আমি চিৎকার করে বলব, ম্যারাডোনা শিল্পী ছিলেন: ক্লিন্সম্যান

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর ২০২০, ০৭:৩৯
অ- অ+

১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফুটবলের রাজপুত্রের হাতে উঠেছিল বিশ্বজয়ের ট্রফি। দুনিয়া জুড়ে একটাই নাম ম্যারাডোনা। মেক্সিকো সিটির সেই শ্বাসরোধকারী ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বী পশ্চিম জার্মানির প্রবল আক্রমণ ও আর্জেন্টিনার প্রতি আক্রমণে দর্শকরা দুলছিলেন মেক্সিকান ছন্দে। রোমহর্ষক মিনিটগুলো কখন যে কেটেছিল তার হিসেব একমাত্র রেফারি ছাড়া আর কেউ বোধহয় রাখেননি-সম্ভবও ছিলনা।

সাদাকালো টিভির দুনিয়ায় সেই দৃশ্য আদতে কতটা রঙিন তা তিন দশক পরেও সমান জ্বলজ্বলে। ৮৬ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ ঘিরে বিশ্ব আড়াআড়ি বিভক্ত। লাতিন আমেরিকা বনাম ইউরোপীয় ঘরানার যুদ্ধ চলছে। রুমেনিগে ও রুডি ভয়লারের আক্রমণে ২-২ গোলে সমতা ফিরিয়ে চাঙ্গা জার্মানরা। তিরাশি মিনিটে ভয়লায়ের ভয়াল হামলায় বুক শুকিয়ে গেল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের। এবার কী হবে? তার ঠিক তিন মিনিট পরে খেলার ছিয়াশি মিনিটের মাথায় বুরুচাগার গোলে ফলাফল আর্জেন্টিনা অনুকুলে ৩-২। আর ঘুরতে পারেনি জার্মানরা। তবে মাটি কামড়ে জার্মান লড়াইয়ের ঝলক ছিল দেখার মতো।

ছিয়াশির সেই বিশ্বকাপের লাখো লাখো মানুষের হৃদয়ে যুবরাজ হয়ে উঠে এসে সোনার ট্রফি হাতে নিলেন ম্যারাডোনা। ফুটবল দুনিয়ায় শুরু হলো ম্যারাডোনা যুগ।

পরের বিশ্বকাপ ১৯৯০ সালে। বলা হয় ফুটবল বিশ্বকাপের আরও এক রোমহর্ষক পর্ব। ইতালির রাজধানী রোমে ফের মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও পশ্চিম জার্মানি। বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যে জার্মানি দুভাগে ভাগ হয়েছিল সেই দেশ তখন একীকরণের বিপ্লব তৈরি করছিল। ঐতিহাসিক এই বছরেই ফুটবলের দুই রণকুশলী পক্ষ ফের বিশ্বরণাঙ্গনে মুখোমুখি। এবার লড়াইয়ের দুই মুখ। ম্যারাডোনা ও ক্লিন্সম্যান। দুই ফুটবল কিংবদন্তির পায়ের জাদুতে মিশে গিয়েছে নব্বইয়ের বিশ্বকাপ পর্ব। মাঠের বাইরে সাদাকালো ও রঙিন টিভির দর্শকে ভাগ হয়েই ফের রোমহর্ষক মুহূর্ত পার করছিলেন দর্শকরা।

রোম থেকে পুরো দুনিয়া টানটান উত্তেজনায় ফুটছিল। ছিয়াশির পরাজয়ের প্রতিশোধ নেবে জার্মানরা নাকি জয় ধরে রেখে আর্জেন্টিনীয়রা নজির গড়বেন? সবুজ রণভূমির সেই যুদ্ধে ক্লিন্সম্যান ও ম্যারাডোনার বল দখল, আক্রমণ প্রতি আক্রমণ ইতিহাস হয়েই থেকে গেছে। পঁচাশি মিনিটের মাথায় বেরহেমের গোলে জয়ী পশ্চিম জার্মানি। বাঁধাভাঙা উচ্ছাসের মধ্যে ম্য্যারাডোনা ও ক্লিন্সম্যানের পরস্পর মধুর হাসি তৈরি করছিল অনবদ্য মুহূর্ত। ফুটবলের যুবরাজ পারলেন না বিশ্বকাপ ধরে রাখতে।

প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লিন্সম্যানের মুখোমুখি ম্যারাডোনা হয়েছেন। কখনও তিনি ক্লিন্সম্যানকে ফালাফালা করেছেন। কখনও ক্লিন্সম্যানের হামলায় ম্যারাডোনা মুখ থুবড়ে পড়েছেন। বল দখলের দুই কুশলী যোদ্ধার দ্বৈরথে মুগ্ধ হয়েছে দুনিয়া। ফুটবল কে বিদায় জানানোর পরে প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে ক্লিন্সম্যানের স্পষ্ট স্বীকারোক্তি- ‘ম্যারাডোনা শিল্পী ছিলেন, আমি চিৎকার করে বলব। শ্রদ্ধা ভালোবাসায় প্রতিদ্বন্দ্বীকে এমনই দেখেছেন ফুটবল কিংবদন্তি ক্লিন্সম্যান।’

সাদাকালো ও রঙিন টিভিতে ফুটে ওঠা রোমান্টিক যুদ্ধ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে রিপিট টেলিকাস্ট হবে। কিন্তু সময় কেড়ে নিয়েছে সেই যুদ্ধের শিল্পী ম্যারাডোনাকে।

(ঢাকাটাইমস/২৬ নভেম্বর/এআইএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ছন্দে ফিরলেন লিটন,সমতায় ফিরল টাইগাররা
১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৭ কোটি মার্কিন ডলার
নিবন্ধন স্থগিত হলেও ইসির তফসিলে থাকছে ‘নৌকা’, অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না ‘শাপলা’
ঋণের টাকার চাপে গৃহবধূর আত্মহত্যা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা