টিএসসিতে আ.লীগের ফেস্টুন ছিড়ল ছাত্র ইউনিয়ন

আওয়ামী লীগের মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে লাগানো ফেস্টুন খুলে ফেলেছে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা। বিষয়টিকে ছাত্র ইউনিয়নের ‘বাজে কাজ’ ও বঙ্গবন্ধুর অবমাননা হিসেবে দেখছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ বিষয়টিকে হামলা আখ্যা দিয়েছেন৷ আর ঘটনায় জড়িতরা বলছেন, এটি হামলা বা ফেস্টুন ছেড়া নয়, রাজু ভাস্কর্যের সম্মানার্থে সেগুলো খুলে ফেলা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটা নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) এ ঘটনা ঘটে। দলীয় ফেস্টুন খুলে ফেলায় ক্ষুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ পন্থিরা৷
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি বাংলা কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি শুভ্র মাহামুদ জ্যোতি ঢাকাটাইমসকে জানান, সাংগঠনিক অনুষ্ঠান শেষে টিএসসিতে এসে বসার কিছুক্ষণ পর তিনি দেখতে পান ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল এসে রাজু ভাস্কর্যের আশপাশে যে ফেস্টুন লাগানো ছিল সেগুলো ছিড়তে শুরু করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই দলটি সেখানকার ব্যানার-ফেস্টুন এলোপাতাড়ি লাথি দিয়ে এবং টেনে ছিড়ে ফেলে। ছেড়া ব্যানার ফেস্টুন মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়ানো হয় বলেও তিনি জানান৷
এতে বঙ্গবন্ধু ছবির অবমাননা হয়েছে উল্লেখ করে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান জ্যোতি। তিনি বলেন, 'তারা যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন অবশ্যই ন্যাক্কারজনক এবং আমরা তার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। কারণ তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি মাটিতে ফেলেছে, লাথি মেরেছে৷ এ দেশে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের লোক থাকতেই পারে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নয়। তিনি যে কোনো দল, রাজনীতি এবং মতাদর্শের ঊর্ধ্বে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। আমরা বিশ্বাস করি, যারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, তাদের মধ্যে দেশ প্রেম এবং মনুষত্ব কোনোটিই নেই। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত, এর উস্কানিদাতাসহ সকলের শাস্তি দাবি করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'সে সময় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী টিএসসিতে ছিল না। তারা সেই সুযোগে এই ঘটনা ঘটিয়েছে৷ আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করেছি৷ তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।'
অন্যদিকে ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা অনিকের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তারা একটি মশাল মিছিলের আয়োজন করেন৷ মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য এলাকায় এলে তারা দেখতে পান, ভাস্কর্যের চারপাশ রাজনৈতিক ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে৷ ফলে তারা ফেস্টুনগুলো খুলতে শুরু করেন।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত ফাহাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, রাজু ভাস্কর্যের ঐতিহ্য এবং মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে তারা পোস্টারগুলো খুলে ফেলেছেন।
ফাহাদ বলেন, 'রাজু ভাস্কর্য একটা আবেগের জায়গা। এটা ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজু ভাস্কর্যকে রাজনৈতিক ফেস্টুন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। তাই আমরা ফেস্টুনগুলো খুলে ফেলেছি। আমাদের কাছে সেগুলো খোলার কোনো সরঞ্জাম ছিল না। তাই খুলতে গিয়ে কিছু ফেস্টুন ছিড়ে গেছে।'
ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/কারই/ইএস

মন্তব্য করুন