‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ মার্চ ২০২১, ১৪:৪৬| আপডেট : ০১ মার্চ ২০২১, ১৫:০৫
অ- অ+

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়কার অভিশাপ সেশনজট এখন আর নেই। ইমেজ সংকটও নেই। কিছুদিন পূর্বেও এটিকে শিক্ষাবোর্ড হিসেবে দেখা হতো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ম-নীতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে এসে ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’ এ নীতি অনুসরণ এবং নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে ‘শিক্ষা বোর্ডের’ ইমেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সমর্থ হয়েছি।” বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট হলে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদ পূর্তি উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন উপাচার্য। তিনি গত ৮ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সাফল্য ও অগ্রগতি সাংবাদিকদের সামনে সবিস্তার তুলে ধরেন।

সকল ধরনের সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজ একটি আইটিভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়। শতকরা ৯৫ ভাগ কর্মকাণ্ড অন-লাইনের মাধ্যমে সম্পাদন করা হয়ে থাকে। একইসঙ্গে প্রশাসন ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি এক একর ভূমির ওপর ৩টি নিজস্ব স্থায়ী আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। সারাদেশে অঞ্চলভিত্তিক আরও ৬টি স্থায়ী আঞ্চলিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। ক্যাম্পাসে পূর্বে কারও জন্য কোনো আবাসনের ব্যবস্থা ছিল না। এখন ১০ তলা ভিত্তি দিয়ে ৬ তলা বিশিষ্ট দুইটি ভবন (একটি কর্মকর্তা ও একটি জরুরি সার্ভিসে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য)সহ ৫টি ভবন নির্মিত হচ্ছে। প্রথম দুটি ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ ছাড়াও নতুন-নতুন একাডেমিক কোর্স প্রবর্তন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কলেজসমূহ প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী ও টেকনিক্যাল বিষয়ে শর্টকোর্স বা ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালুর কথা আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সততা, নিষ্ঠা আর ঐকান্তিকতার কমতি ছিল না উল্লেখপূর্বক হারুন-অর-রশিদ আরও বলেন, “জীবনের শ্রেষ্ঠ ৮টি বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়েছি। দ্বিতীয় টার্মেরও একেবারে দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আজ থেকে ৩দিন পর অর্থাৎ ৪ঠা মার্চ আমার শেষ কর্মদিবস। এতদসত্ত্বেও আমি খুশি মনেই এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ-অনুযোগ নেই। আমি যে-কোনো পরিস্থিতিতে একজন পরিতৃপ্ত মানুষ। তা মুক্ত অবস্থা হোক কিংবা রিমান্ড আর কারাগার হোক। কোনো বেদনা বা অভাববোধ আমাকে টাচ করে না। আমার ভেতর যেমন একটি সংবেদনশীল, মানবিক মন আছে, ঠিক অনুরূপভাবে আইন, নিয়ম-কানুন রক্ষার ক্ষেত্রে খুবই কঠিন। দুর্নীতি, শঠতা, প্রতারণা, স্বার্থপরতাকে আমি ঘৃণা করি। বিশেষ করে দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমার অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। আমি মনে-প্রাণে, চিন্তা-চেতনায় জাতির পিতার আদর্শের অনুসারী। তাঁর কোনো অনুসারী অন্যায় করতে পারে না, মানুষের ওপর জুলুম করতে পারে না, দুর্নীতি-ব্যভিচার করতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও আদর্শ হলো দেশ আর মানুষের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ, ভোগ বা বিত্ত-বৈভবের মালিক হওয়া নয়। যে কারণে অনেক দুর্নীতিবাজ, অন্যায়কারী আমার সময়ে যথোপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। অন্যদিকে যারা সৎ, নিষ্ঠাবান তাদেরকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে।” তিনি বলেন, ‘সততা ও নিষ্ঠা থাকলে মানুষের জীবনে কোনো কিছুই অসাধ্য নয়।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান, স্নাতকপূর্ব স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান, জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক ফয়জুল করিমসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ।

ঢাকাটাইমস/১মার্চ/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
১৩৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, ৬৮.৪৫ শতাংশ পাস
নদী ভাঙনে ধসে পড়ল ফেনীর সোনাগাজীর ৩ সড়ক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা