তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ ও মূল্যবৃদ্ধি: কমবে মৃত্যু, বাড়বে রাজস্ব

তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থেকে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত পণ্যের ওপর কার্যকর কর আরোপ ও মূল্যবৃদ্ধি করা হলে তামাকজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার ঢাকা আহছানিয়া মিশনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কর প্রস্তাবনা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই তথ্য জানান।
মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য খাত সংষ্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, গ্লোবাল টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ফেরদৌস মামুন, বাংলা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক এম এম বাদশাহ, ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান মাহমুদ।
প্রস্তাবে সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭% সম্পূরক শুল্ক, ১৫% ভ্যাট এবং ১% স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। জর্দা ও গুলের ওপর যথাক্রমে ৬০% সম্পূরক শুল্ক আরোপেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সভায় উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম জানান, প্রস্তাবিত কর ব্যবস্থা কার্যকর হলে সিগারেটের ব্যবহার ১৫.১% থেকে হ্রাস পেয়ে ১৩.০৩% হবে। এতে প্রায় ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবে এবং প্রায় ১৭ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত থাকবে।
দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ১৭ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে সরকার প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি।
বক্তারা বলেন, তামাকপণ্যের দামের ক্ষেত্রে রাজস্ব বৃদ্ধির চেয়ে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তারা আরও বলেন, আগামী প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে এবং নতুন ব্যবহারকারী সংখ্যা কমাতে কর ও মূল্যবৃদ্ধির বিকল্প নেই।
সভায় তামাকপণ্যে প্রস্তাবিত কর কাঠামোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো:
নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেট একত্র করে ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ, উচ্চ স্তরে মূল্য ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা এবং প্রিমিয়াম স্তরে ১০ শলাকার মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ।
(ঢাকাটাইমস/২৪মে/এলএম/এসএ)

মন্তব্য করুন