের সময় নতুন কনডম ব্যবহার করা।

৪. এইচআইভি থাকলে যৌন সঙ্গীকে আগেই জানান। না হলে আপনার ভুলে তিনিও আক্রান্ত হতে পারেন।

৫. ইনজেকশন গ্রহণের সময় পরিষ্কার সুঁই ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করুন।

৭. এইচআইভি পজিটিভ অবস্থায় আপনি যদি গর্ভধারণ করেন তাহলে শিশুর শরীরেও এই সংক্রমণ ঘটতে পারে। তবে আপনি যদি গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ শুরু করেন, তাহলে আপনি ও শিশু উভয়ই সুস্থ থাকবেন।

৮. বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষের সুন্নতে খৎনা এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সোনারগাঁয়ে যুবদল নেতা বহিষ্কার 
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আরাফাতের পোস্ট
ঘাটাইলে লাল মাটি কাটার অপরাধে ২ লাখ টাকা জরিমানা
নেতানিয়াহুকে গোপনে অস্ত্র দিতেন এরদোয়ান: ইরানের গণমাধ্যম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা