প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশেই আছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ

২১ জুলাই ২০২৫ তারিখ মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সমগ্র জাতির জন্য একটি বেদনাদায়ক দিন। এ দিন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দিয়াবাড়ি স্থায়ী ক্যাম্পাসে একটি দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণরত অবস্থায় বিধ্বস্ত হয়। বেলা ১টায় স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় তখন অভিভাবকদের জন্য শুধু স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী অপেক্ষারত অবস্থায় ছিল। এ সময়ে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আজ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন মাইলস্টোন স্কুল শাখার ২৭ জন শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক, ৩ জন অভিভাবক এবং ১ জন আয়া। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩৪ জন।
বেদনাদায়ক এই দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংস্থার দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা গণমাধ্যমের সহায়তায় লক্ষ্য করেছে সমগ্র জাতি। ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিপদ কাটিয়ে ওঠার জন্য ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকগণ, শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ এবং সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মাইলস্টোন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) নুরন নবী এবং অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম। কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও বাহিনীর প্রতি যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছিলেন। মাইলস্টোন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং অধ্যক্ষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সকল মিডিয়া ও সংবাদ কর্মীদের প্রতি যারা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনার ভয়াবহতাকে মানুষের দৃষ্টিগোচর করেছেন।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দুর্ঘটনার ক্ষত মুছে সম্মানিত অভিভাবকগণের সার্বিক সহযোগিতায় বুধবার ৬ আগস্ট থেকে স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর পাশাপাশি কাউন্সিলিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে মাইলস্টোন কলেজ শাখা। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সোমবার ১১ আগস্ট থেকে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমে ফেরার চেষ্টা করছে মাইলস্টোন স্কুল শাখা। বলে রাখা দরকার যে, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছাত্রছাত্রীদের নতুন ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
গত সোমবার ১১ আগস্ট বিমান দুর্ঘনায় হতাহত পরিবারের সদস্য এবং মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিনিধিদের সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাক্ষাৎ করে কথা বলেছেন মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। এসময় মাইলস্টোন কলেজের প্রতিনিধিগণ হতাহত পরিবারগুলোর পাশে থাকার জন্য উপদেষ্টা ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যাতে যথাযথ সহায়তা পেতে পারেন সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এসময় মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
১২ আগস্ট ২০২৫ তারিখে আপনারা নিশ্চয় জ্ঞাত আছেন, সকাল বেলা মাইলস্টোন কলেজের সামনের দিয়াবাড়ি চত্বরে মানববন্ধন করেছে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার যে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ গুণগতমানের শিক্ষা প্রদান করে আসছে যা তাদের একাডেমিক ফলাফলের পরিসংখ্যানে ফুটে উঠবে। এখানে জোর করে কোচিং করানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রয়োজনে রিকোভারি বা বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে পাঠ সম্পন্ন করা হয়। মূলত বিমান দুর্ঘটনার দিনের হতাহত শিশুরা ছিলেন ক্লাস শেষের খেলাধুলা, গল্প আড্ডায়রত। কেউ কেউ অপেক্ষা করছিলেন অভিভাবক কখন এসে তাদের নিয়ে যাবে। বাস্তবে জোর করে আটকে রাখার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও মানববন্ধন চলাকালে মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমের বরাতে একটি চিঠির প্রসঙ্গ আসে; যাতে জোর করে অভিভাবকদের স্বাক্ষর গ্রহণ করার কথা জানানো হয়। মূলত সাংবাদিকদের মাধ্যমেই অপতথ্যমূলক এরূপ চিঠি কলেজ অধ্যক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়। বাস্তবতা হলো, চিঠিটি মাইলস্টোন সংশ্লিষ্ট নয়। উল্লেখিত চিঠি মাইলস্টোন কলেজের নির্ধারিত প্যাডে বা অধ্যক্ষের কোনো স্বাক্ষরও প্রদর্শিত হয়নি তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ এধরনের চিঠির কোনো দায় গ্রহণ করবে না।
নানা ধরনের অপতথ্য ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিয়াবাড়ি স্থায়ী ক্যাম্পাসটি নিয়েও। বাস্তবতা হলো, বিমান চলাচলের কারণে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাস কোনোরূপ ঝুঁকির মধ্যে নেই। ইতোমধ্যে বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে তাদের অভিমত জানিয়েছেন। তাছাড়া ক্যাম্পাসের প্রতিটি ভবন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্মিত।
সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে যে কোনো অনৈতিক প্রচারণা বা গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
(ঢাকাটাইমস/১৩ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন