এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণ

পরিচয় লুকাতে দাড়ি কেটে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন সাইফুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৫৫| আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৫৭
অ- অ+

দেশজুড়ে আলোচিত সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা। ঘটনাস্থলে পুলিশ যেতেই আসামিরা পালিয়ে যাওয়ায় শুরু হয় তাদের গ্রেপ্তারের মিশন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।

প্রযুক্তির সহায়তা ও নির্ভরযোগ্য সোর্সের তথ্যের আলোকে পুলিশ রবিবার ভোরে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের তথ্য বলছে, সাইফুরকে ছাতকের নোয়রাইর খেয়াঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে সে নিজের বেশভূষা পাল্টে ফেলেছিল। গ্রেপ্তারের সময় সাইফুরের গায়ে জ্যাকেট, মুখে মাস্ক ও গেঞ্জি পরা ছিল।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে ঘুরতে আসা এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে জোর করে ছাত্রাবাসে তুলে আনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর স্বামীকে বেঁধে মারধর করে ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে সাইফুরসহ অন্যরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ওইদিন (শুক্রবার) রাতে বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেছেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে ছয়জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়।

এ ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে পর্যন্ত মামলার এজাহার নামীয় আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর, মাহবুবুর রহমান রনি, রবিউল ইসলাম, রাজ চৌধুরী রাজন নামে ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই মামলার আরও দুজন আসামি সুনামগঞ্জ সদর থানার উমেদনগর গ্রামের তারেকুল ইসলাম তারেক এবং কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম পলাতক রয়েছে।

সাইফুরকে গ্রেপ্তারের অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায় কিভাবে দক্ষতার সঙ্গে তাকে ধরা হয়েছে।

জানা যায়, শনিবার গভীর রাতে ছাতক থানা পুলিশ জানতে পারে এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর ইসলাম ছাতকের নোয়রাইর খেয়াঘাট দিয়ে সুরমা নদী পার হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করেও তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। রাত থেকে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে চলে পুলিশি অভিযানের প্রস্তুতি। সোর্সের তথ্যমতে রবিবার ভোর ছয়টায় ছাতক থানার পুলিশ নোয়ারাইর এলাকার খেয়াঘাটে অবস্থান নেয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় তারা খেয়াঘাটে ওঁৎ পেতে বসে থাকে। সকাল সাড়ে ৭টার সময় গায়ে জ্যাকেট, মুখে মাস্ক ও গেঞ্জি পরা এক যুবককে নোয়ারাই থেকে ছাতক পৌর এলাকায় দিকে আসতে দেখে পুলিশ এগিয়ে যায়। এরই মধ্যে সোর্স নিশ্চিত করে এই যুবকই সাইফুর। পরে পুলিশের সদস্যরা নৌকায় ওঠে তার নাম জানতে চাইলে সে জানায় তার নাম সাইফুর রহমান। খেয়াঘাট থেকে গ্রেপ্তার করে তাকে সরাসরি ছাতক থানায় আসা হয়।

জানা যায়, পুরো অভিযান কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে পরিচালনা করা হয়। ফলে গণমাধ্যম কর্মীসহ বাইরের কেউ বিষয়টি টের পায়নি। রবিবার সকাল ১০টার পর তারা বিষয়টি জানতে পারেন। গ্রেপ্তার করার পর সাইফুরকে তুলে দেওয়া হয় শাহপরাণ থানা পুলিশের হাতে। প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা বলেছে।

পুলিশের ধারণা সীমান্ত পার না হতে পারায় সে আবারও ছাতকের সীমান্ত এলাকা থেকে ছাতক শহরের আসে।

ছাতক সার্কেলের সহাকারী পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন বলেন, শাহপরাণ থানায় করা মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তারের জন্য সিলেটের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নির্দেশনায় ছাতক থানার পুলিশ শনিবার রাতেই খবরটি পায়। মামলার ১ নং আসামি সাইফুর রহমান পালিয়ে যাওয়ার জন্য ছাতকের একটি রুট ব্যবহার করবে অন্য কোথায় যাওয়ার জন্য। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমি ছাতক থানার ওসি মিজানুর রহমান, এসআই হাবিবুর রহমান, এএসআই মোহাম্মদ আলীসহ পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে শাহপরাণ থানার পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়। আসামি নিজেকে লোকচক্ষুর আড়াল করতে ক্লিন সেভ করে ও জ্যাকেট পরে। পুলিশের নিজস্ব কিছু প্রসিডিওর ও আসামির পরিচয় নিশ্চিত হতে অনেকটা সময় লেগেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/বিইউ/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখি না: আমীর খসরু
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলযান দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোস্ট গার্ডের কর্মশালা
বিএনপির মহাসচিবের সাথে কানাডিয়ান হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
যশোর থেকে ঢাকার ডেমরা—শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পির ডেরায় মিলল বিপুল অস্ত্র-গুলি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা