আখাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ১৯ গ্রাম প্লাবিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টানা বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, কৃষি জমি, পুকুর, জলাশয়।
আখাউড়া স্থলবন্দরের শুল্ক অফিস এবং ইমিগ্রেশন অফিসের সামনের চত্বরে পানি প্রবেশ করেছে। স্থলবন্দর নিকটবর্তী আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের প্রায় ১০০ মিটার জুড়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪ শতাধিক পরিবার।
এদিকে, পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয় দিতে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করেছে উপজেলা প্রশাসন। ১৩টি পরিবারের প্রায় ৫০ জন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। তাদেরকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে রবিবার হঠাৎ করে উপজেলার সীমান্তবর্তী ৩টি ইউনিয়নের ৮/১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতিরি সৃষ্টি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, আব্দুল্লাহপুর, রহিমপুর, বঙ্গেরচর, বীরচন্দ্রপুর, সাহেবনগর, মোগড়া ইউনিয়নের আওড়ারচর, সেনারবাদী, ধাতুরপহেলা বাউতলা, উমেদপুর, আদমপুর, রাজেন্দ্রপুর, ছয়গড়িয়া, জয়নগর, খলাপাড়া, মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা, আইড়ল ইত্যাদি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে ওই এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। কিছু রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আকস্মিক বন্যায় উপজেলার ৬১টি হেক্টর কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে আউশ আবাদ, আউশ বীজতলা, শাকসবজি, আদা, হলুদ ও পুষ্টি বাগান ইত্যাদি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি নেছার উদ্দিন ভূইয়া বলেন, হঠাৎ বন্যায় বন্দর এলাকায় আমদানি-রপ্তানি ও সিএন্ডএফ অফিসের ভেতরে পানি ঢুকেছে। অফিসে বসে কাজ করতে পারছি না। তবে, বিকল্প উপায়ে কাজ করছি। আমদানি-রপ্তানি এখনও স্বাভাবিক আছে। তবে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
মোগড়া ইউনিয়ন প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার প্রকৌশলী মো. শামিম আলম বলেন, মোগড়া ইউনিয়নের ৯টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখছি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান বলেন, বন্যায় বন্দরের আমদানি- রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। সকালে ৬টি ট্রাকে প্রায় ২৫ মেঃ টন মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তথ্য, ১৮ থেকে ১৯টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪৫০টি পরিবার পানিবন্দি আছে। ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৫০ জন আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে চাল, ডাল, মসলা, মুড়িসহ শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।
(ঢাকা টাইমস/০২জুন/এসএ)

মন্তব্য করুন