সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২৫, ১৪:৪৫
অ- অ+

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ-২০২৫ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সচিবালয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

রবিবার দুপুরে এই ঘোষণা দেন পরিষদের সভাপতি মো. বদিউল কবীর। তিনি বলেছেন, “অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

এরপর সচিবালয় চত্বরে বাদামতলায় অবস্থান নিয়েছেন কর্মচারীরা।

এর আগে সকালে অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন তারা। বিপুলসংখ্যক কর্মচারীর উপস্থিতিতে মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয় ‘অবৈধ কালো আইন মানব না। মিছিল সচিবালয়ের ভেতরে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন, ১৯৭৯ সালের বিশেষ বিধানের প্রস্তাবিত ধারাগুলো সংযোজন করা হলে দেশে সংকট সৃষ্টি হবে। কারণ, ১৯৭৯ সালের বিশেষ বিধানের প্রস্তাবিত ধারাগুলো বাংলাদেশ সংবিধানের ১৩৫(২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় উপস্থিত নেতারা জানান, নতুন অধ্যাদেশ নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। গোপনে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং (আইনি মতামত) নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করে অনুমোদন দেওয়া হয়। এ জন্য দেশের সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ আইন জারি হলে কর্মচারীদের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা সংকুচিত হবে। ক্ষমতার অপব্যবহার বেশি হবে। বিভিন্ন কারণে অপছন্দের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মক্ষেত্রে নাজেহাল হবে। চাকরি হারানোর আশঙ্কা তৈরি হবে।

খসড়ায় মূলত ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ-১৯৭৯ যুক্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত মার্চে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠিতে বলেছিল, দেশের বিদ্যমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নানা মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বসহ অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আইনসংগত আদেশ-নির্দেশ পালনে অনীহা প্রকাশ করছেন। ফলে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ সরকারি কর্মকাণ্ড সম্পাদনে শৈথিল্য প্রদর্শিত হচ্ছে। এ কারণে সরকারি কর্মচারীদের বিশৃঙ্খলার বিষয়ে দ্রুত আইনগত কার্যক্রম গ্রহণের ব্যবস্থা হিসেবে রহিত করা ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯ পুনরায় কার্যকর করার প্রস্তাব করে তারা। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিশেষ বিধান পুনরায় কার্যকর না করে সরকারি চাকরি আইনের সঙ্গে যুক্ত করেছে।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে জারি করা এই অধ্যাদেশ রহিত হয়ে যায়। তবে ২০১৮ সালে সরকারি চাকরি আইন জারি হওয়ার আগ পর্যন্ত ‘কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরকরণ আইন, ২০১৩ দ্বারা এ অধ্যাদেশ বহাল রাখা হয়। সরকারি চাকরি আইনের সঙ্গে অধ্যাদেশটি যুক্ত করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করে। জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পাওয়ায় সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুযায়ি তদন্ত ছাড়াই সরকারি কর্মকর্তাদের অব্যাহতি দেওয়া যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া শর্টগান উদ্ধার 
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বৈঠক
এএনএইচ গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও পিতৃত্ব অস্বীকারের অভিযোগ
মেয়র হিসেবে শপথ নিতে রিট করেননি ইশরাক হোসেন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা