ঢাকার কোলে ‘শ্যামল বাংলা’

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০১৭, ০৮:১২ | প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০১৭, ০৮:০০

যানজটের এই যন্ত্রণাময় শহরের মানুষ কম, সবাই যেন কম বেশি যন্ত্র মানব। সকালে ঘুম থেকে উঠে, কাজে যাওয়া, পথে আটকা পড়ে থাকা ঘণ্টার পর ঘন্টা। কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে আবারও যানজট, বাড়ি ফিরে খেয়েই ঘুম। মানুষের মন আকুপাকু করে এই দশা থেকে বেরিয়ে একটু প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে। কিন্তু হয়ে ওঠে না। যাওয়ার জায়গা কই?

এর একটা সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে ‘শ্যামল বাংলা’। রাজধানীবাসীকে একটু স্বস্তি দিতে শহরের কাছাকাছিই গড়ে উঠেছে এই রিসোর্ট। মোহাম্মদপুর বাসস্টান্ড থেকে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার দূরে কলাতিয়ার তারানগরে এর অবস্থান।

সেখানে যেতেই চোখে পড়বে শ্যামল বাংলার চমৎকার প্রাসাদোপম বাড়িটি। যানজটহীন এ পথে রিসোর্টেতে পৌছতে সময় লাগবে ২৫-৩০ মিনিট। নামের সাথে যথেষ্ঠ সুবিচার করেই সবুজে সবুজে ঘেরা শ্যামল বাংলার চারপাশ।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠা হয় ‘শ্যামল বাংলা’ রিসোর্টটি। ২৪৭ শতাংশ জমির উপর গড়ে ওঠা রিসোর্টটি এখন রাজধানীর বহু বিনোদন প্রেমীর পছন্দ। স্থানীয়দের জন্যও এটাই একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র।

স্থানীয় বাসিন্দা শুভ ঢাকাটাইমসকে বলেন, “আমাদের আশপাশে কোনো রিসোর্ট বা ঘুরার জায়গা নাই। হয় নবাবগঞ্জ যেতে হয়, নয় ঢাকায়। ঢাকা গেলে তো মজার চেয়ে যন্ত্রণা বেশি। তার চেয়ে এখানে রিসোর্টটা হয়ে ভালই হয়েছে। অন্তত আমাদের জন্য অনেকটা উপকার হয়েছে।”

সাতার পারলে এখানে পাবেন দুই দুটো সুইমিং পুল। স্বপরিবারে সুইমিং করতে যারা আগ্রহী তাদের জন্যও আলাদা সুইমিং পুলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আছে শিশুদের জন্য সুব্যবস্থা। অবশ্য স্বপরিবারে যারা সুইমিং পুলে নামতে চাইবেন, তাদেরকে গুণতে হবে জনপ্রতি ৩০০ টাকা। এক্ষেত্রে কমপক্ষে সাতজন হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। তবে, টাকার অংকটা কমে আসবে পুরুষদের জন্য রাখা আলাদা সুইমিং পুলে। প্রতিজন ২৫০ টাকা।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার বিষয়ে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ অবশ্য সম্পূর্ণ আপোষহীন। আর হয়তো সেজন্যই শ্যামল বাংলার গ্রাহকরা নিজেরাই এ রিসোর্টের প্রচারণা করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও একটি ওয়েবসাইট এর বাইরে তাই শ্যামল বাংলার আর কোনো প্রচারণা চোখে পড়েনি।

রয়েছে দেশীয় খাবারের সুব্যবস্থা। ভাত, মাছ, ডাল, ভূনা খিচুরির পাশাপাশি খাবার মেন্যুতে রয়েছে বারবিকিউ খাবারের স্বাদ। দাম রাখা হয়েছে নাগালের মধ্যে। কয়েক রকম ভর্তা, ভাত, চিকেনকারি, ডাল ও কোমল পানীয়সহ প্যাকেজ রাখা হয়েছে ২২০ টাকা। এছাড়া ভূনা খিচুড়ি পাওয়া যাচ্ছে ১৮০ টাকায়। চিকেন বারবিকিউ ১০০ টাকা।

তবে, খাবারের মান নিয়ে কিছুটা আপত্তি আছে ইতিমধ্যে রিসোর্ট ভ্রমণকারীদের। মোহাম্মাদপুর নূরজাহান রোডের বাসিন্দা আবিদা খান ঊর্মি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এদের সবদিক ঠিক আছে, শুধু খাবারের মান ছাড়া। খাবারের মানের তুলনায় দাম বেশি। খাবার খেয়ে আমার মনে হয়, এরা রাস্তার দোকান থেকে ১০০ টাকার বিরিয়ানি এনে ২৫০ টাকায় বিক্রি করে।’

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামল বাংলা রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল গনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দেশে অনেক রিসোর্ট আছে। সবারই যে সবদিক ঠিক থাকবে তেমনটি না। আমাদের খাবারের বিষয়ে অনেকেরই কিছু অভিযোগ ছিল। আমরা অভিযোগগুলোকে পরামর্শ হিসেবে নিয়েছি।’

ঈদকে সামনে রেখে কিছুটা নতুনত্ব যোগ হচ্ছে রিসোর্টটিতে। বিনোদনে যুক্ত হচ্ছে নতুন মাত্রা। শিশুদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে শিশুপার্ক। ট্রেন, হানিসুইং, সাম্পান নৌকা যোগ হয়েছে। প্রতিটি রাইডের মূল্য ধরা হয়েছে ৪০ টাকা। রিসোর্টের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা, সাথে ফ্রি থাকবে একটি রাইড।

সপ্তাহের প্রতি সোমবার বন্ধ থাকে শ্যামল বাংলা। কিন্তু সোমবার যদি সরকারি ছুটির দিন বা কোনো বিশেষ দিন হয়, সেক্ষেত্রে খোলা থাকে শ্যামল বাংলার দরজা।

ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/কারই/কেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :