অব্যবহৃত জিনিস দিলে বিদ্যানন্দে মিলছে পছন্দের বই

তানিয়া আক্তার, বইমেলা থেকে
| আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:১৯ | প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:০১

ট্যাবলেটের খোসা, বোতলের ছিপি কিংবা ইলেকট্রনিক নানা যন্ত্রাংশের মিশেলে বইমেলায় নিপুণ নৈপুণ্যে সেজেছে বিদ্যানন্দের স্টল। বর্জ্য মানেই যে ফেলনা নয় এটি যেন তার প্রমাণ! আর দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্যের প্রভাবটি মানুষ ও জলজ প্রাণীর জন্য কতটা ক্ষতিকর তা সহজেই চোখে পড়ে। অব্যবহৃত জিনিস দিলেই বিদ্যানন্দ বইপ্রেমীদের দিচ্ছে তাদের প্রিয় বই!

বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৭৭ নম্বর স্টলটি বিদ্যানন্দের। অব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র অর্থাৎ মুঠোফোন বা কম্পিউটার, মেয়াদ আছে এমন ওষুধের বিনিময়ে এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে তারা।

বর্জ্য মানেই ফেলনা নয়

বিদ্যানন্দ বিদ্যা বিতরণের কাজে নিপুণ দক্ষতায় বর্জ্য থেকে দারুণ কিছু তৈরি করে। সম্প্রতি নির্বাচনী পোস্টার দিয়ে তৈরি করেছে বঞ্চিত শিশুদের জন্য লেখার খাতা। তেমনিভাবে বইপ্রেমীদের অব্যবহৃত জিনিস পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার উৎসাহ জোগাচ্ছে বইমেলার এই আয়োজনের মাধ্যমে। অল্প ব্যবহৃত বা প্রায় নষ্ট এমন মুঠোফোন, কম্পিউটারসহ আপনার সরবরাহকৃত অন্যান্য বস্তু পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে বিতরণ করবে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায়। ফলে পরিবেশ থাকবে দূষণমুক্ত, উপকৃত হবে সুবিধাবঞ্চিতরা।

বিদ্যানন্দে বিনিময়ের নিয়ম

বর্জ্যের বিনিময়ে বই দেওয়ার এই উদ্যোগের নিয়মটি হলো: একটি স্মার্টফোন যদি অন হয় তাহলে ১ হাজার টাকা মূল্যের পছন্দের বই কিনতে পারবে বইপ্রেমীরা। যদি মুঠোফোনটি হয় বাটন ফোন অর্থাৎ ছোট এনালগ ফোন এবং সেটি যদি ভালো থাকে তাহলে ৪০০ টাকা মূল্যের বই পাওয়া যাবে। আর যদি একদমই অন না হয়,অর্থাৎ নষ্ট হয়ে গেছে এমন, তাহলে ২০০ টাকা মূল্যের বই কিনতে পারবে। আবার কেউ যদি তার পুরনো ডেক্সটপ, ল্যাপটপ ভালো আছে এমন পণ্য দেয় তাহলে তিনি পাবেন ৩০০০ টাকা মূল্যের বই। এগুলো যদি অন না হয় তাহলে পাবেন দেড় হাজার টাকা। এভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়নি এমন ওষুধপত্র যদি কেউ নিয়ে আসেন, তিনি ওষুধের সমমূল্যের বই কিনতে পারবেন।

তবে একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে এমন জিনিস নেবে না বিদ্যানন্দ। কারণ তারা যেসব পণ্য নেবে, সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের দেয়া হবে।

বিদ্যানন্দ স্টলের বিক্রয়কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সুলতানা জান্নাত ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘চরাঞ্চলে আমরা মেডিকেল ক্যাম্প করে থাকি বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে। তখন আমাদের ওষুধের দরকার পড়ে। অনেকের বাসায় মেয়াদ আছে এমন ওষুধ পড়ে আছে, সেগুলো হয়তো তাদের দরকার পড়ছে না, কিন্তু অন্য কারও জন্য এটা খুবই মূল্যবান। তেমনিভাবে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপও অব্যবহৃত থাকে। আমরা এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে সেগুলো বইয়ের বিনিময়ে সংগ্রহের চেষ্টা করছি। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এমনকি ওষুধের গায়ে লেখা আছে কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না এমন ওষুধ আমরা নিচ্ছি না।’

বইমেলায় ঘুরতে আসা মানুষ বিদ্যানন্দের এমন আয়োজন দেখে প্রশংসা করছেন অনেকে। কেউ কেউ হাতে করে ওষুধের প্যাকেট নিয়ে এসেছেন। রাখছেন বিদ্যানন্দের ঝুড়িতে। বিনিময়ে নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের বই।

(ঢাকাটাইমস/৮ফেব্রুয়ারি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :