এমপি লিটন হত্যা মামলায়ও জামায়াত-শিবিরকে দায়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ২২:১৬

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছেন তার পরিবার। লিটনের মৃত্যুর পরদিন সুন্দরগঞ্জ থানায় এই হত্যা মামলা করেন লিটনের ছোট বোন তাহমিদা বুলবুল কাকলী।

লিটন যেদিন খুন হন, সেদিন সন্ধ্যায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হকও এ হত্যার পেছনে জামায়াত-শিবির জড়িত থাকতে পারে বলেছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারদলীয় নেতারা এমনই সন্দেহ প্রকাশ করেন।

তবে জামায়াত ইতিমধ্যে একাধিক বিবৃতি দিয়ে তাদের লিটন হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

লিটন হত্যায় জামায়াতকে সন্দেহ করার কারণ হিসেবে এজাহারে বাদী বলেন, ‘আমার ভাই লিটন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব থেকেই জামায়াত-শিবিরবিরোধী ছিলেন। তাই জামায়াত-শিবিরই এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে বলে আমার সন্দেহ হয়।’

এজাহারে বলা হয়, ‘২০০১ সালে আমার ভাই লিটন জামায়াত নেতা গোলাম আযমের জনসভা ভন্ডুল করে দেয় এবং ২০১৩ সালে জামায়াতের আরেক নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর জামায়াতের লোকজন বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়িতে চারজন পুলিশকে হত্যা করে, তখন তারা আমার ভাই লিটনকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং আমার ভাইয়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে ফেলে। ২০১৪ সালে আমার বড় ভাই লিটন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরে সুন্দরগঞ্জ থানায় জামায়াতের রাজনীতি কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এসব কারণে জামায়াতের লোকজন তাহার উপর চরম প্রতিহিংসা পরায়ণ ছিল। বর্তমানে দুর্দান্ত সন্ত্রাসী ও ক্যাডার জামায়াতের লোকজন কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে সুন্দরগঞ্জে অবস্থান করছিল।’ এ ছাড়া অনেক স্বার্থান্বেষী মহল লিটনের প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।

হত্যাকা-ের বর্র্ণনায় এজাহারে বলা হয়, গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর নিজ বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে ছিলেন লিটন। তখন পাঁচজন দষ্কৃৃতিকারী দেখা করার অজুহাতে লিটনের ড্রয়িং রুমে ঢুকে কথা বলার একপর্যায়ে তার বুকের ডান পাশে দুটি, বাম হাতের তালুতে দুটি এবং পিঠের ডান পাশে একটি মোট পাঁচটি গুলি করে। এমপি লিটনের চিৎকারে পাশের রুম থেকে স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি এবং তার বড় ভাই সৈয়দ বেদারুল আহসান বেতার ছুটে আসে এবং লিটনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। তারা পাঁচজন লোককে বের হয়ে যেতে দেখেন। তখন তারা চিৎকার করলে দুর্বৃত্তরা দূর থেকে মুখ ফিরিয়ে তাদের জান শেষ করে ফেলবে বলে হুমকি দেয় এবং আরো এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ওই সময় আশপাশে আরো বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত অবস্থান করছিল বলে এজাহারে ধারণা করা হয়। হত্যাকা-ে অংশ নেওয়া এই পাঁচজন দুর্বৃত্ত দুটি মটরসাইকেল যোগে দ্রুত পলায়ন করে।

পলায়নকারীদের মধ্যে একজনের চেহারা প্রত্যক্ষদর্শীদের মনে আছে বলে উল্লেখ করা হয়। তার মুখ ফর্সা এবং গোলাকার। বয়স আনুমানিক ৩০ বছর।

এজাহারে লিটনের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি, তার ভাই সৈয়দ বেদারুল আহসান বেতার, লিটনের গাড়িচালক ফোরকান, কর্মচারী ইউসুফ আলী, বাড়ির পাশের মাঠে ক্রিকেট খেলতে আসা জুয়েল রানা ও প্রতিবেশী রেজাউল ইসলামকে এই মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আনা হয়েছে। তবে তাদের দুজনকে সাক্ষী এবং অন্যদের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহা. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা ইতোমধ্যে ৩১ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এর থেকে বেশি কিছু এই মুহূর্তে বলতে চাইছি না।’

(ঢাকাটাইমস/৫জানুয়ারি/এএ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :