পিংক লবণ কি ডায়েটে রাখবেন?

বহুল আলোচিত পিংক সল্ট কি সবার জন্য উপযোগী? ডায়েটে এটি রাখবেন নাকি রাখবেন না? পিংক সল্ট একটি খনিজ লবণ। এটি হিমালয়ের পাদদেশে পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়। সাধারণ লবণের মতো সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকার পাশাপাশি খনিজ পদার্থ যেমন- পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম থাকায় দেখতে গোলাপি হয়। স্বাস্থ্যকর লবণের মাঝে এই লবণের স্থান আছে কি না চলুন জেনে নেই।
উচ্চ খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ
এই লবণের মধ্যে রয়েছে ৮৪টি বিভিন্ন ধরনের খনিজ। এতে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সালফেট, খাবার সোডা, বরিক এসিডের সল্ট, স্ট্রনসিয়ামের মতো খনিজ থাকে।
সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে
পিংক সল্ট এবং সাধারণ লবণ রাসায়নিকভাবে একই কিন্তু পিংক সল্টের ক্রিস্টাল গঠন বড় হওয়ায় এতে সাধারণ লবণের থেকে কম সোডিয়াম থাকে।
পিংক সল্ট বেশি স্বাদযুক্ত
সাধারণ লবণের চেয়ে বেশি স্বাদযুক্ত হওয়ায় অল্প পরিমাণ ব্যবহার করে একই স্বাদ অর্জন করা যায়।
পিংক সল্ট বেশি প্রাকৃতিক
দলা পাকানো প্রতিরোধ করার জন্য সাধারণ লবণকে রিফাইন বা পরিশুদ্ধ করা হয়ে থাকে, সোডিয়াম অ্যালুমিনোসিলিকেট বা ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের মতো অ্যান্টি-কেকিং এজেন্ট ব্যবহার করে। পিংক সল্টে এ সব মিশ্রণ হয় না।
হাইড্রেশনে সহায়ক
শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে সোডিয়াম প্রয়োজন তাই খাবার বা পানীয় জলে এক চিমটি পিংক সল্ট ব্যবহার ডিহাইড্রেশন রোধে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্ট সুস্থ রাখে
স্বল্প সোডিয়াম গ্রহণ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি স্ট্রোক এবং করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি কমায়। পিংক সল্টে সোডিয়ামের পরিমাণ কম হওয়ায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার হয়।
পিংক সল্ট ব্যবহারে কিছু পরামর্শ
স্বল্প পরিমাণের আয়োডিন
থাইরয়েড ক্রিয়া এবং কোষ বিপাক বজায় রাখার জন্য দেহে আয়োডিন প্রয়োজন। সাধারণ লবণের তুলনায় পিংক সল্টে আয়োডিনের পরিমাণ কম থাকে। যাদের আয়োডিন ঘাটতি আছে তাদের পিংক সল্ট ব্যবহার করা উচিত নয়।
অতিমাত্রায় ব্যবহারে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে
সাধারণ লবণের তুলনায় কম সোডিয়াম থাকলেও এতে ৯৮ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে। যেমন- ১/৪ চা চামচে= ৫৭৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১/২ চা চামচে= ১১৫০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩/৪ চা চামচে= ১৭২৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১ চা চামচে= ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে, ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, লিভারের ক্ষতি, কিডনি ডিজিজ, ওজন বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
পিংক সল্টের উপকারী উভয় দিক মাথায় রেখে অন্য লবণের মতো এটিও পরিমিতভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে।
পিংক সল্ট খাবারে এবং পানীয়তে ব্যবহারের পাশাপাশি একে গোসল, ল্যাম্প, মোমবাতি এবং কাটিং বোর্ড তৈরিতেও ব্যবহার হয়।
লেখক: পুষ্টিবিদ, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল, ধানমন্ডি, ঢাকা
ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/এসকেএস

মন্তব্য করুন