বেদেনিদের চোখেমুখে দুর্ভিক্ষের ছাপ
প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি আয় করেন একঝাঁক বেদে তরুণী। কিন্তু করোনার কারণে বিগত বছরের মতো এবার তা পারছেন না তারা। উল্লেখযোগ্য উৎসবে ঘাট এলাকায় বিচরণ করেন এসব বেদে সম্প্রদায়ের তরুণীরা। তাদের উদ্দেশ্য লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরি থেকে যাত্রীরা নামলেই সাপের মালা পরিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা।
ঈদ এলেই দেশের অন্যান্য ঘাট এলাকাগুলোর মতো মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাট টার্মিনালে বেদেনিদের টাকা আদায়ের এমন দৃশ্য দেখা যায়। যাত্রী ধরে টাকা পাবার আশায় বিভিন্ন রঙের কাপড় ও নানান রঙে সেজেগুজে অগোছালোভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। কিন্তু এবার করোনার কারণে অধিকাংশ যাত্রী এসব বেদেনি থেকে সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছেন। কাছে চাপতে দিচ্ছেন না। এমন আচরণে তারা ভেঙে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাদের চোখেমুখে দেখা গেছে দুর্ভিক্ষের ছাপ।
ময়না নামে এক বেদে তরুণী বলেন, 'আগে আমার বাবা এলাকায় যাইয়া সাপ খেলা দেখাইতো, মা দাঁতের পোকা ও সিঙ্গা লাগাইতো কিন্তু এসব এখন চলে না। আমরা দুই বোন ঘাটে আসছি, এখানেও পাত্তা নাই। কি করে বাঁচব।'
বেদেনি দলের আর একজন বলেন, 'কেউ তো টাকা দেয়-ই না, আবার বলে হাত-পা আছে কাজ করে খেতে। কিন্তু আমাদের তো কেউ কাজ দেয় না। কি করে খাবো।'
ঘরমুখো বাবুল নামে এক যাত্রী বলেন, 'করোনার মধ্যে এমনিতেই আতঙ্কে আছি, এর মধ্যে বেদেনিদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। এদের জন্য বাচ্চারা প্রচুর ভয় পাচ্ছে।’
কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়, 'ঈদ বা উল্লেখযোগ্য মৌসুমে বেদের দল ঘাটের পাশেই ফাঁকা স্থানে বাঁশের চাটাই দিয়ে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে থাকে। তবে এবার ঈদে ওদের কেউ কদর করছে না। তাই এদের চোখেমুখে কেমন জানি একটা দুর্ভিক্ষের ছাপ লেগে আছে। ঈদ শেষে এই কষ্ট নিয়েই হয়তো আবার জীবিকার তাগিদে অন্য কোথাও চলে যাবে।'
(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/পিএল)