রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজ ভারতের

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:২৩

সিরিজ জিততে দরকার ছিল ৩১৬ রান। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা সত্ত্বেও ৮ বল বাকি থাকতে রোমাঞ্চকর জয় পেল ভারত (৪৮.৪ ওভারে ৩১৬-৬)। জয় এল চার উইকেটে। কটকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজের তৃতীয় একদিনের ম্যাচে হারিয়ে সিরিজও দখল করল টিম ইন্ডিয়া (২-১)।

দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মার হাফ-সেঞ্চুরি ভিত গড়ে দিয়েছিল রান তাড়ার। দু’জনে প্রথম উইকেটে তুলেছিলেন ১২২ রান। বিশাখাপত্তনমে আগের ওয়ানডে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন রোহিত।

রবিবার ৬৩ বলে ৬৩ করে জেসন হোল্ডারের বলে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন তিনি। মেরেছিলেন আটটি চার ও একটি ছয়। বড় রানের সুযোগ হারালেন দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচের আর এক শতরানকারী রাহুলও। তিনি আলজারি জোসেফের বলে ফিরেছিলেন ৭৭ করে। তাঁর ক্যাচও ধরেছিলেন উইকেটকিপার হোপ। ৮৯ বলের ইনিংসে আটটি চার ও একটি ছয় মেরেছিলেন তিনি। ২৯.৫ ওভারে ১৬৭ রানে পড়েছিল দ্বিতীয় উইকেট।

এর পর খুব দ্রুত পড়তে থাকল উইকেট। তৃতীয় উইকেট পড়েছিল দলীয় ১৮৮ রানে। কিমো পলের বলে ৭ রানে ফিরেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। বেশিক্ষণ থাকলেন না রিশাব পান্তও (৭)। ভারতের চতুর্থ উইকেট পড়েছিল ২০১ রানে। কেদার যাদব (৯) বোল্ড হয়েছিলেন শেলডন কটরেলের ডেলিভারিতে। তখন দলের রান ২২৮।

এই অবস্থায় ভরসা হয়ে উঠেছিলেন সেই বিরাট কোহলি। ভারতীয় অধিনায়ক ৫১ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে টানছিলেন দলকে। কিন্তু ৮৫ রানে কিমো পলের বল মারতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ৮১ বলের ইনিংসে নয়টি বাউন্ডারি মারেন তিনি। ২৮৬ রানে পড়েছিল ষষ্ঠ উইকেট। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা (৩১ বলে ৩৯) ও শার্দুল ঠাকুর (৬ বলে ১৭) ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন। কোহলি আউট হওয়ার পর অবশ্য দেখা দিয়েছিল সংশয়। টেলএন্ডারদের নিয়ে জয় আনতে পারবেন তো জাদেজা? কিন্তু শার্দুলের ধুমধাড়াক্কা সহজ করে তুলে জাদেজার কাজ।

এর মধ্যেই কটকে ব্যক্তিগত মাইলস্টোনের গড়লেন রোহিত। শ্রীলঙ্কার ওপেনার সনৎ জয়াসুরিয়ার রেকর্ড ভাঙলেন ‘হিটম্যান’। ১৯৯৭ সালে ওপেনার হিসেবে সব ধরনের ক্রিকেটে জয়াসুরিয়া করেছিলেন ২ হাজার ৩৮৭ রান। চলতি বছরে রোহিতের সংগ্রহ ছিল ২,৩৭৯ রান। মাত্র ৮ রান পিছনে ছিলেন তিনি।

রবিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ধীরেসুস্থে হয়েছিল। প্রথম ২৫ ওভারে দুই উইকেটে ৯৪ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর। ৩০ ওভারে তিন উইকেটে উঠেছিল ১৩৭ রান। সেখান থেকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা পাঁচ উইকেটে ৩১৫ রানে থেমেছিল। নিকোলাস পুরান (৬৪ বলে ৮৯) ও অধিনায়ক কায়রন পোলার্ডের (৫১ বলে ৭৪) মারমুখী ব্যাটিং তিনশোর বেশি রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল ভারতের সামনে। স্লগ ওভারে এই দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান ভারতীয় বোলারদের নির্দয় ভাবে মারতে থাকেন। ৪১ থেকে ৫০, শেষ ১০ ওভারে ওঠে ১১৮ রান। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন পুরান। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল ১০টি চার ও ৩টি ছক্কা।

আগের দুটো ওয়ানডে ম্যাচেই টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রবিবার তৃতীয় ও সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচে ঘটল উল্টো। টস জিতল ভারত। এবং অধিনায়ক বিরাট কোহালি টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমে ব্যাট করতে ডাকেন। চোটের জন্য এই ম্যাচ থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন ভারতীয় পেসার দীপক চহার। সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচে তাঁর পরিবর্তে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয় পেসার নবদীপ সাইনির।

শুরুটা সতর্ক ভাবে করেছিলেন দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার— এভিন লুইস ও সেই হোপ। দু’জনে প্রথম উইকেটে ৫৭ রান করার পরে ওপেনিং জুটি ভেঙেছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁকে গ্যালারিতে ফেলতে গিয়ে নবদীপের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিউইস (২১)। এর পর দুরন্ত ডেলিভারিতে হোপকে (৪২) বোল্ড করেন শামি। শিমরন হেটমায়ার সাবলীলভাবে ব্যাট করছিলেন। রানের গতিও বাড়াচ্ছিলেন। নবদীপ সাইনিকে চালাতে গিয়ে কুলদীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হেটমায়ার (৩৭)। তার পর দুরন্ত ইয়র্কারে চেজকে (৩৮) বোল্ড করেন নবদীপ। ৩১.৩ ওভারে ১৪৪ রানে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ উইকেট।

এই জায়গা থেকে ইনিংসের হাল ধরেছিলেন পোলার্ড ও পুরান। স্লগ ওভারে এই দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান ঝড়ের গতিতে রান করতে থাকেন। অবশ্য ভারতীয় বোলাররাও লাইন-লেংথ অনুযায়ী বল করতে পারেননি। শর্ট বল ফেলেছেন, দিয়েছেন ফুলটস। ক্যারিবিয়ানরাও তার সদ্ব্যবহার করেছেন। পোলার্ডের ৫১ বলের ইনিংসে ছিল সাতটি ছয় ও তিনটি চার। পুরানের ৬৪ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও তিনটি ছয়।

(ঢাকাটাইমস/২২ ডিসেম্বর/এসইউএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :