ফুলবাড়ী ট্রাজেডি: ১৪ বছরেও হয়নি ৬ দফা চুক্তির বাস্তবায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট ২০২০, ১০:১৯| আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২০, ১১:০৮
অ- অ+
ফাইল ছবি

আজ ২৬ শে আগস্ট। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস। জাতীয় সম্পদ রক্ষা, এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহার এবং উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে ২০০৬ সালের এই দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় তিনজন। আহত হয় আড়াই শতাধিক প্রতিবাদী মানুষ। ঘটনার এক যুগ পার হলেও আজও বাস্তবায়ন হয়নি ফুলবাড়ীবাসীর ৬ দফা চুক্তি।

সেদিন গুলিতে নিহতদের স্বজনরা আজও ভুলতে পারছেন না সেই স্মৃতি। তাদের মাঝে এখনও বইছে শোকের মাতম। আহতরা বেঁচে আছে দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে।

করোনা পরিস্থিতি’র কারণে এবার ফুলবাড়ীবাসী এবং তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর জাতীয় রক্ষা কমিটি সীমিত পরিসরে পালন করবে দিবসটি।

প্রসঙ্গত এশিয়া এনার্জির পরিকল্পনা ছিলো ফুলবাড়ী কয়লা খনি প্রকল্প থেকে ৩০ বছরে ৫৭২ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলণের। কিন্তু উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের বিষয়টি ছিলো বিপত্তির। পরিবেশ বিপর্যয় ও ভিটে মাটি রক্ষায় ক্রমান্বয়ে ফুঁসে উঠে ফুলবাড়ী আশপাশ এলাকার মানুষ। জাতীয় সম্পদ রক্ষা ও এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহার এবং কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে মিটিং-মিছিল-সমাবেশ অব্যাহত রাখে।

এমনি একটি দিন ছিলো ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে সকাল থেকেই ফুলবাড়ীর ঢাকা মোড়ে ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হতে থাকে। দুপুর ২টার দিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল নিমতলা মোড়ের দিকে এগোতে থাকলে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা পেয়ে বিশাল মিছিলটি জঙ্গি রূপ নেয়। পুলিশ-বিডিআর-এর বেড়িকেড ভেঙে মিছিলটি এগুতে থাকলে আন্দোলনকারীদের উপর টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। বিডিআরের গুলিতে এসময় নিহত হয় আল আমিন, সালেকীন ও তরিকুল। আহত হয় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী জনতা। আহতদের মধ্যে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ বাবুল রায়ের শরীরের অধিকাংশই অবশ হয়ে বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দেশের সম্পদ রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে বিছানাই এখন তার একমাত্র সঙ্গী। তারপরও দেশের সম্পদ রক্ষায় পঙ্গুত্ব বরণ করে দুঃখ নেই তার। কিন্তু তার দুঃখ ফুলবাড়ীর সাথে তৎকালীন সরকারের সেই চুক্তি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

পরিবেশের ক্ষতি করে এবং জমি নষ্ট করে কয়লা খনি চায়না ফুলবাড়ীবাসী। তারা থাকতে চায়,বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায়। আজকের দিনটিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘জাতীয় সম্পদ রক্ষা দিবস’ এবং ফুলবাড়ী বাসী ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস” হিসেবে পালন করছে। কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ, শোক র‌্যালি, ৩ শহীদের স্মৃতিস্তম্ভে পুস্প অর্পণ, শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং ফুলবাড়ীবাসী। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি’র কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে কর্মসূচিগুলো পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফুলবাড়ী আন্দোলনের অন্যতম নেতা এস.এম নুরুজ্জামান।

ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/এসএএস/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
ইশরাকের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইল স্থানীয় সরকার বিভাগ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা