ভোলায় ৫ মাসের ভ্রুণ হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
ভোলায় স্বামীর বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী শরীফুল ইসলামকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ইতোপূর্বে স্বামী শরীফুল ইসলামসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ভোলা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই নারীর করা একটি ধর্ষণ মামলা রয়েছে। ভ্রুণহত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গৃহবধূ। বর্তমানে ভোলা সদর হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মামলার এজাহার (অভিযোগনামা) সূত্রে জানা যায়, ভোলার সদর উপজেলার পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের জংশন গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ফরাজীর ছোট ছেলে মো. শরীফুল ইসলাম (১৭)। একই ইউনিয়নের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেন শরীফ। এ ঘটনায় ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু শরীফ তাকে বিয়ে করতে রাজি হন নাই। তাই বাধ্য হয়ে ছাত্রী ভোলা সদর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার স্বজনরা গত সোমবার রাতে জানান, মামলার পরে দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে ছাত্রীর সঙ্গে শরীফুল ইসলামের দুই লাখ টাকা দেনমোহরে ২ জানুয়ারি বিয়ে সম্পন্ন হয়। গত সোমবার শরীফুল ইসলাম পিকনিকে নেয়ার নাম করে ছাত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ভোলা শহরে নিয়ে আসে। সেখানে মেরী স্টোপস নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে ছাত্রীর পেটের পাঁচ মাসের শিশু নষ্ট করার জন্য (গর্ভপাত) ইনজেকশন দেয়। এ সময় ছাত্রী প্রতিবাদ করলেও শরীফুল তা মানেননি। ক্লিনিকের চিকিৎসক, শরীফুলের বোন ও শরীফুল জোর করে ইনজেকশন নিতে বাধ্য করেন।
ছাত্রী আরও জানান, ইনজেকশন দেয়ার পরে তিনি বাড়িতে ফিরে এলে কিছুক্ষণ পরে পেট ব্যথা শুরু হয়। পরে ব্যথা তীব্র হলে ছাত্রীকে ভোলা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি জীবিত শিশু প্রসব হয়; কিছুক্ষণ পরেই শিশুটির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর পরিবারে শোকের ছায়া নামে।
ছাত্রী জানায়, তার গর্ভে পাঁচ মাসের সন্তান (ভ্রুণ) হত্যা ও বিয়ে ভাঙার উদ্দেশ্যেই স্বামী শরীফুল ইসলাম তাকে জোর করে ইনজেকশন দিয়েছেন।
ছাত্রীর বাবা বলেন, তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের গর্ভের ভ্রুণ হত্যার ঘটনায় আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
হাসপাতালে উপস্থিত স্বামী, মামলার আসামি শরীফুল ইসলাম বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। দুজনের সম্মতিতেই মেরী স্টোপস ক্লিনিকে গিয়ে তাঁরা গর্ভের সন্তান নষ্ট করেছেন।
মেরী স্টোপস ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক মাইনউদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তারা সাধারণত দেড়-দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ভ্রুণ নষ্ট করে থাকেন। এ ভ্রুণের বয়স পাঁচ মাস হয়েছে, এই তথ্য হয়তো গোপন করা হয়েছে।
ভোলা সদর থানার আওতাধীন ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (্এসআই) রতন কুমার শীল বলেন, পুলিশ সোমবার রাতেই ধর্ষণ মামলার আসামি শরীফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। ভ্রুণ হত্যার ঘটনা ওই এজাহারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/কেএম/ইএস)