এএসআইয়ের কাছে হারলেন ডিজি!
বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে ডিজির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নীতীশের দলে যোগ দিয়েছিলেন গুপ্তেশ্বর। তাও আবার মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে গিয়ে! জল্পনা ছিল বিধানসভা ভোটে বক্সার কেন্দ্রে (জেডিইউ)-র প্রার্থী হবেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে এনডিএ জোটের আসন সমঝোতা প্রকাশ্যে আসতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, ওই আসনটি বিজেপির ভাগে পড়েছে। কিন্তু ধাক্কার তখনও বাকি ছিল। বিজেপির প্রার্থিতালিকা প্রকাশের পর গুপ্তেশ্বর দেখেছেন, পশ্চিম বিহারের ওই জেলাসদরে ‘পদ্ম’ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন পরশুরাম চর্তুবেদী। গুপ্তেশ্বরের মতোই বিহার পুলিশের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন তিনিও। তবে পরশুরাম ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর বা এএসআই!
বিহার পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা পরশুরামের কাছে দুঁদে আইপিএস গুপ্তেশ্বরের এই ‘হার’ নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে বিহার রাজনীতিতে। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলেছে নানা মশকরা। এমনকি অভিযোগ, গুপ্তেশ্বরের নামে জাল অ্যাকাউন্ট বানিয়ে বিহারের শাসকদল ও জোটের অন্দরে বিবাদ উস্কে দেয়ারও চেষ্টা চলছে।
গুপ্তেশ্বর অবশ্য প্রকাশ্যে বিজেপিকে কোনো দোষারোপ করেননি। বরং নীতীশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে সচেষ্ট তিনি। শুক্রবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিশ্চয়ই নীতীশজির কোনো রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা ছিল। তাই এমন হয়েছে।’ শনিবার বিহারের প্রাক্তন ডিজি তার টুইটার হ্যান্ডলে লেখেন, ‘কে বা কারা আমার নামে জাল অ্যাকাউন্ট বানিয়ে, আমার নাম ব্যবহার করে বিহারের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
জেডি(ইউ)-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, গুপ্তেশ্বরের ক্ষোভ মেটাতে ‘উপযুক্ত পুনর্বাসনের আশ্বাস’ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। অন্য কোনো কেন্দ্র থেকে তাকে প্রার্থী করা হতে পারে বলেও জল্পনা। এমনিতে, বক্সার বিধানসভা কেন্দ্রে কখনও ডেজি (ইউ) জেতেনি। ২০১৫ সালে আরজেডি এবং জেডি (ইউ)-র সমর্থনে সেখানে জেতেন কংগ্রেসের সঞ্জয় সিংহ ওরফে মুন্না। তার আগে নীতীশের দলের সমর্থনে বক্সারে লড়ে জয়ী হয়েছে বিজেপি।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন গুপ্তেশ্বর। ২৭ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোয় গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জেডি (ইউ)-তে যোগ দেন। অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুকে বিহারে বিধানসভা ভোটের ইস্যু করতে কয়েক মাস ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে জেডি (ইউ)-বিজেপি জোট। দায়িত্বে থাকাকালীন ওই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের হয়ে বার বার ‘ব্যাট ধরতে’ দেখা গিয়েছে গুপ্তেশ্বরকে। কখনো সুশান্ত-মৃত্যুর তদন্তে মুম্বাই পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কখনো নীতীশ সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রিয়া চক্রবর্তীর ‘অওকাত’ জানতে চেয়েছেন। ফলে তার জেডি (ইউ)-তে যোগদান ঘিরে জল্পনার পারদ চড়ছিল। গুপ্তেশ্বর তার নিজের শহর বক্সার থেকে প্রার্থী হবেন বলে শাসক দলের পক্ষ থেকে ইঙ্গিতও ছিল। কিন্তু সেই অঙ্ক গুলিয়ে দিলেন ‘বিজেপির অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর’। সূত্র: আনন্দবাজার
(ঢাকাটাইমস/১০অক্টোবর/জেবি)