গোয়ালঘরে ফেলে রাখা মায়ের পাশে রওশনসহ তিন এমপি

মনোনেশ দাস, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ মে ২০১৭, ২১:৫৬ | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০১৭, ২০:৩৯

বৃদ্ধা মাকে গোয়াল ঘরে রেখে এসেছিলেন সন্তানেরা। তার এই দুর্ভোগের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে ঘটে তোলপাড়। দুঃখ পান সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। মুক্তাগাছায় দলীয় সংসদ সদস্যকে তিনি সেই মায়ের খোঁজ নিতে পাঠান।

একই জেলার ফুলবাড়ীয়ায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিনও পাশে দাঁড়িয়েছেন সেই মায়ের। অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে তিনি তাকে এনে ভর্তি করেছেন হাসপাতালে। জানিয়েছে, এই মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন।

রবিবার ঢাকাটাইমসে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার পুটিজানা ইউনিয়নের তেজপাটুলি গ্রামে বৃদ্ধা মরিয়ন নেছার দুর্ভোগের খবর ছাপা হয়। মরিয়ন নেছার তিনজন সন্তান মুখলেছুর রহমান, মোবারক হোসেন এবং মারফত মিয়া। বড় ও মেঝো ছেলে বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। আর ছোট ছেলেন গোয়ালঘরেই একটু গোঁজার ঠাঁই হয় তার। ভিক্ষাবৃত্তি করে অর্ধাহারে-অনাহারে কোন মতে দিন পার করছিলেন তিনি। অরক্ষিত গোয়াল ঘরে শেয়ালের কামড়ে এই মায়ের চিকিৎসার উদ্যোগও নেননি তার সন্তানেরা।

‘হতভাগা সেই মায়ের আশ্রয় গোয়ালঘর’ এই শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশের পরই তার বিষয়ে জানতে পারেন স্থানীয় সংসদ সদস্যরা।

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হলে তিনি ওই বৃদ্ধার ভরণ- পোষণসহ যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তার প্রতিনিধি হিসাবে ফুলবাড়িয়ায় পাঠান জাতীয় পার্টি যুগ্ম মহাসচিব মুক্তাগাছার সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তিকে।

সোমবার মুক্তি বিষয়টি ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ফুলবাড়ীয়ায় উপজেলা প্রশাসনকে জানান। উপজেলা পরিষদে সংসদ সদস্য মুক্তি উপস্থিত হলে, সেখানকার সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন তাকে জানান, সেই বৃদ্ধার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি। পরে মুক্তি বিষয়টি রওশন এরশাদকে জানালে তিনি মুক্তিকে নির্দেশ দেন ওই বৃদ্ধার খোঁজ খবর রাখার।

সংসদ সদস্য মুক্তি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই মায়ের দুর্দশার সংবাদটি পড়ে আমাদের নেত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তার পাশে থাকতে। যদিও এলাকার সংসদ সদস্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার দায়-দায়িত্ব নিয়েছেন, তারপরও আমাদের নেত্রী বলেছেন তার বিষয়ে খোঁজ খবর রাখতে।’ ভবিষ্যতে তার যে কোনো সমস্যায় বিরোধীদলীয় নেতা রওশন ও আমি এগিয়ে আসব।

বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব নিতে যখন সংসদ সদস্যদের মধ্যে ‘প্রতিযোগিতা’ তখন এই নারীর তিন সন্তান পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মাকে অবহেলায় ফেলে রাখার ঘটনায় এলাকায় সমালোনা হলেও তারা গায়ে মাখেননি। কিন্তু সংবাদ প্রকাশ আর সংসদ সদস্যদের তৎপরতা শুরু হলে তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে যান।

স্থানীয়রা এই মায়ের পাশে দাঁড়ানোয় সংসদ সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি বৃদ্ধার তিন সন্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানিয়েছেন।

ঢাকাটাইমস/২৯মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :