চাঁদপুরে বড় দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা

শওকত আলী, চাঁদপুর
| আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:৫৯ | প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:২১

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শুরু হয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানা তৎপরতা। উভয় দলের নেতারা ঘন ঘন এলাকায় অবস্থান করছেন, সাংগঠনিক ও সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।

গত রমজান থেকে তাদের এই তৎপরতার ব্যাপকতা বাড়ে। এরপর থেকে নির্বাচনের আলোচনাও সামনে আসতে থাকে।

গত রমজানে দুই দলের অনেক সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকটা প্রতিযোগিতা করে ইফতার মাহফিল, ঈদের আগে জাকাত, নেতাকর্মী ও সুধীজনদের নানা উপহার দিয়েছেন। এসব তৎপরতা দুই দলের ভেতরকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিরোধ ছাপিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে কিছুটা চাঙ্গাভাব সৃষ্টি করে।

চাঁদপুরের পাঁচটি অর্থাৎ সব কটি আসনে বর্তমানে আওয়ামী লীগের দখলে। গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় পাঁচটি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সাংসদরা। তবে আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে তা বুঝা যাচ্ছে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা দেখে। এ ক্ষেত্রে আ.লীগের প্রার্থীরা প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে এসব প্রার্থীর অনেকেই নির্বাচনীয় এলাকায় বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ, মতবিনিময়সহ সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পাশাপাশি দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।

চাঁদপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রায় প্রতি সপ্তাহে এলাকায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছেন। এ আসনে অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ হোসেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. এসএম সহিদুল ইসলাম এবং বিএনপির সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল মিলন, মালয়েশিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন ও সাবেক এমপি রফিকুল ইসলাম রনির সহধর্মিণী শামিমা আক্তার রনির নাম শুনা যাচ্ছে।

চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, সাবেক এমপি বিমান বাহিনীর প্রধান রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা নুরুল আমিন রুহুলের নাম শুনা যাচ্ছে। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. জালাল উদ্দিন ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এমএ শুক্কুর পাটওয়ারীর নাম শুনা যাচ্ছে।

চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বর্তমান জেলা আ.লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এস এ সুলতান টিটু ও সাবেক এমপি জিএম ফজলুল হকের নাম শোনা যাচ্ছে। চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনে আ.লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ও জেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি ড. মো. শামছুল হক ভূইয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক জেলা সভাপিত অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান, বিএমএ চাঁদপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি ডাঃ হারুনুর রশিদ সাগর এবং বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় নেতা লায়ন হারুনুর রশিদ, শিল্পপতি এম এ হান্নান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতাহার হোসেন পাটওয়ারীর নাম শুনা যাচ্ছে।

চাঁদপুর-৫ আসনে (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আ.লীগের প্রার্থী হিসেবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বর্তমান সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ অ্যাড. নুরজাহান বেগম মুক্তা, পাওয়ার সেলের ডিজি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক সাংসদ এম এ মতিন ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এ হালিম টিটুর নাম শুনা যাচ্ছে।

প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় বড় দুটি দলেই গ্রুপিং, কোন্দল রয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় দ্বন্দ্ব গ্রুপিং অনেকটা প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ এসব দ্বন্দ্বকে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। অবশ্য কিছুদিন আগে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির এমএ মতিন ও ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের মীমাংসা হয়ে হাতে হাত মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

দিন যতই যাচ্ছে চাঁদপুরে ৫টি নির্বাচনী এলাকায় অনেকটা অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে একটি চেহলাম অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মতলব উত্তরে বিএনপি নেতা আতাউর রহমান ঢালীর গাড়িবহরে। কচুয়ায় এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী গোলাম হোসেন এক আত্মীয়ের চেহলাম অনুষ্ঠান শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে তার গাড়িবহরে হামলা হয়। চাঁদপুর জেলা সদরে দ্বন্দ্ব গ্রুপিংয়ের কারণে শহর আওয়ামী লীগের সভা পণ্ড হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

রমজানের ৩-৪ দিন আগে কেন্দ্রীয় বিএনপি কার্যালয়ে জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে হাতহাতির ঘটনাও ঘটেছে। ঐকমত্যে পৌঁছতে না পারায় গত ২০ মে চাঁদপুর জেলা বিএনপির বর্ধিত সভা স্থগিত করতে হয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে বড় দুটি দলের নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙ্গাভাব দেখা দিলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে ক্রমশ ঘোলাটে ও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে, তা সাম্প্রতিককালের নানা তৎপরতায় প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে এভাবে চলতে থাকলে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/৩সেপ্টেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

বাংলাদেশে একদিন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবেই, তখন আ. লীগ থাকবে না: আমিনুল হক

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আ.লীগে বাড়ছে দ্বন্দ্ব

সরকারের এমপিরা ঘোষণা দিয়ে লুটপাট শুরু করেছে: এবি পার্টি

বদরের চেতনায় লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান ছাত্রশিবির সভাপতির

আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ফখরুলের

বিএনপির ভারত বিরোধিতা মানুষের কষ্ট বাড়ানোর নতুন সংস্করণ: নাছিম

ভোট ডাকাত সরকারকে সমর্থনকারী দেশের পণ্য বর্জন ন্যায়সঙ্গত: রিজভী

১১ মামলায় আগাম জামিন পেলেন বিএনপি নেতা বকুল

বর্তমান সরকার ভারতের অনুগ্রহে ক্ষমতায় বসে আছে: সাকি

জিয়াউর রহমান উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করে: ওবায়দুল কাদের

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :