মার্কিন কর্মকর্তাদের নিয়ে আবুধাবি যাচ্ছেন নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
| আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২০, ১৪:০৬ | প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট ২০২০, ১৩:৩০
প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও বেনজামিন নেতানিয়াহু

ইসরাইলের পতাকাবাহী একটি বিমান রাজধানী তেল আবিবের বেন গুরিয়েন বিমানবন্দরে সকাল দশটার জন্য অপেক্ষা করছে। বিমানবন্দটির সকল টিভি স্কিনও বহুল প্রতীক্ষিত ই-এল এ-এল ফ্লাইটটির আপডেট দিচ্ছে। যে ফ্লাইটে করে আবুধাবি ও তেল আবিবের মধ্য সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।

ফ্লাইটটি আমেরিকার উচ্চ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুকে নিয়ে আজ (সোমবার) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় আবুধাবির উদ্দেশে তেল আবিব ছাড়বে। দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পাশাপাশি বৈদেশিক সহযোগিতা বাড়াতে এই সফর। যা দুই দেশের মধ্যকার ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটাবে। এছাড়া, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে বাণিজ্য এবং ট্যুরিজম নিয়ে।

তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই সিদ্ধান্তে হতাশ ফিলিস্তিনের জনগণ। তারা বলছেন, এই উদ্যোগের ফলে দীর্ঘদিনের পেন-আরব জাতীয়তাবাদ দুর্বল হবে। পেন আরব জাতীয়তাবাদ হল সমগ্র আরব দেশগুলোর একটি জোট।

ই-এল এ-এল ফ্লাইটটি ছাড়াও অন্য একটি ফ্লাইট ইসরাইলের প্রতিরক্ষা দূতদের নিয়ে আবুধাবিতে যাবে।

এদিকে আলোচনা শুরুর আগে ইসরাইলের একটি বাণিজ্যিক বিমান সৌদি আরবের আকাশপথ ব্যবহার করে সরাসরি আবুধাবিতে পৌঁছায়। যেটা দুদেশের এভিয়েশনের জন্য একটি ইতিহাস। কারণ এর আগে কখনো দুদেশের মধ্যকার সরাসরি ফ্লাইট পরিচালিত হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের সফরসঙ্গীর নেতৃত্বে আছেন ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জারেট কুশনার এবং দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন। অন্যদিকে ইসরাইলের দলটির নেতৃত্বে থাকবেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেইর বিন সাবাদ।

ইসরাইলের কর্মকর্তারা মনে করছেন, দুই দিনের এই সফরে ওয়ানশিংটনে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের জন্য দুদেশ একটি তারিখ ঠিক করবে। যেটা অবশ্যই সেপেম্বরের মধ্যেই হবে। যেখানে বিভিন্ন চুক্তি নিয়ে আরব আমিরাতের প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু স্বাক্ষর করবেন। আর এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ট্রামকে নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বৈদেশিক নীতি শক্তিশালীকরণে সাহায্যে করবে।

আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসরাইল সরকার আমিরাতের সঙ্গে এই চুক্তি করতে যাচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গেও চুক্তি স্বাক্ষরের পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে ইসরাইল। আমিরাতের পরে যেসব দেশের সঙ্গে ইসরাইলের গোপন সম্পর্ক রয়েছে সেসব আরব দেশ প্রকাশ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তিতে আসতে পারে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে বাহরাইন, ওমান, মরক্কো, সৌদি আরব ও কাতার। দেশটির সঙ্গে গোপন সম্পর্ক প্রকাশ্য ও আনুষ্ঠনিক করার বিষয়ে পরবর্তী আরব দেশ বাহরাইন হবে আশা করা হচ্ছে।

ইসরাইলের গনমাধ্যম বলছে, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আরেক আরব দেশ ওমান লাইনে রয়েছে। আবুধাবির চুক্তি নিয়ে মাস্কটের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার করেছে। দেশটির পক্ষ থেকে ইসরাইল-আমিরাতের চুক্তিতে সমর্থন জানানো হয়েছে। ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র এক টুইট বার্তায় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের সঙ্গে আমিরাতের ঐতিহাসিক চুক্তির বিষয়ে সুলতানাতের (ওমান) সমর্থন রয়েছে। জানা গেছে, নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনের আগেই ওমান সরকার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তিতে আসতে পারে।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইলের ব্যাপারে অনেক বেশি খোলোমেলা অবস্থানে সৌদি আরব। ইসরাইলের ব্যাপারে ওমান, আমিরাত ও বাহরাইনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে রিয়াদ। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান গত কয়েক বছরে ইসরাইল প্রসঙ্গে খোলামেলা অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরাইলিদের সৌদি ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ওই সময় এক ইসরাইলি ব্লগারকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছিল রিয়াদ।

১৯৯০ সাল থেকে কাতারের সঙ্গে ইসরাইলের উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর কাতারে বাণিজ্য দপ্তর খুলেছিল ইসরাইল। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি চালু ছিল। ২০০৭ সালে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিজিপি লিভানি কাতারের আমির শেইখ হামাদ বিন খালিফা আল থানির সঙ্গে নিউ ইয়র্কে বৈঠক করেছিলেন। ২০১৭ সালে সৌদির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির পর নিজ দেশের মধ্যে ইসরাইলি সমর্থকদের সংখ্যা বাড়িয়েছে কাতার।

(ঢাকাটাইমস/৩১আগস্ট/এনএইচএস/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :