৭ বছর পর পরিবারে ফিরলেন খাদিজা

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
  প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট ২০১৯, ১৬:২২
অ- অ+

প্রতিবেশী এক ভাইয়ের মাধ্যমে ২০১২ সালে ভারতে পাচার হয়েছিলেন কিশোরী খাদিজা খাতুন। তখন তার বয়স ছিল ১২ বছর। এখন ১৯। মাঝে কেটে গেছে সাত বছর। এই দীর্ঘ সময় পর তরুণী খাদিজা তার পরিবারকে ফিরে পেয়েছেন। শনিবার খাদিজা যখন তার বাবা-মায়ের দেখা পান তখন আবেগে অঝোরে কাঁদেন।

খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির। মা আনোয়ারা বেগম। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ। তবে দীর্ঘদিন ধরে তারা ঢাকার গুলশান-২ এর নূরেরচালা এলাকায় বসবাস করেন। সেখান থেকেই নিখোঁজ হয়েছিলেন তাদের মেয়ে খাদিজা। এতদিন পর মেয়েকে ফিরে পাওয়াটা তাদের কাছে স্বপ্নের মতোই।

ভারতে পাচার হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছর মালদহে সরকারি এক সেফহোমে ছিলেন খাদিজা। গত বছরের ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। ফিরে এসে রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা ‘অ্য্যাাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) শেল্টার হোমে আশ্রয় নেন তিনি। এক বছর চার মাস এখানেই থাকেন। শনিবার এসিডির মাধ্যমেই মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খাদিজা খাতুন।

এ সময় খাদিজা বলেন, ‘দীর্ঘ সাত বছর পর মায়ের মুখ দেখতে পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। কোনোদিন ভাবতেও পারিনি বাবা-মাকে ফিরে পাব। পরিবারকে ফিরে পেয়ে এত খুশি হয়েছি যা কাউকেই বুঝাতে পারবো না। আমি এসিডির প্রতি চির কৃতজ্ঞ। পরিবারকে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করায় তাদের প্রতি ঋণ আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবো না।’

খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির বলছিলেন, ২০১২ সালে খাদিজা যখন নিখোঁজ হয় তখন সে মাদ্রাসায় পড়ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি পাশের বাসার ধনাঢ্য এক ব্যক্তির সন্তানকে দেখাশোনার কাজ করতো। একদিন ওই বাড়িতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে তারা জানতে পারেন, প্রতিবেশী এক ভাইয়ের মাধ্যমে খাদিজা ভারতে পাচার হয়ে গেছে। তারপর থেকে তারা মেয়েকে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।

খাদিজার মা আনোয়ারা বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে এসিডির মাধ্যমে হঠাৎ মেয়ের খোঁজ পাই। তখন থেকেই মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা কই। বুঝতে পারি, এই আমার খাদিজা। অবশেষে গুলশান থেকে মেয়েকে নিতে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হই। এখানে মেয়েকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।

এসিডির শেল্টার হোমের ব্যবস্থাপক পুষ্প রাণী বিশ্বাস বলেন, গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার মাধ্যমে খাদিজা আমাদের শেল্টার হোমে আসে। তারপর থেকে সে শেল্টার হোমেই লালন-পালন হচ্ছিল। এখানে আসার পর থেকেই খাদিজা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চেয়েছিল। আমরা তার পরিবারের খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমরা পরিবারের খোঁজ পাই। তারপর তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলো। মেয়েটি বাবা-মায়ের কাছে ফেরত যেতে পারছে দেখে আমাদেরও ভীষণ ভালো লাগছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/আরআর/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জামায়াত-শিবিবের হামলায় গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতার পাশে তারেক রহমান
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ যুবক ঢামেকে ভর্তি, অবস্থা আশঙ্কাজনক
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩২১
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা