রাজশাহীতে রাস্তা প্রশস্ত করেও মিলছে না সুফল

রিমন রহমান, রাজশাহী
  প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:২৪| আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৬
অ- অ+

রাজশাহী মহানগরীর কোর্ট স্টেশন থেকে হড়গ্রাম বাজার পর্যন্ত রাস্তাটিতে সারাক্ষণই যানবাহনের চাপ। তাই রাস্তাটির সম্প্রসারণ করা হয়। তিন মাস আগে কাজও শেষ হয়েছে। মাঝে ডিভাইডার দিয়ে রাস্তাটির লেনও আলাদা করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের একটি ট্রান্সফরমার না সরানোর কারণে এর সুফল মিলছে না।

বিদ্যুতের এই ট্রান্সফরমারটি কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন রেলক্রসিংয়ের পাশেই। ট্রান্সফরমারের সঙ্গে বিদ্যুতের তার সরিয়ে না নেয়ার কারণে রাস্তার পশ্চিম পাশে রেলক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার হাউজ বসাতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কারণ, এখন ব্যারিয়ার হাউজ বসিয়ে ব্যারিয়ার পাইপ ওপরে তুললেই তা বিদ্যুতের তারে গিয়ে ঠেকবে। এতে ঘটবে দুর্ঘটনা। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে রাস্তার একপাশে সব সময়ের জন্য ব্যারিয়ার পাইপ ফেলে রাখা হয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে রাস্তার এক লেনের চলাচল।

স্থানীয়রা বলছেন, দুটি বিদ্যুতের খুঁটির ওপর থাকা ট্রান্সফরমারটি বর্তমান স্থান থেকে সরিয়ে একটু পেছনে স্থাপনের জন্য তারা বারবার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু সরানো হয়নি। আর বিদ্যুৎ বিভাগ এবং রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টা তারা জানেনই না। তবে এখন তারা খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পূর্ব দিকের লেন খোলা। কিন্তু রেলক্রসিংয়ে পশ্চিম দিকের লেন বন্ধ করে রাখা হয়েছে পাইপ ফেলে। বন্ধ লেন দিয়ে কোর্ট স্টেশনের দিকে আসা গাড়িগুলোকে রাস্তার ওপর পাইপ পড়ে থাকতে দেখে হঠাৎ থামতে হচ্ছে। তারপর উল্টো লেন হয়ে রেলক্রসিং পার হতে হচ্ছে। এতে রেললাইনের ওপর যানবাহনের জটলা বেঁধেই থাকছে।

রেললাইনের পাশেই পাওয়া গেল রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান মো. ভোলাকে। তিনি জানালেন, আগে রাস্তাটির প্রস্থ ছিল ৫০ ফুট। তখন রেলক্রসিংয়ের দুটি ব্যারিয়ারের দৈর্ঘ্য ছিল ৭০ ফুট। ট্রেন পারাপারের সময় ব্যারিয়ার পাইপ ফেললে পুরো রাস্তাটিই বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু প্রায় তিন মাস আগে রাস্তাটি প্রশস্ত করা হয়েছে। এখন এর প্রস্থ ১০৭ ফুট। এই রাস্তার জন্য এখন রাস্তার পশ্চিমাংশে নতুন ব্যারিয়ার হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু পাইপ বসানো যাচ্ছে না। পাইপ বসালেও তা ওপরের বিদ্যুতের তারে গিয়ে ঠেকবে।

এদিকে আগের দুটি ব্যারিয়ার পাইপ দিয়ে পুরো রাস্তা বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, একটি ব্যারিয়ার হাউজ পড়েছে রাস্তার মাঝে। তাই ট্রেন আসার সময় ব্যারিয়ার পাইপ ফেলা হলেও এক লেন সব সময় খোলাই থাকতো। এতে ট্রেন এলেও রিকশা-অটোরিকশা ঢুকে যাচ্ছিল। তাই পশ্চিমের লেনে পাইপ ফেলে তিন মাস ধরেই বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এই পাইপ অতিক্রম করেও পথচারিরা ট্রেন আসার সময় সড়ক পার হতে যান। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ভোলা বলেন, এখন রেলক্রসিংয়ে রাস্তার অর্ধেক অংশে যে ব্যারিয়ার পাইপ আছে তা দিয়ে পুরো রাস্তা বন্ধ করা যায় না। ফলে পাইপ ফেললেও অটোরিকশা-রিকশা পা হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আজও ট্রেন আসার সময় একটা অটোরিকশা ঢুকে রেললাইনের ওপর থেমে গিয়েছিল। পরে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে রেললাইন পার করলাম। তা না হলে সকালেই একটা দুর্ঘটনা এখানে ঘটে যেত।

রেলক্রসিংয়ের পূর্ব পাশেই কোর্ট স্টেশন। গেটম্যান ভোলার সঙ্গে কথা বলার সময়ই রাজশাহীমুখি একটা কমিউটার ট্রেন এসে থামলো স্টেশনে। কিন্তু ট্রেনের পেছনের বগিটার অর্ধেক অংশ রাস্তার ওপরেই থেকে গেল। ফলে চলাচলের পথ আরও সংকীর্ণ হলো। বাড়লো যানজট। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্তই এ অবস্থা থাকলো। ভোলা বললেন, এমন অবস্থা প্রায়ই ঘটে। ট্রান্সফরমারটি সরিয়ে ব্যারিয়ার বসানোর পর পশ্চিমের লেনটি খুলে না দেয়া গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি পাওয়ার সাপ্লাই লিমিটেডের (নেসকো) পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল-১ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের কারণে এমন সমস্যা হলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিতে পারে। তাহলে আমরা সার্ভে করতে পারব। এরপর রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতিস্থাপন ব্যয় প্রদান করলে আমরা ট্রান্সফরমার সরিয়ে নিতে পারব।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই। রেলের যে বিভাগ এটা দেখাশোনা করে তারা হয়তো বলতে পারবে।

(ঢাকাটাইমস/২০নভেম্বর/আরআর/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাবনায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ: মোটরসাইকেল ও অফিস ভাঙচুর, হাসপাতালে ভর্তি ৫
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা