দুদকের মামলায় কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন কারাগারে

​​​​​​​কক্সবাজার প্রতিনিধি, ঢাকাপটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৯
অ- অ+

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার ( ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতে রুহুল আমিন আত্মসমর্পণ করলে বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজ উল্লাহ।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, সাবেক জেলা দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের আগে জমি অধিগ্রহণের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বাদীর স্বাক্ষর নথি জাল করে নিজেদের নাম কেটে দেওয়ার অভিযোগ আছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ।

জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন গত বছরের জুলাই জেলার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, হুলিয়া ক্রোক-পরোয়ানা জারির আবেদন জানান।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মাতারবাড়ীর বাসিন্দা কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন। মামলার পরপরই নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নথিপত্র পাঠান তৎকালীন জেলা দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার। কিন্তু মামলা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে কয়েক দিন পর একই আদালতে আবার মামলা করেন কায়সারুল ইসলাম।

ওই মামলায় জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।

মামলার তদন্ত শেষে গত বছরের জুলাই আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় দুদক। ক্ষেত্রে সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে বাদীর স্বাক্ষর নথি জালিয়াতিতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয় অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে মামলা থেকে দুই আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।

দুদক আদালত সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে চিংড়ি ঘের, ঘরবাড়িসহ অবকাঠামোর বিপরীতে ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ করা হয় ২৩৭ কোটি টাকা। চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের বিপরীতে ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে মনগড়া ২৫টি চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ক্ষতিপূরণের ৪৬ কোটি টাকা থেকে ১৯ কোটি ৮২ লাখ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।

জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, শুরুতে চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ২৩ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছিল। পরে তিনটি চেক বাতিল করা হয়। এরপর অবশিষ্ট ১৯ কোটি ৮২ লাখ হাজার টাকা যারা নিয়েছেন এবং দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। দুদক দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়। মামলায় ২০১৭ সালের ২২ মে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠান আদালত। এর আগে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/৯ফেব্রুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভৈরবে আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন 
চলতি বছরে বরিশালে প্রথমবারের মতো করোনা শনাক্ত
সুষ্ঠু তদন্তে গুম কমিশনকে সহযোগিতার আশ্বাস জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের
জনতা ব্যাংকের ২৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা