বেনাপোল বন্দরে পণ্য বোঝাই পাঁচ হাজার ট্রাক

বেনাপোল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২০, ১৭:৩৭

করোনা সংকটের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে একমাস ধরে বন্ধ রয়েছে দুই দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য। ফলে বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, কল-কারখানার কাঁচামাল ও খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২৬ মার্চ থেকে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকে ছিল প্রায় পাঁচ হাজার পণ্য বোঝাই ট্রাক। আটকে থাকা পণ্যের বেশির ভাগ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচামাল, শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল, কেমিকেল, অক্সিজেন গ্যাস ও খাদ্যদ্রব্য। পণ্যগুলো দ্রুত খালাস করা না গেলে গুণগত মান নষ্ট হতে পারে। এ অবস্থায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আমদানিকারকরা।

আমদানিকারক ইদ্রিস আলী বলেন, ওপারে পণ্য নিয়ে তাদের চারটি ট্রাক আটকে আছে। প্রতিদিন তাদের দুই হাজার টাকা করে ট্রাক ড্যামারেজ গুণতে হচ্ছে। শুধু একমাসে ট্রাক ড্যামারেজ বাবদ দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। আর ব্যবসা করা সম্ভব নয়।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারত থেকে যদি আমাদের ট্রাকগুলো বন্দরে ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কম হবেন। তাছাড়া অধিকাংশ আমদানিকারক ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে পণ্য আমদানি করেছেন। সময়মতো পণ্য খালাশ করতে না পারায় তাদের মোটা অংকের ক্ষতির কারণে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে।

আটকে থাকা পণ্যের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বারবার আশ্বাস দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানান মফিজুর রহমান।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, ভারতের সেন্ট্রাল গভার্নমেন্ট দুই দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু রাখার নির্দেশনা দিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা আমলে নিচ্ছে না। দুই দেশের ট্রাক চালকদের করোনা পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট ইস্যু করে সেই সার্টিফিকেট অনুযায়ী দুই দেশের বন্দরে চালকদের পণ্য খালাশের অনুমতি দেয়া হলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে না।

বেনাপোল স্থলবন্দর ডেপুটি ডাইরেক্টর মামুন তরফদার বলেন, ভারতের প্রতিশ্রুতি ছিল আমদানি রপ্তানি দ্রুত চালু করে ট্রাক প্রবেশের পর তা দ্রুত খালি করার ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু তারা কোনো কথাই রাখেনি।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। করোনার মধ্যে এ পর্যন্ত সরকার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, করোনার কারণে সরকারি ছুটি ঘোষণার পর থেকে বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বন্দর খোলা রাখা হয়েছে। মাঝে মাঝে বন্দর থেকে কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য খালাশ দেয়া হয়েছে। ভারতের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার কথা হয়েছে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু করার বিষয়ে।

(ঢাকাটাইমস/২৭এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :