সাক্ষীকে ভয় দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:০৮
অ- অ+

ইউক্রেন কাণ্ড নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ইমপিচমেন্ট তদন্তের প্রকাশ্যে শুনানি চলছে। এমন অবস্থার মধ্যে সেই সময়ে ইউক্রেনে দায়িত্ব পালন করা মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি ইয়োভানোভিচকে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তবে ট্রাম্প দাবি করেছেন তিনি কাউকে ভয় দেখাননি।

মেরির সাক্ষ্য গ্রহণের আগে এক টুইটবার্তায় মারিকে সরাসরি উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, শুক্রবার একটি টুইটে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, ‘মেরি ইয়োভানোভিচ সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছেন। তিনি সোমালিয়া থেকে শুরু করেন, কিভাবে সেটাকে যেতে দেয়া হলো? পরে তাকে ইউক্রেন পাঠানো হলে যেখানে দ্বিতীয় দফার ফোনালাপে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট আমাকে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা মার্কিন প্রেসিডেন্টের রয়েছে’।

এরপরই সাক্ষ্য দেয়ার সময় মেরি জানান, প্রেসিডেন্টের হুমকির মুখে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন তিনি। তবে সেই পোস্টের পক্ষে সাফাই গেয়ে ট্রাম্প বলেন, তার লেখায় এমন কিছুই ছিল না, যা দেখে মনে হতে পারে যে তিনি মারিকে ভয় দেখাচ্ছেন।

আগামী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের অন্যতম প্রার্থী জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার সম্পর্কে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনে যে কথোপকথন হয়েছিল, তা আদৌ ইমপিচমেন্ট যোগ্য অপরাধ কি না, তা নিয়ে গত বুধবার থেকে হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে প্রকাশ্যে শুনানি শুরু হয়েছে। এই শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।

ইতিমধ্যেই সেখানে সাক্ষ্য দিয়েছেন ইউক্রেনে বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম টেলর এবং ইউরোপীয় ও ইউরেশীয় সংক্রান্ত মার্কিন পররাষ্ট্র-সহকারী সচিব জর্জ কেন্ট। মেরি হলেন তৃতীয় সাক্ষী।

তার সাক্ষ্যগ্রহণের পরেই হোয়াইট হাউস থেকে একটি বিবৃতিতে দাবি করা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে কোনো ভুল কাজ করেননি, তা মেরির বয়ানের ভিত্তিতে স্পষ্ট। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব স্টেফানি গ্রিসহ্যাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে ত্রাণ বন্ধ করা নিয়ে কোনো তথ্য তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মেরির কাছে ছিল না। এখন ইমপিচমেন্ট নিয়ে শুনানি আরও এগিয়ে নিয়ে চলা, সময়ের অপচয় বলেও দাবি করেছে হোয়াইট হাউস।

ট্রাম্পকে কি ইমপিচমেন্ট করা সম্ভব?

ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকে ইমপিচমেন্ট করার যে তদন্ত শুরু করেছেন সেটি কি আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব? এর মাধ্যমে কি ট্রাম্পকে আসলে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরের আগে জানতে হবে যে এই প্রক্রিয়া কীভাবে কাজ করে।

ইমপিচমেন্ট মানে হচ্ছে কোন সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে পার্লামেন্টে অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত করা। একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করার কথা মার্কিন সংবিধানে আছে, তবে কাজটা সহজ নয়।

প্রথমত: মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অপরাধ বা অসদাচরণের অভিযোগ আনতে হবে, তার পর উচ্চকক্ষ সেনেটে এক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। এটা বেশ কঠিন এবং বিরল একটি প্রক্রিয়া।

কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে শুনানীর পর ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব পাস হতে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই যথেষ্ট, প্রস্তাবের পক্ষে পড়তে হবে মোট ২১৮টি ভোট।

কিন্তু ১০০ সদস্যের সিনেটে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা এবং তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে হলে লাগবে দু-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, অর্থাৎ অন্তত ৬৭ জন সিনেটরের সমর্থন। এটা হবার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। কারণ বর্তমান সিনেটে ট্রাম্প সমর্থক রিপাবলিকান সিনেটার আছেন ৪৭ জন। ফলে ইমপিচমেন্টের পক্ষে সেনেটে ৬৭ ভোট পেতে হলে ট্রাম্পের দলের ১৪ জনেরও বেশি সিনেটরকে পাশে পেতে হবে ডেমোক্র্যাটদের। যা অনেকটা অসম্ভব।

অতীতে কী হয়েছে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মাত্র দু'বার দু'জন প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হয়েছেন। এ্যান্ড্রু জনসন ১৮৬৮ সালে, এবং বিল ক্লিনটন ১৯৯৮ সালে। তবে তাদের পদ ছাড়তে হয় নি। সেনেটের বিচার প্রক্রিয়ায় দু'জনেই খালাস পান। তবে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ওয়াটারগেট কেলেংকারির কারণে ইমপিচ হবার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন।

ঢাকা টাইমস/১৭নভেম্বর/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পল্লীবন্ধু এরশাদ চিরকাল মানুষের হৃদয়ে কণক প্রদীপ হয়ে জ্বলবেন
চাঁদা না দেওয়ায় পল্লবীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ: গ্রেপ্তার ৩
ছন্দে ফিরলেন লিটন, সমতায় ফিরল টাইগাররা
১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৭ কোটি মার্কিন ডলার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা