গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন ইসরায়েলের অবরোধজনিত দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন।
তাছাড়া ১৯ জন নিহত হয়েছেন খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে। একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডাসহ ২৬টি দেশ গাজায় চলমান ‘অকল্পনীয় মাত্রার’ ভোগান্তি ও দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে এ সংকট থামাতে ও দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিংয়ে সাহায্যপ্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া কয়েকজন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
সায়্যিদ নামের এক জীবিত উদ্ধারপ্রাপ্ত বলেন, “চারপাশে গুলি চলছিল। আমরা বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে। আমাদের সামনেই মানুষ মারা যাচ্ছিল, কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারিনি।”
অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আবু নাহাল জানান, হামলার সময় তিনি পেটে ভর দিয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছিলেন—চারপাশে গুলি উড়ছিল। তিনি বলেন, “আমি শুধু আমার সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য এসেছিলাম। খাবার ও পানি থাকলে আসতাম না।” তিনি বিশ্বকে আহ্বান জানান, যুদ্ধ বন্ধ করে গাজার মানুষের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে।
সর্বশেষ এ হত্যাকাণ্ডে গাজায় সাহায্য নিতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৮৩৮ জনে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৭-এ, যার মধ্যে শতাধিক শিশু রয়েছে।
নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স নিশ্চিত করেছে যে, অপুষ্টিতে ছয় বছর বয়সী জামাল ফাদি আল-নাজ্জার এবং ৩০ বছর বয়সী উইসাম আবু মোহসেন মারা গেছেন। এর আগে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজন দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন।
ক্রমশ খারাপ হতে থাকা এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা বিশ্বের বহু দেশ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
“গাজার মানবিক দুর্ভোগ অকল্পনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে,” ইইউ ও ২৬ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে। “আমাদের চোখের সামনে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। এখনই ক্ষুধা বন্ধ ও পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। মানবিক ক্ষেত্র রক্ষা করতে হবে, এবং সাহায্য কখনো রাজনৈতিক হাতিয়ার হওয়া উচিত নয়।”
অস্ট্রেলিয়া ও জাপানও খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে “প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগ”-এর নিন্দা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমরা ইসরায়েল সরকারকে আহ্বান জানাই যাতে তারা সব আন্তর্জাতিক এনজিওর সাহায্যের চালান অনুমোদন দেয় এবং মানবিক কার্যক্রমে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর ওপর থেকে সব বাধা তুলে নেয়।”
(ঢাকাটাইমস/১৩ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন