করোনায় মারাত্মক ঝুঁকিতে স্থূলকায় তরুণরা

স্থূলতা বর্তমান বিশ্বে অন্যতম সমস্যার একটি। স্থূলকায় মানুষের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। স্থূলতা সমস্যার কারণে ৬০ বছরের কম বয়সিদের মধ্যেও করোনো সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে করোনা রোগীদের কেস রেকর্ড ফরমে উচ্চতা, ওজন এবং স্থূলতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
স্থূলকায় মানুষদের করোনা ঝুঁকির গবেষণাপত্র কারেন্ট সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এনএইচএস জনস্বাস্থ্যের সতর্কতা জারি করেছিল যে, করোনায় গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে বেশিরভাগই বেশি ওজন ও স্থূলতার সমস্যায় ছিলেন। তারা জানিয়েছিল যে, ২২০৪ জন করোনা রোগীর মধ্যে ২৮৬ জনকে এনএইচএস এর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশেরই বেশি ওজন ও স্থূলতার সমস্যা ছিল। এছাড়া ফ্রান্সের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে শ্বাস দেয়া লোকদের মধ্যে আনুপাতিক হারে স্থূলকায় মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। স্থূলতার সমস্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকিও মারাত্মক হারে বাড়ছে।
নিউইয়র্কের হাসপাতালে চার হাজার করোনা রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে স্থূলতাক ঝুঁকির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক ও মেঙ্গালোরের ডীমেড ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের অধ্যাপক এবং পুষ্টি অধ্যয়ন বিভাগের প্রধান ডা. আনুরাগ ভার্গব উল্লেখ করেছেন, করোনা মহামারিতে স্থূলতা মৃত্যু ঝুঁকির কারণ। এছাড়া এটি এইচওয়ানএনওয়ান মহামারিতেও মৃত্যু ঝুঁকির অন্যতম কারণ ছিল।
ভারতের জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের ডা. শ্রীনাথ রেড্ডি বলেন, ভাইরাসের সংক্রমণের আগে থেকেই স্থূলত্ব (সাধারণ হোক বা পেটের চর্বিজনিত কারণে হোক) শরীরে উচ্চমাত্রায় প্রদাহজনক হিসেবে চিহ্নিত। ডা. রেড্ডি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে পেটে চর্বিজনিত স্থূলতা ভারতীয় উপমহাদেশে সাধারণ স্থূলতার চেয়ে বেশি এবং এটির সাধারণ স্থূলতার চেয়ে ঝুঁকিও বেশি।
গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে যে, স্থূলত্ব করোনায় মারাত্মক হতে পারে। কারণ উচ্চ মাত্রার প্রোটিন স্থূলতার ক্ষেত্রে প্রদাহকে সমর্থন করে। আর করোনাভাইরাসের প্রক্রিয়াও এটি। যাকে সাইটোকাইনস বলে।
ডা. রেড্ডি ব্যাখ্যা করছিলেন যে, উভয় ধরনের স্থূলত্ব ফুসফুসের ক্ষমতাকে হ্রাস করে এবং যান্ত্রিক সীমাবদ্ধতার কারণ ঘটায়। আর করোনাভাইরাসও ফুসফুসকে লক্ষ্য করে। এই কারণে স্থূলতার ক্ষেত্রে খারাপ ফলের ঝুঁকি বেশি। একারণে স্থূল ব্যক্তিদের খাবার বিষয়ে সচেতন হওয়া, জনাকীর্ণ স্থানে মাস্ক ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাকে মনোযোগ সহকারে বিবেচনা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ঢাকা টাইমস/২০এপ্রিল/একে

মন্তব্য করুন