দিনাজপুরে জমে উঠেছে লিচুর বাজার

লিচুর জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার। এরই মধ্যে বাজারে মাদ্রাজি, বেদানা ও চায়না-৩ জাতের লিচু থাকলেও মোম্বাই, হারিয়া, চায়না-২, মোজাফরি, কাঁঠালি জাতের লিচু বাজারে আসতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা চিন্তা করে লিচু চাষিরা একটু আগেভাগেই বাগান থেকে লিচু পাড়তে শুরু করেছেন।
শনিবার দিনাজপুর শহরের ফলের বাজার কালিতলা নিউ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। জাত এবং আকারভেদে বিভিন্ন দামে লিচু বিক্রি হচ্ছে। যেমন- মাদ্রাজি বিক্রি হচ্ছে শ হিসেবে ৩শ থেকে ৪শ টাকা, বেদানা লিচু বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪শ থেকে ৬শ টাকা এবং চায়না-৩ বিক্রি হচ্ছে শ প্রতি সাড়ে ৯শ থেকে ১১শ টাকা। দিনাজপুরের উৎপাদিত লিচু শতকরা ২০ ভাগ অত্র জেলার চাহিদা মিটিয়ে শতকরা ৮০ ভাগ লিচুই চলে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য জেলায়। এমনকি দিনাজপুরের বেদনা লিচু জিআই পণ্য হিসেবে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং বিদেশে রপ্তানি করে কৃষি অর্থনীতিতে একটি নতুন সম্ভাবনার দাঁড় উন্মোচন করেছে।
নিউ মার্কেটের লিচুর আড়তদার ও ব্যবসায়ী মওলা বলেন, কিছুদিন পূর্বে প্রচণ্ড রোদ আর গরমের কারণে মাদ্রাজি লিচু ঝরে পড়ায় এই লিচুর সরবরাহ একেবারেই কম। সরবরাহ কম থাকায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, এর ফলে ক্রেতাদের একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
তবে তিনি বলেন, গতবারের তুলনায় এবার লিচুর আমদানি অনেক কম।
লিচুর খুচরা ব্যবসায়ী আনিসুর বলেন, ঢাকার ব্যবসায়ীদের কারণে লিচুর বাজার চড়া। আমরা স্থানীয় বাজার ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বেদানা লিচু শ হিসেবে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় নিচ্ছি, সেখানে ঢাকার পাইকাররা নিচ্ছে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। এর ফলে লিচু চাষিরা ঢাকার পাইকারদের সাথে ব্যবসা করছে। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে ক্রেতাদের ওপর। একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে লিচু।
দিনাজপুরের সদর উপজেলা থেকে লিচু কিনতে আসা ক্রেতা মোকলেসুর রহমান বলেন, গতবারের তুলনায় দাম একটু বেশি। তবে দাম যাহোক বছরের ফল খেতে তো হবেই।
নিউমার্কেটের কয়েকজন ইজারাদার বলেন, এটা দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় ফলের বাজার। এখানে দৈনিক আড়াই থেকে তিন কোটি টাকার লেনদেন হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সম্ভাবনাময় ফলের এই বাজারটি দেশের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. আনিসুজামান বলেন, দিনাজপুরে ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান আছে ৯ হাজার ৯৮টি। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২৮ টন, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানিতে বিশেষ অবদান রাখবে।
(ঢাকা টাইমস/২৫মে/এসএ)

মন্তব্য করুন