এমবি নাসরিন-১ লঞ্চডুবিতে ক্ষতিপূরণের রায় বহাল
১৪ বছর আগে চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনায় এমবি নাসরিন-১ লঞ্চডুবির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ১৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বিষয়ে বিচারিক আদালতে রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় ঘোষণা করলেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট রাফসান আলভী ও ইশরাত হাসান। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, কামরুল হক সিদ্দিকী ও সুব্রত চৌধুরী।
২০০৩ সালের ৮ জুলাই চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় এমবি নাসরিন-১ লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। এতে ১১০ জন নিহত হন, নিখোঁজ হন ১৯৯ জন। ওই নৌদুর্ঘটনায় লঞ্চটির মালিক এবং মাস্টারও নিহত হন।
আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ জনের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা অনুযায়ী নৌ-দূর্যোগ ট্রাস্টি বোর্ড নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়। যার পরিমাণ ৭০ লাখ টাকার উপরে।
নিহত ব্যক্তিদের দেয়া ক্ষতিপূরণ অপ্রতুল দাবি করে ২০০৪ সালে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে নিহত ১২১ জনের পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট)। মামলায় ২৮ কোটি ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। মামলায় নৌ-সচিব, সমুদ্র পরিবহন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউ টি এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনসহ ২১ জনকে বিবাদী করা হয়। ২০১২ সালে সেই মামলা বদলি হয়ে ঢাকার ৭ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। পরে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৭ম যুগ্ম জেলা জজ আদালত সাক্ষী জেরার সময় বিবাদীদের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় একতরফা শুনানি শেষে রায় দেন। রায়ে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের দিতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেয় আদালত। পরবর্তী সময়ে বিবাদীরা জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ দেয়ার জন্য আদালতে মামলাটি পুনুরুজ্জীবিত করার আবেদন জানান। আদালত পুনুরুজ্জীবিত করার আবেদন নামঞ্জুর করেন। নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএসহ বিবাদীরা ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন দায়ের করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় কেন বাতিল ও রদ করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করলো হাইকোর্ট।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
(ঢাকাটাইমস/০৫জুন/এমএবি/জেবি)