হোম কোয়ারেন্টাইনে সারাক্ষণ ফোন ব্যবহারে যে ক্ষতি...

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ এপ্রিল ২০২০, ১৯:১৮| আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২০, ২১:৩১
অ- অ+

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সারাবিশ্বে বেড়েই চলেছে। যত বাড়ছে, ততই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হচ্ছে সতর্কতার দিকটি। করোনাভাইরাস ঠেকাতে ইতোমধ্যেই জনবহুল এলাকা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বেশিরভাগ মানুষ এখন লকডাউনে সময় কাটাচ্ছেন। অবসর সময়ে হয়তো মোবাইল ঘেঁটেই বেশিরভাগ সময় কাটছে আপনার। তবে সারাক্ষণ এভাবে স্ক্রিনে চোখ রাখলে হতে পারে ভয়াবহ ক্ষতি। এতে করে মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে হয়তো আপনার হাতের আঙুল আড়ষ্ট হয়ে পড়ছে, ঘাড়ে টান ধরা, চোখ ব্যথা ও হাত তুলতে কষ্ট হচ্ছে।

চায়ের চেয়েও মারাত্মক নেশা মোবাইলের। বিশেষ করে এই লকডাউনের দিনগুলোতে দিনভর হাতে মোবাইল, ঘাড় নাচু, চোখ স্ক্রিনে। এ দিকে মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে হাতের আঙুল আড়ষ্ট হয়ে পড়ছে, ঘাড় ঘোরাতে গেলেই টান ধরছে, চোখ কড়কড় করছে, হাত তুলতে কষ্ট হচ্ছে।

দিনভর মোবাইল হাতে লকডাউন কাটালে যে কী মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে শরীরের, জানালেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, “ভুল ভঙ্গিমায় নাগাড়ে মোবাইল ব্যবহার করার ফলে পেশীতে টান পড়ে, আবার রক্তচলাচলের গতিও কমে যায়। এরই ফলস্বরূপ শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা-বেদনার সূত্রপাত। এর সঙ্গে বাজারহাট বা অন্য কারণে সঙ্গে মোবাইল নিয়ে বাড়ির বাইরে গেলে তা থেকে সার্স কোভ-২ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। আবার কাজ করতে করতে কাঁধে মোবাইল রেখে, ঘাড় করে কাত করে কথা বললেও ঘাড়ে ব্যথা হয়।”

অতিরিক্ত সময় মোবাইল ব্যবহারে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে:

নাগাড়ে মোবাইলে কথা বললে ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে। মাইগ্রেন ও মাথা ব্যথার শঙ্কা থাকে। অনবরত মোবাইলে মেসেজ বা সোশ্যাল সাইটে লেখালেখি করলেও হাতের কবজি ও আঙুলে ব্যথা হতে পারে।

ব্রিটেনের হ্যান্ড ও এলবো সার্জন রজার পাওয়েল ও তাঁর সহযোগীদের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, যারা দু’ঘন্টার বেশি সময় ধরে মোবাইলে টেক্সট করেন তাদের ‘টেক্সট ক্ল’ এবং ‘সেল ফোন এলবো’ নামে আঙুল ও কব্জির সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যার নাম ‘কিউবিটাল টানেল সিনড্রোম’।

অনবরত টেক্সট লেখার জন্য হাতের বুড়ো আঙুল, তর্জনি এবং মধ্যমা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহার হয় বলে এই আঙুল দুটির কাছাকাছি থাকা স্নায়ুর উপর বাড়তি চাপ পড়ে। এর ফলে শুরুর দিকে আঙুল অসাড় লাগে, পরের দিকে ব্যথা হয়।

অনেকে কনুইয়ে ভর দিয়ে মোবাইলে টেক্সট করেন বা কথা বলেন। অতিরিক্ত সময় ধরে এমন করলে হাত, কাঁধ, ঘাড় ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে।

রাতের অন্ধকারে নাগাড়ে মোবাইলের নীল আলোর দিকে তাকিয়ে থাকলে ইনসমনিয়া অর্থাৎ অনিদ্রার ঝুঁকি বাড়ে। একই সঙ্গে ‘সিভিএস’ অর্থাৎ ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ অর্থাৎ চোখের জল শুকিয়ে গিয়ে বারে চোখের সংক্রমণ হয়, চোখ কড়কড় করে।

‘কিউবিটাল টানেল সিনড্রোম’ হলে হাতের যন্ত্রণা প্রচন্ড ভোগায়। এ ক্ষেত্রে এলবো প্যাড ব্যবহার করার পাশাপাশি কনুইয়ে চাপ দেওয়া কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করায় হাড়ের আলনা নার্ভ অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হলে সার্জারি করা ছাড়া উপায় থাকে না।

শুধু স্নায়ুরোগই নয়, মোবাইল অন্ত প্রাণ এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে না এলে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও কম নয়।

এই সব সমস্যা প্রতিরোধের একমাত্র উপায় ফোনের ব্যবহারে মাত্রা টানা। অবশ্য লকডাউনের সময় অন লাইন ব্যাঙ্কিং থেকে শেয়ার কেনাবেচা, কিংবা কাছের মানুষজনের সঙ্গে যোগাযোগ সবের জন্যেই ভরসা মোবাইল। সে ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার।

যেমন:

যতটা সম্ভব ফোন স্পিকারে দিয়ে কথা বলুন।

সব আঙুল পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করুন।

টানা ব্যবহারের ফাঁকে হাত ও আঙুল স্ট্রেচিং করে নেওয়ার মতো অভ্যাস বজায় রাখুন।

শিশুর হাতে বেশি সময়ের জন্য মোবাইল দেবেন না।

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ড. ফয়জুল হককে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
অতিরিক্ত সচিব আরিফুজ্জামানসহ ৩ জনকে ওএসডি
যশোরে পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবক খুন 
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অর্ধ বার্ষিক বিজনেস রিভিউ মিটিং অনুষ্ঠিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা