ঈদে ক্রেতা না পেয়ে হতাশ সুনামগঞ্জের কামাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২০, ১৬:৩৮

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা,ছুরি,বটি,চাপাতিসহ বিভিন্ন যন্ত্রের চাহিদাও বাড়ে কয়েকগুণ। সেই চাহিদার জোগান দিতেই সুনামগঞ্জ ১১টি উপজেলার হাট-বাজারের কামারপট্টিগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে এবার ক্রেতা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন কামারপট্টিগুলোর কামাররা। অথচ, এই এক মৌসুমের আয়েই তাদের সারা বছরের ভরসা।

এই মৌসুমের জন্য কামাররা ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে ধার-দেনা করে কাঁচামাল কিনে প্রস্তুত করেন কোরবানির পশু কাটার যন্ত্রপাতি। প্রতিবছর প্রত্যাশা অনুযায়ী মুনাফাও অর্জিত হয়। এবার সারি সারি ছুরি,চাকু,দা,বটি,চাপাতি দোকানের সামনে সাজিয়ে রাখলেও ক্রেতার দেখা না পাওয়ায় সারা বছরের আগুনের উত্তাপ গায়ে জড়িয়ে লোহা পিটিয়ে যন্ত্রে পরিণত করা কারিগরের কপালে এখন শঙ্কার ভাঁজ পড়েছে।

একই অবস্থা জেলা শহরসহ হাওরাঞ্চলের কামারের দোকানগুলোতেও। তবে ঈদের আগে বাকি দিনগুলোতে বেচা-কেনা বাড়বে এই প্রত্যাশায় যন্ত্র তৈরির কাজ করেই যাচ্ছেন কামররা।

বর্তমানে দা-বটি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। চাপাতি ৪৫০ টাকায়, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে। কাঁচা লোহার পণ্যের দাম একটু কম রয়েছে বলে জানা গেছে।

কামারপট্টিতে দা-ছুরির শাণ দিতে আসা আবুল মিয়া জানান, করোনা ও বন্যার প্রভাবে অনেক মানুষ আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এ কারণে এ বছর অনেকেই কোরবানি দিতে পারছেন না। এজন্য কামারপট্টিতে ক্রেতার আনাগোনা কম।

তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে কামার রাশেন্ড্র জানায়, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের ১৫দিন আগে থেকেই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। কেউ নতুন ছুরি, চাকু, দা, বটি, চাপাতি আবার কেউ কেউ পুরনো গুলোকে শান দিতে আনেন। এবার তার উল্টোটাই ঘটছে। সকাল থেকে রাত অবধি দোকানে যন্ত্রপাতি নিয়ে বসে থাকলেও মিলছে না ক্রেতা। শান দিতেও আসছে না।

উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণকুল গ্রামের কামার অমর পাল বলেন, ‘বংশপরম্পরায় কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িত তিনি। বর্তমানে ব্যবসায় খরা আর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে লৌহজাত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া,পন্য তৈরির সরমজাম লোহা,কয়লাসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় বেশি দাম বিক্রি করার পরও লাভ হয় না। এরপরও নানান প্রতিকূলতার মাঝে কোনরকমে ঠিকে আছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কামার শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি আমাদের লোন দিলে আমরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে যন্ত্র তৈরি করতে সহজ হতো। না হলে একটা সময় আসবে আর এই কামার শিল্প থাকবে না।’

(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :