পরিবেশ রক্ষা ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে গাছের বিকল্প নেই

মো. শাহিন রেজা, শিক্ষক
  প্রকাশিত : ২৯ জুন ২০২০, ১৮:৩৮
অ- অ+

পৃথিবীর বৃহত্তম ব- দ্বীপ বাংলাদেশ এক সময় সবুজে ঢাকা ছিল। প্রকৃতি যেন মনের মাধুরি মিশিয়ে রং তুলি দিয়ে একে ছিল এ দেশের রূপকে। প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম বৃক্ষ। যুগ যুগ ধরে লেখক ও কবিদের সাহিত্য, কবিতা, উপন্যাস রচনায় উৎসাহ যুগিয়েছে প্রকৃতির দান ও মানুষের পরম বন্ধু বৃক্ষ। কিন্তু আমরা বন্ধুত্বের গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যার্থ হয়েছি। তাইতো নির্বিচারে কর্তন করে চলেছি গাছ পালা। ফলে দেশ থেকে সবুজের দৃশ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।

সভ্যতা যতটা সামনের দিকে ধাবিত হচ্ছে মানুষ ততটায় প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে নিষ্ঠুর আচারণ করছে। মানুষের জীবিকা নির্বাহে,খাদ্য, জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ, আসবাবপত্র, জ্বালানি, যাতায়াতে নৌকা জাহাজ তৈরিসহ বিভিন্ন ভাবে গাছ পালা আমাদের সহায়তা করছে। এছাড়াও জীব বৈচিত্র রক্ষা ও দূষণরোধে বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু মানুষ তাদের বাড়ি ঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, কৃষি কাজ, কলকারখানা ও বিভিন্ন কারনে কাঠের ব্যবহারের জন্য বৃক্ষ নিধন করছে।

বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার অন্যতম কারণ বৃক্ষ নিধন। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রভাব ফেলছে পানি চক্র ও মানুষের দৈন্যদিন কর্যক্রমে। কিন্ত বৃক্ষ কার্বনডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে বাতাসকে করে বিষমুক্ত, পরিবেশকে রাখে শীতল ও স্নিগ্ধ। জলবায়ু পরিবর্তন জনীত দুর্যোগ মোকাবিলায়ও বৃক্ষের ভূমিকা রয়েছে। ২০০৭ সালের সিডর ও কিছু দিন আগের শতাব্দীর সুপার সাইক্লোন আম্পান প্রতিরোধে সুন্দরবনের গাছ পালার ভূমিকা ছিল মূখ্য। কিন্তু বনভূমি ধ্বংসের ফলে কার্বনডাই-অক্সাইডের পরিমান বাড়ছে এরই সাথে বাড়ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা।

পরিবেশ রক্ষা ও উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে বৃক্ষ রোপণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। এখন বর্ষা কাল, বর্ষার সময়কে বৃক্ষ রোপনের উপযুক্ত সময় হিসাবে ধরা হয়। বাড়ির পাশে, স্কুল, কলেজ, রাস্তার ধারে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপন করে দেশকে সবুজ শ্যামলীময় করে তুলতে হবে। বাংলাদেশে চার ধরনের বন রয়েছে, এ বনগুলোকে রক্ষার সাথে সাথে গ্রামীন বনাঞ্চলের পরিমান বৃদ্ধি করতে হবে যার মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টির যোগান আসবে আবার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। নিত্যান্তই প্রয়োজনে গাছ কাঁটতে হলে একটি গাছের বিনিময়ে অনন্ত তিনটি গাছ রোপন করতে হবে। আনেক প্রজাতির গাছ আজ বিলুপ্তির পথে। অন্যদিকে বৃক্ষ নিধনে অনেক প্রাণী বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে এদিকে নজর দিতে হবে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও তাপমাত্রা স্বভাবিক রাখতে বৃক্ষ রোপণ বৃদ্ধিতে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। বনদস্যুদের হাত থেকে বনাঞ্চল রক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। অপরিকল্পিত বনাঞ্চল নিধনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উদ্যোগ নিতে হবে পরিবেশ ও উষ্ণতা স্বভাবিক রেখে পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে।

লেখক: মো. শাহিন রেজা, শিক্ষক

ঢাকাটাইমস/২৯জুন/এসকেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কুমিল্লায় কুরবানির পশুর হাটে ১৫০০ কোটি টাকার লেনদেনের সম্ভাবনা
স্বৈরশাসকদের জন্য আইন যতটা সম্ভব কঠিন করে যেতে চাই: আইন উপদেষ্টা
শুল্ক ছাড়াই ভারত থেকে আমদানি করা হলো ৯৫টি মহিষ
চাকরির নিয়োগে এনআইডির তথ্য বাধ্যতামূলক চায় ইসি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা