আমাদেরও ভয় লাগে...

একজন করে চিকিৎসকের নিঃশব্দ প্রস্থান আমাদের বিমূঢ় করে রেখে যায়। অন্যদের মৃত্যুতেও আমরা কষ্ট পাই। কিন্তু সহকর্মীদের মৃত্যু আমাদের হৃদয় থেকে সব সাহস, ধৈর্য শুষে নিতে চায়। আর যখন দেখি আক্রান্ত চিকিৎসকদের মৃত্যুতে তার পরিবারের পাশে অল্প কয়জন সহকর্মী ছাড়া আর কেউ নেই তখন আমাদের সব উৎসাহ থেমে যেতে চায়।
আপনারা কি জানেন কোনো কিছুর প্রাপ্তি বা প্রত্যাশা ছাড়া গত মার্চ থেকে এদেশের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা ঠিক কতটা মনোবল নিয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি হাতে করে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে? ডিউটির সময় বা পরপর একটু শরীর খারাপ হলে আমাদের হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে, সময় হয়ে এলো কি!
কখনো কি ভেবেছেন আমাদের মনের সাথে আমাদের ঠিক কতটা শক্তি নিয়ে যুদ্ধ করে আমরা এই কাজ করে চলেছি?
আমরা নিজেরা মারা যাচ্ছি। আমাদের বাবা-মা মারা যাচ্ছেন। স্বামী-স্ত্রী মারা যাচ্ছেন। সংসারের সব কাজ করছি আমরা। আমাদের কারো স্বামী, কারো স্ত্রী বহুদূরে কাজ করেন। আমাদের ডিউটির সময় সন্তান বা পিতা-মাতাদের থেকে দূরে থাকার উপায় নেই। তাদের দেখাশোনা আমাদেরই করতে হচ্ছে। চোখের সামনে আমাদের কারণে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন।
কোনো প্রত্যাশা নেই, প্রাপ্তির লোভ নেই। সবাই যেই বেতনটা পান সেটুকুই শুধু আমরা পাই। সবার মতো আমরাও এ মাসে আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছি। আমি চিকিৎসক, কাজেই এই কাজটা আমারই। যারা আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন, আমরা ছাড়া তাদের আর কোথাও যাবার নেই। এই মোটিভেশনটুকু বুকে নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
আমাদেরও ভয় লাগে। বিষণ্ন লাগে। ক্লান্ত লাগে। আমরাও মানুষ। আমাদের পিপিই পরা ছবি দেখলে আপনারা বিরক্ত হন। এই পোশাক পরে থাকতে আমাদের ভালো লাগে না। মনে হয় কবে আমরা আবার সাধারণ পোশাকে স্বাভাবিক কাজে ফিরতে পারবো! সবার সেই ভাগ্য হবে কি?
লেখক: চিকিৎসক, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল
ঢাকাটাইমস/১৫নভেম্বর/এসকেএস
সংবাদটি শেয়ার করুন
ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুক কর্নার এর সর্বশেষ

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে সিটি করপোরেশনকে নজর দিতে হবে

আমি তন্ময় হয়ে শুনি আর আনন্দাশ্রু লুকাই

তাঁর রাজনীতির ফোকাল পয়েন্টই হচ্ছে ‘গণমানুষ’

যৌন শিক্ষাকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে

শিক্ষার্থীরা পেশাগত সঠিক গাইডলাইন পাচ্ছে না

কন্যাসন্তান মহান আল্লাহপাকের অশেষ নিয়ামত

হাতুড়ে রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা দিয়ে কোনো কাজ হবে না

আজ আমার চাচার জন্মদিন

প্রাথমিক থেকেই আইন বিষয়ক পাঠদান দেয়া উচিত
