কাপ্তান বাজারে কী হচ্ছে?

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দিন দিন অশান্ত হয়ে উঠছে রাজধানীর কাপ্তান বাজার। অনিয়ন্ত্রিত চাঁদাবাজি আর দখল আতঙ্কে ভুগছে বাজারের ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যেই দিন-দুপুরে এ বাজারে এখন খুন হচ্ছে।
জানা গেছে, আওয়ামী চাঁদাবাজরা পালিয়ে গেলেও নতুন নতুন লোক এসে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। অনিয়ন্ত্রিত চাঁদাবাজদের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর চিঠি দিয়েও কোনো সুরাহ পায়নি কাপ্তান বাজার পোল্ট্রি মুরগি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
এদিকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গেল বুধবার কাপ্তান বাজারের কমপ্লেক্স ভবন-১ এর উত্তর দিকের পকেট গেটের সামনে আল-আমিন নামে এক যুবককে খুন করা হয়। এ মার্কেটে ‘নাটোর বনাজি স্টোর’ নামে একটি কবিরাজি ওষুধ বিক্রির দোকান রয়েছে নিহত আল আমিনদের। দোকানের বাম পাশের ফুটপাতে তার ছোট ভাই সুমন শরবত বিক্রি করেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওয়ারী থেকে আসা কয়েকজন যুবকের এসে দোকানের সামনে মোটরসাইকেল রেখে চাঁদাদাবি করেন। তখন সুমন চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আগত যুবকরা চলে যায়। তবে গত বুধবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে কয়েকজন যুবক দোকানের সামনে এসে সুমনের ওপরে হামলা করে। এসময় ছোট ভাই সুমনকে রক্ষা করতে এসে বড় ভাই আল আমিন হামলার শিকার হন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের মা রেখা বেগম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১২ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা করেন।
আসামীরা হলেন— আব্দুর রহিম ভূইয়া (২৭), আব্দুর রহমান ভূইয়া (২৪), হানিফ ভুইয়া (৩০), জনি (৩০), শুভ (২৫), সোহাগ (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামায় আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১নং আসামি আব্দুর রহিম ভূইয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলে যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। এছাড়া তিনি কাপ্তান বাজার কমপ্লেক্স ভবন-২ এর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি ঘটনা স্থলে ছিলাম না। আমি কমপ্লেক্স ভবন-২ এর সাধারণ সম্পাদক। কমপ্লেক্স ভবন-১ এর সামনে গিয়ে কোনো চাঁদাবাজি করব? রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে ও আমার পরিবারকে হেয় করতে আল-আমিন হত্যা মামলায় আমাদের নাম দিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমি বা আমার পরিবারের কোনো সদস্য জড়িত না।’
এদিকে মামলা হলেও এখনো অধরা খুনিরা। হামলার ভিডিও এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আসামিদের চেহারা স্পষ্ট দেখা গেলেও, কাউকে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আসামিদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর শেখ শাহজালাল।
ওয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়সাল আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, আল-আমিন নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/আরএইচ/এমআর)

মন্তব্য করুন