একগুচ্ছ কবিতা

তন্ময় চক্রবর্তী
  প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:১২
অ- অ+

কবি

কবিরা কখনও সুখে থাকে না,

কবিরা সবসময় একটু বেশিই ভাবে।

কবিতার সাথে হয়তো দুঃখ একটু কমে,

কিন্তু কবিরা কি সত্যিই ভালো থাকে?

কবিতার খাতাও কোনোদিন শেষ হয়,

কিন্তু অকথ্য কথন সেতো শেষ হবার নয়,

ওই অকথ্য কথনেই হয়তো হারায় হাজারো কবি,

কারণ কিছু কষ্ট হৃদয়ে সবসময় থাকে।

তাঁরা কবি,

তাঁরা হাজারো শব্দের মিলন ঘটায়,

হাজারো শব্দকে ভেঙেচুরে

অন্যের কষ্টকেও নিজের করে নেয়।

কিন্তু তাদের কষ্টের খোঁজ কেই বা নেয়!

কেই বা তাদেরও জিজ্ঞেস করে

এত শব্দ ছন্দের উৎস কোথায়!

হয়তো কেউ ওই কবিতা পড়ে হাসে,

হয়তো কেউ কাঁদে বুক ফুলিয়ে।

দিনশেষে কবি তার সার্থকতা খুঁজে পায়,

কিন্তু কবিরা কখনও সুখে থাকে না,

কারণ কবিরা সবসময় একটু বেশিই ভাবে।

আলোকিত মানুষ

আমি এসেছিলাম সকালের সূর্যোদয়ের মতো,

একদিন চলে যাবো পশ্চিম দিগন্তের সূর্যাস্ত হয়ে।

কিন্তু আমি আবারও ফিরবো তোমাদের মাঝে,

জন্মান্তরের বাধা ভেঙে নতুন সূর্য হয়ে।

তখনকার রবির কিরণ হবে আরও উজ্জ্বল,

আরও আলোকিত করবে তোমাদের,

আরও সুন্দর হয়ে রাঙাবো তোমাদের জীবন।

সেদিন আর কারও অভিযোগ রইবে না,

কেউ বলবে না তুমি আলোকিত করোনি,

কেউ মানবে না আমি অন্ধকারে হারানো পথিক,

সবাই বলবে তুমিই সেই দর্শনের পথ দেখানো দার্শনিক।

আবারও একদিন নতুন কোনো কাব্যে তোমাদের গল্প লিখবো,

শব্দের দৃঢ়তা তোমাদের সাজাবো,

সেদিন আমার দ্বারা ক্ষতি হবে না কারও,

আমি আবারও আলোকিত মানুষ হয়েই,

সূর্যের কিরণের মাঝেই হারাবো।

সত্তার সন্ধানে

সেদিন হঠাৎ কবিতার খাতার,

চিরন্তন সম্ভাষণ মাঝে,

খুঁজে চলছে নিরন্তর ভালোবাসা।

শব্দের প্রতিটা দৃঢ়তায় পোড়াচ্ছে হৃদয়ের প্রতিটা কোণ,

তবুও মনুষ্য তার আঁকড়ে ধরার অভ্যাসে অভ্যস্ত,

তবে নূতনের মাঝে খুঁজে ফেরে চিরায়ত তাহাকে।

তবে সে কি খুঁজে পায় মহামনুষ্য সত্তা,

যেথা ভালোবাসা, প্রেমে মোড়ানো প্রতিটি পড়ত,

কিংবা বিষাদ মাঝে ছুটে চলা এক ফোটা মৃদু হাসি।

নাকি চোরাবালি থেকে উঠে এসে নতুন আমিকে আবিষ্কার।

এ যেন হঠাৎ বিষাদ মাঝে অস্তিত্বের ছোঁয়া,

ভালোবাসার পরশে ছোঁয়া জীবনের নতুন পথ,

যে পথে বহু পূর্বে হাঁটার সৌভাগ্যে ভেসেছিলো,

যে শান্তির অমলিন কোমল নীড়।

তবে সেথাও কবির শঙ্কা নাহি কাটে,

কারণ মনুষ্যের চরিত্রে কোথা যেন,

অনিশ্চয়তার কালিটা ঠিকই লেগে থাকে,

তাই কবি হেতা তাহার ভালোবাসার

দর্শনকে বারবার খুঁজে ফেরে সহস্র ভিড়ের মাঝে।

সময়ের উপাখ্যান

এ এক মহান উপাখ্যান,

যেখানে বিদ্রোহ ছিল,

জয়-পরাজয়ের ফলাফল ছিল,

ছিল ভালোবাসা এবং ঘৃণায় ভরা অনুভূতি।

যে উপাখ্যান পড়তে ঈশ্বর নেমেছিল স্বয়ং ধরাতে।

তবুও কি সে উপাখ্যানের ইতি ঘটেছে,

নাকি আগুনে ঘি ঢালার মতো আরও জ্বলছে,

নাকি আরও বিদ্রোহের আগুনে জাতি পুড়েছে।

তবুও কি সেই রক্তপাত বন্ধের সময় হয়েছে।

আমার দৃষ্টিতে সে পথের বহু দেরি,

সে সময় হয়তো কোনোদিন আসবে,

কিন্তু বিজয়ী হবে শুধুই প্রকৃতি,

বাকি সবাই তো দাবার ঘুঁটি,

ঘুঁটি ভাংলেও নতুন ঘুঁটি আবার ফিরে আসে,

কিন্তু সে খেলার অবসান কভু না ঘটে।

তাই তোমরা যদি ভাবো সব বিজয়ী,

আবার কেউ যদি নিজেকে হেরে যাওয়া সৈনিক ভাবো,

আসলে তোমরা সবাই বোকা,

তোমরা শুধু সময়ের প্রয়োজন মাত্র,

সময় ফুরালে তোমাদের চাহিদাও ফুরাবে,

আর আমি হাসবো তোমাদের দিকে তাকিয়ে,

কারণ সময়ের খেলাতে তোমরাই বারবার ফিরে আসা দাবার ঘুঁটি।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সচিবালয়ে যাচ্ছেন বিডিআরের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল 
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
ডিএমপির সাবেক সহকারী কমিশনার রাজন সাহা গ্রেপ্তার
জুলাই আন্দোলনে শিশুসহ নিহত ১৪০০: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা