পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের বীরত্বসূচক রাষ্ট্রীয় খেতাব দাবি সন্তানের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:১২
অ- অ+

২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের বীরত্বসূচক রাষ্ট্রীয় খেতাব দাবি করেছেন তার ছেলে মো. আশরাফুল আলম হান্নান।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে মো. আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘পিলখানায় সেদিন বিডিআর জওয়ানেরা হত্যাকাণ্ডের পক্ষে, তারা খুঁজে খুঁজে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে চলেছেন। ওই অবস্থায় কোনো কোনো বিডিআর সদস্য হয়তো এ হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেননি। আবার জওয়ানদের সামনে এগিয়ে যাওয়ারও সাহস করেননি। কিন্তু এর মধ্যে বিডিআরের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ ও সেনাবাহিনীর অফিসারদের বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। এর স্বীকৃতি হিসেবে পরে বাংলাদেশ সরকার তাকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছে।’

স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় দরবারে যোগ দিতে দেরি হয়ে যাবে- এ আশঙ্কায় নুরুল ইসলাম সকালে নাশতা না খেয়েই বাসা থেকে বের হয়ে যান। দরবার হলে জওয়ানেরা হত্যাকাণ্ড শুরু করার পর অনেকে যেখানে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিলেন, সেখানে কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম এগিয়ে যান সশস্ত্র জওয়ানদের প্রতিরোধ করতে। বিদ্রোহে বাধা দেওয়ায় বিদ্রোহীরা মশারির লোহার স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়ে তারপর ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে মুক্তিযোদ্ধা এ বিডিআরের কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজরকে।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত অন্যান্যের মতো তার বাবার মরদেহ গণকবর থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। পরে ওই বছরের ৪ মার্চ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরলক্ষ্মী গ্রামের বাড়িতে তার বাবার মরদেহ দাফন করা হয়। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে নুরুল ইসলামের এ বীরত্বের কথা। হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর একমাত্র বিডিআর সদস্য কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের মর্যাদা পান। ২০০৯ সালের ২০ আগস্ট নুরুল ইসলামের কবরে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয় এবং পরবর্তীতে বিজিবির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদকে’’ ভূষিত হন।’

মো. আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘নিষ্ঠাবান এ সুবেদার মেজর কর্মজীবনে চারবার ডিজি পদক পেয়েছেন। পাশাপাশি অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সরকারি খরচে পবিত্র হজ্জ্বব্রত পালনের সুযোগ দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড এবং নৃশংসতায় একমাত্র বাধাদানকারী এবং ১২০ এর অধিক সেনা অফিসারের জীবন রক্ষার চেষ্টাকারী শহীদ হিসেবে আমার বাবাকে বীরত্বসূচক রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধসহ আবেদন করছি।’

নুরুল ইসলামের সন্তান সঠিক তদন্তের মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রকৃত কুশীলব এবং প্রকৃত হত্যাকারী ও অপরাধীদের বিচারের বাস্তবায়ন করা, নিহতদের মূল্যায়ন ও পরিবারকে সম্মান প্রদানের দাবি জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/এলএম/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পুরানা পল্টনে সাব্বির টাওয়ারের আগুন নিভল
এক দিন পিছিয়ে মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া
শেখ হাসিনার অপকর্মের খবর রাখতেন বলেই সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়েছে: সালাম আজাদ
আল্লামা সুলতান যওক নদভীর ইন্তেকালে জামায়াত আমিরের শোক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা