এরশাদের দুঃসময়ে ‘পাশে নেই’ হাওলাদার

রেজা করিম
  প্রকাশিত : ২৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৩২
অ- অ+
ফাইল ছবি: একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ ও হাওলাদার

‘রুহুল (এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার) আমাকে বাবা ডাকে। সে আমার সন্তানতুল্য। সে কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না।’ জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের এ বক্তব্য এখনো দলের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ফেরে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে চরম দুঃসময়ে আজ পুত্রতুল্য সেই হাওলাদারকেই পাশে পাচ্ছেন না এরশাদ।

এরশাদ যখন দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন, সে সময়ে তার খবরটা পর্যন্ত আর নিচ্ছেন না হাওলাদার। এ নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের নেতাকর্মীরা।

২০০২ সালে জাতীয় পার্টির মহাসচিব হন হাওলাদার। ২০১৪ সালের এপ্রিলে আকস্মিক নিজ ক্ষমতাবলে তাকে পদচ্যুত করেন এরশাদ। তবে ২০১৬ তে আবার মহাসচিব হন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর তাকে বিশেষ সাংগঠনিকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তবে দুই-একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ছাড়া গত দুই মাসে দলের কার্যক্রমে আগের মতো পাওয়া যাচ্ছে না হাওলাদারকে। নির্বাচনী প্রচারণায় একেবারেই নীরব ছিলেন তিনি।

ভোটের আগে সিঙ্গাপুর থেকে এরশাদ দেশে ফিরে এলেও সেভাবে আর সক্রিয় হতে দেখা যায়নি হাওলাদারকে। গত ২০ জানুয়ারি এরশাদ আবার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার দিন বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতেও যাননি। সেদিন তিনি কোথায় ছিলেন, সে বিষয়েও জানেন না নেতাকর্মীরা।

দলের কার্যালয়ে এবং কার্যালয়ের বাইরে এরশাদের সুস্থতা কামনায় দোয়ার অনুষ্ঠানেও যাননি অভিমানী হাওলাদার। সিঙ্গাপুরে এরশাদ কেমন আছেন, সে বিষয়েও আর তার আগ্রহ নেই বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীরা বলছেন, এরশাদের দুঃসময়ে হাওলাদারের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে। তিনি যে স্বার্থের জন্যই এরশাদের সঙ্গে থেকেছেন, তাকে ‘বাবা’ বলে ডেকেছেন, তা এখন স্পষ্ট। মহাসচিবের পদ হারানোর পর থেকেই তিনি এরশাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় এক নেতা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হাওলাদার ধরেই নিয়েছেন যে, এরশাদ সাহেব আর ফিরে আসবেন না। তাকে দিয়ে ফায়দা লোটার আর কিছু নেই। যে কারণে এরশাদের বিষয়ে হাওলাদারের আর কোনো আগ্রহ নেই। এরশাদের অবস্থা ভালো থাকলে হাওলাদার এখন সিঙ্গাপুরে থাকতেন।’

এ বিষয়ে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে ফোন করা হলে তিনি কথা বলতে চাননি। তার ব্যক্তিগত সহকারী বলেন, ‘স্যারের (হাওলাদার) শরীরটা খারাপ যাচ্ছে। তিনি এ মুহূর্তে বিশ্রামে আছেন। তাই কথা বলতে চাচ্ছেন না।’

‘স্যার (হাওলাদার) ১৫ জানুয়ারি ওমরাহ করতে দেশ ছেড়েছিলেন। ওমরাহ শেষে ২৩ জানুয়ারি দেশে ফিরে এসেছেন। সেখানে মদিনায় তার ঠান্ডা লেগেছে। এরপর থেকেই তার শরীরটা খারাপ যাচ্ছে।’

এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের রাজনৈতিক জীবনের শুরু বিএনপির মাধ্যমে। ১৯৮১ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তিনি। দলটি থেকে এমপি-মন্ত্রীও হয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পটুয়াখালী-১ থেকে এবারও প্রার্থী হয়েছিলেন হাওলাদার। তবে ঋণখেলাপি হিসেবে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির আন্দোলনের মুখে পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহার
বাংলামোটরে এনসিপির জুলাই চিত্র প্রদর্শনীর গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
তাড়াশে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়ার অভিযোগ
সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা