আমার সাথে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের ছবি আছে

ইস্যুটা এতই 'লেইম এন্ড মিন' যে এটা নিয়ে কিছু লিখতে বা মন্তব্য করতেও রুচিতে বাঁধছে, কিন্তু মানসিক বিকারগ্রস্ত বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সৌজন্যে বিষয়টি বেশ আলোচিত এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিব্রত ও চিন্তিত বোধ করায় দুই এক লাইন না লিখে পারছি না।
তূর্ণা নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থী ও কয়েকজন বিদেশীকে, কয়েকদিন আগে প্রতারণার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
মেয়েটি নিজেকে একজন উদ্যোক্তা পরিচয় দিতো। আত্মপ্রত্যয়ী, স্বনির্ভর একজন তরুণ উদ্যোক্তা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে যে কেউ তাকে এপ্রিশিয়েট করবে। সাহেদ বা সাবরিনার মতো ধরা না পরলে তো ভালো-মন্দ বোঝার উপায় নাই! কার মনে কি আছে, আল্লাহ জানে আর সে জানে।
ক্যাম্পাসের ছোটবোন হিসেবে সে ছবি তুলতে চেয়েছে, তুলেছি আর সেটাও ৮ বছর আগে! ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি, বন্ধু জাকির থেকে শুরু করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক, ওবায়দুল কাদের স্যার সহ উচ্চপর্যায়ের বহু মানুষের সাথেই মেয়েটির ছবি রয়েছে। তো, তারা সবাই কি এই প্রতারণার দায়ভার নেবে? কখনোই নাহ! স্মার্টফোন আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ ডিজিটাল যুগে রাজনীতির সাথে জড়িত, কিংবা যেকোন সেক্টরের 'পরিচিত ফেস' এর সাথে যে কারো ছবি থাকতে পারে। বরং কেউ ছবি তুলতে আপত্তি জানালে সর্বসাধারণের কাছ থেকে 'ভাব মারে/অহংকারী/দেমাগী' টাইপের তকমা পেতে হয়!
আমার সাথে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের ছবি আছে, এখন এদের মধ্যে কেউ যদি কোনোদিন কোনো নেতিবাচক কাজে জড়ায়, স্রেফ একটি ছবি থাকার কারণে, তার দায়ভার নিতে হবে, এটা কোন লজিক? একটা ছবি কি সম্পর্ক নির্ধারণে নিয়ামক হতে পারে? ডাজ দ্যাট মেক এনি সেন্স??
কিছু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে ত্যানা প্যাচানোর চেষ্টা করলো, ইগনোর করেছি। কিন্তু সময় টিভিসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম দেখলাম এই ইস্যুতে নিউজ করছে! কোনো তথ্যপ্রমাণ বা সূত্রের বালাই নেই, স্রেফ একটা ছবি! এটা সাংবাদিকতার কোন এথিক্সে পরে? এতটুকু বিবেক বুদ্ধি এদের নেই, যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা পেনাল কোডের স্পষ্ট ধারায়, মানহানির মামলা করার মতো 'নীতিবহির্ভূত অপকর্ম' তারা কি অবলীলায় করছে!
একটু বেশি বিক্রিত হতে, এতটা বিকৃত হবার নির্লজ্জ আচরণ আমাদের সত্যি ভাবাচ্ছে! আমি ক্ষুব্ধ কম, হতাশ বেশি.. কোন দিকে যাচ্ছে আমাদের 'সমাজের দর্পণ'? মন থেকে দোয়া করি, আল্লাহ দ্রুত আপনাদের মানসিক সুস্থতা দান করুক।
লেখক: সাবেক, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ
ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/এসকেএস

মন্তব্য করুন