চলুন নিজের জন্য বাঁচি

শেখ সাইফ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ মার্চ ২০২০, ১১:০২ | প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০২০, ১৩:৫৯

নিঃসন্দেহে আমি আপনি সবাই এখন করোনায় আতঙ্কগ্রস্থ। কখন কোন দিক দিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হই। এই ভইয় সব সময় মনের ভেতর কাজ করছে। মৃত্যু সবার জন্য অবধারিত। কিন্তু সবাই অস্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নিতে চায় না। কিন্তু আমাদের ভয় হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত হলে হয়তো আমি মারা যাব। সুতরাং চলুন নিজেকে বাঁচাই।

নিজের থেকে সচেতন হলেই আমরা অনেকটা নিরাপদ থাকতে পারব। এর জন্য দরকার নিজের উপর দৃঢ় প্রতিজ্ঞার সঙ্গে কাজগুলো করা। মেনে চলা। কী কী করণীয় এসময় আমাদের? ইনটারনেটের কল্যাণে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সতর্কতামূলক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

এছাড়া সরকার থেকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, প্রশাসন বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। টেলিভিশন, পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল সমানে প্রচার করছে সব নিয়মকানুন। এগুলো এখন যথাযথভাবে আমাদের মানা খুব প্রয়োজন। নিয়মকানুন মানতে অনেক বিজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই। সাধারণভাবেই আমরা দৈনন্দিন জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনলেই পারব। কী করা যেতে পারে তাহলে?

যেমন- বাসায় থাকলে প্রত্যেকেই হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান দিয়ে হাত ধুতে পারছি। কিন্তু বাইরে সব সময় হাত ধোয়া সম্ভব না হলে পকেটে একটা ছোট হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা যেতে পারে। সাইজ একটা মোবাইলের চেয়েও ছোট। এটির জন্য আলাদা পানির প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রত্যেকেই যেমন কাছে মানিব্যাগ রাখি ঠিক সেভাবেই প্রয়োজন মনে করে একটি রুমাল ও টিস্যু পেপার রাখি। যখনি হাঁচি কাশি আসবে তখন রুমাল ব্যবহার করব। আর প্রয়োজন হলে টিস্যু পেপার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেব।

কাশিতে কফ আসলে বা থুতু ফেলতে হলে এমন জায়গায় ফেলব যেন সেখানে সাধারণত মানুষের পা পড়ে না।

আমরা কারো সঙ্গে দেখা হলেই হ্যান্ডসেক করি। কোলাকুলি করি। আপাতত এগুলো বন্ধ রাখি। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলি।

বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার তো অবশ্যই করতে হবে। আমাদের দেশ যেহেতু জনবহুল। সুতরাং অধিক মানুষের চাপ সব জায়গাতেই। সুতরাং বাসে, বাজারে যেখানেই যান মানুষের গায়ে গা লেগে চলাফেরা করতে হয়। এসময় মাস্কের কোনো বিকল্প নেই। চোখে চশমা পরতে পারি এসময়।

যেসব স্থানে মানুষের হাত পড়ে সেগুলো এখন অনিরাপদ মনে করে হাত না দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যেমন চলন্ত সিড়ির রেলিং, যেকোনো ভবনের সিড়ির রেলিং, লিফটের বোতাম ও ভেতরের রেলিং, বাসের হ্যান্ডেল ও সিট, বিভিন্ন জায়গার দরজার হ্যান্ডেল ইত্যাদি। এসময় নিতান্ত ধরতেই হলে হাত গ্লাভস পরা যেতে পারে। সম্ভব না হলে হাত দেওয়ার পরপরই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে নেব।

এখন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মেলামেশাটা কমিয়ে দিন। প্রয়োজনী কথাবার্তা ফোনেই সেরে ফেলা যেতে পারে। আর প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে না বের হওয়ায় ভালো। আত্মীয়স্বজন, বন্ধবান্ধবের বাড়িতে ঘোরাঘুরি বন্ধ রাখুন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি দেওয়ায় অনেকেই ঘুরতে বের হচ্ছেন। এই কাজটি ভুলেও করা যাবে না। নিরাপদে ঘরে থাকার জন্যই মূলত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি দেওয়া হয়েছে।

হোটেল বা বাইরের খাবার খাওয়া আপাতত বন্ধ করুন। নিজের বাসায় রান্না করা খাবার খান। হোটেল ক্যাফেগুলোতে বহু মানুষের আনাগোনা। সেখানে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। কাঁচা ফলমূল শাকসবজি এখন ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে। এখন কাঁচা ফলমূল না খাওয়া ভালো হবে। কারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুকনা খাবারের চেয়ে ভেজা খাবারেরি বেশি ছড়াতে পারে।

অনেক নাকে আঙ্গুল দেওয়ার অভ্যাস আছে। বিশেষ করে বাসে উঠলে এগুলো চোখে পড়ে। এটা একদমই বাদ দিন। মুখে মাস্ক দিয়ে রাখুন তাহলে নাকে হাত যাবে না। ঠিক একইভাবে সিটে মাথা দেওয়া, হাত দেওয়া যতটা সম্ভব বাদ দিন। বাসের সিটগুলো দেখলেই বোঝা যায় কত নোংরা। জীবাণুতে ভরা বাসের সিট। এমনিতে ছারপোকার বসবাস আমাদের রাজধানীর বাসগুলো।

যেখানে সেখানে বসে চা পান খাওয়ার অভ্যাসটা বাদ দিন। বলা তো যায় না কার মুখ থকে জীবাণু চায়ের কাপের মাধ্যমে আপনার মুখে চলে যায়। যেকোনো কিছু ধরলেই ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলন। যেমন রিকশায় উঠলেন। আমরা হুটি ধরে রাখি। এখান থেকেও ছড়াতে পারে। টাকার কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। টাকা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। টাকাতে মানুষের মলের জীবাণু পাওয়া গেছে। সুতরাং টাকা লেনদেন করে দ্রুতই হাত পরিষ্কার করতে হবে।

বাসায় কাজের বুয়াকে সচেতন করে তুলুন। মাছ-মাংস বেশি সময় নিয়ে রান্না করতে বলুন। ঠাণ্ডা খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না। যেহেতু আমরা জানি এটি নিউমোনিয়ার ফ্লু জাতীয় ভাইরাস জনিত রোগ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।

এসময় ডাক্তার বেশি বেশি করে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে বলছেন। আর সেসব খাবারে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে সেগুলো খেতে হবে। সুতরাং লেবু, কমলা, গাজর, টমেটো, ক্যাপসিকাম, পালংশাক, পুদিনাপাতা, গ্রিন টি প্রভৃতি খেতে হবে। যা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সহায়ক হবে। আসুন সবাই নিরাপদে থাকি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করি।

ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/ এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :