ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার অর্থ সহজে ছাড়ের তাগিদ

করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। এজন্য কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) জন্য আলাদাভাবে নজর দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ নেতা ও বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকে থাকার মতো সক্ষমতা নেই। বিশেষ করে যারা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে কাজ করছে।
বুধবার করোনা সংকটে ব্যবসায়ীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আয়োজিত অনলাইন আলোচনা সভায় তারা এই পরামর্শ দেন। মতিঝিলের এফবিসিসিআই কার্যালয় থেকে সংগঠনের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এই আলোচনা সভার মডারেট করেন। ভার্চুয়াল সংযোগে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও এফবিসিসিআইর নেতারা।
নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ীরা কিন্তু ইতিমধ্যেই ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলছি, নেগোসিয়েট করছি। যারা মারজিনার ব্যবসায়ী আছেন তাদের জন্য আমাদের সবার চিন্তা করতে হবে। তারা এই টাকাটা কীভাবে পেতে পারে। যেহেতু ব্যাংকাররা এ টাকাগুলো দেবে, এখন বের করতে হবে ক্ষুদ্র লোনের রিস্কটা কে নেবে। এফবিসিসিআই তাদের ব্যাপারে রিস্ক নিতে পারবে কি না সেটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক সব সময় জানতে চাইবে রিস্ক কে নেবে।’
করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সরকার যে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিতে যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা যেন সহজেই এই ঋণ পেতে পারে সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন আলাদাভাবে পদক্ষেপ নেয় এমন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল কাজ হলো দ্রুত রেসপন্স করতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে তারা অন্তর্মুখি। তারা ফরমালে লোনের জন্য যেতেই চায় না। তারা ৩০ শতাংশই মহাজনি সুদে অভ্যস্থ। আমাদের ক্ষুদ্র কটেজ উদ্যোক্তাদের পরিমাণ ৮০ শতাংশ এবং মিডিয়াম উদ্যোক্তা এক শতাংশ। আর ৭০ শতাংশ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গ্রামীণ এরিয়ার। তারা যেন সহজে লোন পেতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এজন্য গাইডলাইন দিতে হবে। কারণ এখন যে সার্কুলার আছে সে শর্ত পূরণ করে মাঝারি উদ্যোক্তারা লোন নিতে পারলেও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য এটা কঠিন হবে।’
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যেন ব্যাংক লোন পেতে পারে সেজন্য বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারগুলোর সহায়তা নেয়া যেতে পারে। কারণ মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা মরগেজ বোঝে না। তাই এটাকে সহজ করতে হবে।’
এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) জন্য ২০ হাজার কোটি এবং বৃহৎ শিল্পের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার। এই প্রণোদনার অর্থ ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে পান সেজন্য আমরা ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রণোদনা সংক্রান্ত বিধি-বিধানগুলো সহজতর ও সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করে সার্কুলার সংশোধন করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে এফবিসিসিআই।’
শেখ ফজলে ফাহিম বলেন,‘সব স্টেকহোল্ডার ও গ্রাহক যাতে ন্যূনতম সময়সীমার মধ্যে তহবিল পেতে পারে সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। ঋণের জন্য আবেদন, প্রসেসিং অনুমোদন ও বিতরণ প্রক্রিয়া ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সম্পাদন করা বাঞ্ছনীয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের বিদ্যমান সাধারণ এসওপি প্রণোদনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিত নয়।’
এসময় একাধিক ব্যাংকের এমডিরা জানান, ব্যাংকে তাদের তারল্য সংকট নেই। তবে রিস্ক কাভারেজের বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। এজন্য এটি বাস্তবায়নে সবার সমন্বয় প্রয়োজন।
(ঢাকাটাইমস/০৬মে/জেআর/জেবি)
সংবাদটি শেয়ার করুন
অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
অর্থনীতি এর সর্বশেষ

ঢাকায় ১১তম কমিউনিকেশন সামিট অনুষ্ঠিত

দেয়ালে মানুষের পিঠ, বাড়তি মূল্য ঠেকাতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান

দেশের যেকোনো প্রয়োজনে সবার আগে অগ্রণী ব্যাংক

পাঁচ বছর পর ফের উৎপাদনে ফিরেছে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, দায়িত্বে আলিফ গ্রুপ

ব্র্যাক ব্যাংকের ‘তারা’ গ্রাহকদের সুবিধা দেবে ওয়ান্ডার ওম্যান

বিএসইসির চেয়ারম্যানকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অভিনন্দন

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রাইম ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ

স্বর্ণ চোরাচালানে বছরে ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার: বাজুস

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর চিন্তা
