করোনা একবার হলে সুরক্ষিত থাকা যায় পাঁচ মাস

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৪৯
অ- অ+

বহুরূপী করোনাভাইরাসের থাবা থেমে নেই। করোনার আতঙ্কে উদ্বিগ্ন সবাই। করোনা হওয়া নিশ্চয়ই সবার কাম্য নয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে একাধিকবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছেন অনেকে। অনেক গবেষক মনে করেন ভাইরাস অনেক সময় শরীরের ভেতর ঢুকে আক্রমণ না করে, ঘাপটি মেরে থাকে, তারপর হঠাৎ একদিন তার উপস্থিতি জানান দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে একবার আক্রান্ত হলে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা খুবই কম, এর পক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রমাণ হাতে ছিল না। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল থেকে মাছ ধরতে বেরিয়ে পড়া একদল জেলের রক্ত পরীক্ষায় এর প্রথম প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। গবেষণা প্রমাণ করছে যে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি একজন রোগীকে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, একবার করোনা হয়ে গেলে অন্তত মাসপাঁচেকের জন্য সেই ব্যক্তি করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকেন।

সম্প্রতি পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড এ সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে। তা থেকে জানা যায়, সমীক্ষায় যুক্ত ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা করোনায় একবার সংক্রমিত হয়েছেন, পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণ থেকে তাদের ঝুঁকি ৮৩ শতাংশ কম। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, কিছু মানুষ অবশ্যই করোনায় সংক্রমিত হতে পারেন এবং অন্যদের সংক্রমিত করতেও পারেন। এ কারণে একবার করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সুস্থ হয়ে গেলেও সেই ব্যক্তির ঘরে থাকা ও সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি কঠোর ভাবে মেনে চলাই উচিত হবে।

গবেষণার নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক সুশান হপকিন্স। তিনি বলেছেন, করোনাআক্রান্ত মানুষ সুস্থ হওয়ার পরে সাধারণত যত দিন ভাবেন, তার চেয়েও বেশি সময় পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রতিরোধক্ষমতা তাঁদের শরীরে থাকে। তবে সতর্ক থাকারও কোনও বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, উদ্বেগের বিষয় হল, যারা দ্বিতীয়বার করোনায় সংক্রমিত হন, তাদের মধ্যে অনেকের শরীরেই কোনও উপসর্গ ছিল না। এবং তারা সহজেই অন্যদের সংক্রমিত করেন।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের শরীরে তিন ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। প্রথমে আইজিএ, এর পরে আইজিএম এবং শেষে তৈরি হয় আইজিজি। আইজিএ দেহে প্রায় ৫০ দিনের মতো থাকে। আইজিএম পাঁচ থেকে ছয় মাসের মতো এবং আইজিজি দেহে থাকে এক থেকে দুই বছরের মতো। কোভিড-১৯ পজিটিভের শরীরে দুই বা তিন রকমেরই অ্যান্টিবডি তৈরি হবেই।

মানুষের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি বিলীন হয়ে গেলে আবারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবেন কি না। এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীদের মত হলো, আক্রান্তের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি চলে গেলেও শরীরে একটা মেমরি সেল তৈরি করে দিয়ে যায়। শরীরে যদি আবার একই ধরনের ভাইরাসের আক্রমণ হয়, তাহলে মেমরি সেল সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডি তৈরি করার সেলে রূপান্তরিত হয়। প্রথম যখন আক্রান্ত হন, তখন অ্যান্টিবডি তৈরি হতে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কিন্তু, দ্বিতীয়বার কয়েক মিনিট বা ঘণ্টার মধ্যে মেমরি সেল অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু করে দেয়। তার মানে হচ্ছে, প্রথমবার আক্রান্তের শরীরে যদি দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাস প্রবেশ করে, তাতেও তিনি আক্রান্ত হয়েছেন-তা বোঝা যাবে না। বোঝা যাওয়ার আগেই অ্যান্টিবডি ভাইরাস ধ্বংস করে দিবে।

একবার কারও করোনা হলে খুব কম ক্ষেত্রে আবার সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কারণ, একবার করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। তবে তার অন্যদের সংক্রমিত করার ঝুঁকি থাকে।

(ঢাকাটাইমস/১৭জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও নিয়ে ইউটিউবের নতুন নীতিমালা
এবার এনসিপির ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ মার্কা নিয়ে টানাটানি
সৌদিতে বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন ড্রাইভিং নির্দেশনা
ঢাকাসহ ১৩ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা