গ্যাটকো মামলায় খালেদাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ১৮ অক্টোবর ধার্য করেছে আদালত। একই সঙ্গে ওইদিন কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন আদালত।
বকশিবাজারের ওই অস্থায়ী আদালতে বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার এ আদেশ দেন।
এর আগে এদিন মামলাটির ২ আসামির পক্ষে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় তাদের পক্ষে আইনজীবীরা সময় আবেদন করেন।
অন্যদিকে দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল অন্য মামলায় কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে পরবর্তী ধার্য তারিখে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যুর আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক চার্জগঠনের শুনানি আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দেন এবং ওইদিন খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যুর আদেশ দেন।
মামলাটিতে ২০১৬ সালের ৫ মার্চ একই আদালতে খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৫ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট খালেদা জিয়া দুটি রিট খারিজ করে ২ মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। কিন্তু আসামি তানভির, গালিব, শাহাদত ও সানোয়ারের পক্ষে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় মামলায় চার্জ শুনানির করতে পারছে না আদালত।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার বাদি হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটিতে ২০০৮ সালের ১৩ মে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা চার্জশিট দাখিল করেন।
জরুরি বিধিমালা সংযুক্ত ওই মামলার চার্জশিটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রীট আবেদনগুলি করে মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়া। রীট আবেদনের কারণে প্রায় ৮ বছর নি¤œ আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
মামলার ২৪ আসামির মধ্যে ৬ আসামি মারা গেছেন। এরা হলেন, সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, এমকে আনোয়ার, জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও বিএনপির চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকা।
অপর আসামিরা হলেন, বিএনপি দলীয় সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (অব.) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গে¬াবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এএসএম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এএম সানোয়ার হোসেন, ও বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।
চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে সরকারের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া গ্যাটকোকে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে অবৈধভাবে আরাফাত রহমান কোকো ও ইসমাইল হোসেন সায়মন ২ কোটি ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৬ টাকার আর্থিক সুবিধা নেন।
ঢাকাটাইমস/০৬সেপ্টেম্বর/আরজেড/ডিএম