বিজিএমইএ ভবন অপসারণ
সময় গিলছে রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা

-
রেখে যাওয়া আবর্জনা সরাতেই ২০ দিন পার
-
পালা করে কাজ করছেন ১০০ শ্রমিক
-
বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ না থাকায় শ্লথগতি
-
বুধবার থেকে পুরোদমে ভাঙার কাজ শুরু
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বেঢপ দাঁড়িয়ে থাকা বহুতল বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ পুরোদমে শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভবনটি ভাঙতে ঘটা করে কাজ শুরুর পর ২০ দিন শুধু রেখে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা সরাতেই পার হয়ে গেছে। তার ওপর বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ না থাকায় কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন শ্রমিকরা। গতকাল সরেজমিন ভবনটিতে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
বিজিএমই ভবনটি ভেঙে অপসারণের কাজ পেয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ। তারা এক কোটি দুই লাখ ৭০ হাজার টাকায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভবন ভাঙার কাজ পায়। এই টাকা এরইমধ্যে সম্পূর্ণ পরিশোধও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, ১৬ তলা ভবনটির নিচ তলায় ঘুটঘুটে অন্ধকার। তার মধ্যেই কিছু শ্রমিক ল্যাদ মেশিনে টাইলস তুলছেন। সেগুলো একটি পিক্যাপ ভ্যানে তোলার কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। আর অন্য শ্রমিকরা ভবনটিতে আগে থেকে থাকা ময়লা-আবর্জনা সরানোর কাজ করছেন।
সব মিলিয়ে এক শিফটে দিনের বেলা কাজ করছেন প্রায় ৫০ জন। আরেক শিফটে রাতে কাজ করবেন আরও ৫০ জন শ্রমিক। শ্রমিকদের প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট, হাতে মোজা, চোখে চশমা এবং পায়ে বুট জুতা দেখা গেছে।
শ্রমিকদের সুপারভাইজার মোহাম্মদ সেলিম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দুই শিফটে ১০০ শ্রমিক খুব নিরাপত্তার মধ্যে কাজ করছেন। তবে বিদ্যুৎ ও পানি না থাকার কারণে কাজ ভালোমতো এগোচ্ছে না। ভবনে আগে থেকে রয়ে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা শেষ হয়নি। বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলে এই কদিনে ক্রেন লাগিয়ে গ্লাস খোলার কাজ শেষ হয়ে যেত।’
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নসরুল্লাহ খান রাশেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিদ্যুতের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বুধবারের মধ্যে সংযোগ দেয়া হবে। তখন পুরোদমে ভাঙার কাজ শুরু হবে। পুরোপুরি ভাঙার কাজ শুরুর আগে সাংবাদিকদের ডাকব আমরা।’
বিজিএমইএর নানা টালবাহানার পর বিতর্কিত এই ভবন ভাঙার বিষয়টি গড়ায় উচ্চ আদালত পর্যন্ত। ভবনটি অপসারণে বিজিএমইএকে দেয়া আদালতের সাত মাস সময়সীমা গত বছরের ১২ এপ্রিল শেষ হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিতে এক দিন সময় বেঁধে দেয় রাজউক। এরপর বিজিএমএইএ ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় রাজউক।
সবশেষ গত ২২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয়। গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। হাতিরঝিলের বিষফোঁড়া হিসেবে চিহ্নিত ভবনটি ৬ মাসের মধ্যে ভবন অপসারণ করে পর্যায়ক্রমে হাতিরঝিলের সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী।
ভবনটি পুরোপুরি অপসারণ করতে কতদিন লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘রাজউকের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে ছয় মাসের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা কাজ শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।’
বিজিএমইএ ভবনটি ছেড়ে যাওয়ার সময় প্রচুর ময়লা-আবর্জনা রেখে গেছে উল্লেখ করে রাশেদ বলেন, ‘আমরা এখন আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করছি। প্রচুর ময়লা আবর্জনা ফেলে গেছে। এখন সেই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। বুধবার পুরোদমে কাজ শুরু করব।’
(ঢাকাটাইমস/১০ফেব্রুয়ারি/ডিএম)

মন্তব্য করুন